বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতে ডিজেল ট্রেনের পরিবর্তে হাইড্রোজেন ট্রেন (Hydrogen Train) চালানোর ঘোষণা করা হয়েছিল আগেই। ইতিমধ্যেই জোরকদমে সেই কাজ চলছে। গত সপ্তাহে ৩৫টি হাইড্রোজেন ট্রেন চালানোর জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে। এছাড়াও সিমেন্স, কামিন্স, হিতাচি ও ভেলের মতো সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছে ভারতীয় রেল (Indian Railways)। এই ট্রেন চালাতে প্রয়োজন হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল। এ বার এই ফুয়েল সেল নিয়ে বড় খবর সামনে এল।
ভারতে বাণিজ্যিকভাবে হাইড্রোজেন ট্রেন চালাতে হলে ফুয়েল সেল তৈরির ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হতে হবে। আমদানিকৃত ফুয়েল সেল দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে এই ট্রেন চালানো সম্ভব নয়। এই প্রসঙ্গেই বড় খবর এসেছে। এই মুহূর্তে ভারত সফরে এসেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন তিনি।
এই বৈঠকে ভারতে গ্রিন এনার্জির চাহিদা নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সই করা হয়েছে। জার্মান সংস্থা এসএফসি এনার্জি হাইড্রোজেন ও মেথানল ফুয়েল সেল উৎপাদন ও বিক্রি করে। সম্প্রতি ভারতের এফসি টেকনার্জির সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে তারা। খুব শীঘ্রই তারা ভারতে একটি সংস্থা খুলতে চলেছে। এসএফসি এনার্জি ভারতে সবুজ জ্বালানি উৎপাদন করবে।
অন্যদিকে, এফসি টেকনার্জি এই জ্বালানির ইনস্টলেশন, বিপণন এবং বিক্রয়োত্তর পরিষেবার খেয়াল রাখবে। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই কারখানাটি হরিয়ানার গুরুগ্রামে তৈরি হবে। ভারতে এ বার সবুজ জ্বালানি উৎপাদন করা হবে। মেথানল ও হাইড্রোজেনকে বলা হয় পেট্রোলের বিকল্প। গ্রিন হাইড্রোজেন মিশনের অধীনে এই ক্ষেত্রে ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার লক্ষ্য নিয়েছে কেন্দ্র।
ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন, আদানি ও রিলায়্যান্সের মতো সংস্থা এই মিশনের সঙ্গে জুড়েছে। কিন্তু হাইড্রোজেন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন ইলেকট্রোলাইজার। এখনও ভারতে সেটির উৎপাদন শুরু হয়নি। জানিয়ে রাখি, ভারতীয় একটি সংস্থাও হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল তৈরি করে। তারা হল এইচটুই পাওয়ার। কিন্তু এখনও তারা সীমিত পরিমাণেই উৎপাদন করতে পারে।
এই মুহূর্তে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দেশে তিনটি জিনিস নিয়ে চর্চা হচ্ছে। প্রথমত সোলার পাওয়ার প্লান্ট। দ্বিতীয়টি হল ফুয়েল সেল এবং তিনে রয়েছে ইলেকট্রোলাইজার। সৌরশক্তির ক্ষেত্রে আগামী ২ বছরে আত্মনির্ভর হয়ে যাবে ভারত। কিন্তু বাকি দু’টি ক্ষেত্রে এখনও অনেক দূর যাওয়া বাকি দেশের। বর্তমানে ভারতে গ্রিন হাইড্রোজেনের দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা প্রতি কিলো। সেজন্য এখনও বাণিজ্যিক স্তরে এটির ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
তবে মনে করা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে এই দাম ৭৫ টাকা প্রতি কিলোতে নামিয়ে আনা যাবে। পেট্রোল বা ডিজেল চালিত গাড়ির চেয়ে অনেক বেশি মাইলেজ দেয় হাইড্রোজেন গাড়ি। এই কারণেই হাইড্রোজেনকে ভবিষ্যতের জ্বালানি বলা হয়। এছাড়াও হাইড্রোজেন একটি পুননর্বীকরণ শক্তি। ফলে ভবিষ্যতে পেট্রোলের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ দেশগুলির দাদাগিরি একেবারেই শেষ করে দেওয়া যেতে পারে। এর জেরে আমদানির খরচও অনেকটাই কমে যেতে পারে।