বাংলা হান্ট ডেস্ক: যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে ভারত (India)। শুধু তাই নয়, সামরিক দিক থেকে বিশ্বের বড় বড় দেশগুলিকেও ভারত এখন টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ভারতের অস্ত্র যে কতটা উন্নত এবং নির্ভরযোগ্য তা সাম্প্রতিক অপারেশন সিঁদুরেই প্রমাণ হয়েছে। তবে, ওই অভিযানের পরেও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে একের পর এক বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারত। আর এই ভাবেই “সুপার পাওয়ার” দেশ হওয়ার লক্ষ্যে ভারত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করছি।
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ক্রমশ এগিয়ে চলেছে ভারত (India):
১. হায়দ্রাবাদে রাফালের ফিউজলেজ উৎপাদন: সম্প্রতি অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে পাকিস্তানকে আতঙ্কিত করে তোলা রাফাল যুদ্ধবিমানের মূল বডি এবার ভারতে (India) তৈরি হবে। ইতিমধ্যেই টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমস এবং ফ্রান্সের ডাসল্ট এভিয়েশন একটি বড় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তিটি রাফাল যুদ্ধবিমানের ফিউজলেজ ভারতে তৈরি করার সাথে সম্পর্কিত। উভয় কোম্পানি একটি প্রোডাকশন ট্রান্সফার এগ্রিমেন্টে স্বাক্ষর করেছে। ভারতের “মেক ইন ইন্ডিয়া” উদ্যোগের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ফ্রান্সের বাইরে এই প্রথমবারের মতো হায়দ্রাবাদে রাফালের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশ তৈরি করা হবে।
২. দেশীয় কামানের গোলাবারুদ উৎপাদন: জানিয়ে রাখি যে, ভারত এবার দেশীয় কামানের গোলাবারুদ তৈরিতে মনোনিবেশ করেছে। ইতিমধ্যেই DRDO এই বিষয়ে দ্রুত কাজ করছে। সামগ্রিকভাবে, বিদেশের নির্ভরতা কমানোই এর লক্ষ্য। গত ২ বছরে ১৫৫ মিমি কামানের ৪ ধরণের শেল পরীক্ষা করা হয়েছে। এই পরীক্ষাগুলি সফল হয়েছে। আগামী নভেম্বরে এগুলি চূড়ান্ত পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।
৩. প্রতিরক্ষা রফতানির সম্প্রসারণ: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ভারতের (India) প্রতিরক্ষা রফতানির ২৯২৪-২৫ অর্থবর্ষে রেকর্ড তৈরি করে ২৩,৬২২ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। আকাশ সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম থেকে শুরু করে নৌ রাডারের মতো সিস্টেমের রফতানি ঘটেছে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, অপারেশন সিঁদুরের অভূতপূর্ব সাফল্য দেশীয় যন্ত্রপাতির প্রতি সমগ্র বিশ্বের আস্থা বাড়িয়েছে। এমতাবস্থায়, বিশ্বের একাধিক দেশ বর্তমানে ভারতীয় অস্ত্রের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছে।
আরও পড়ুন: পাত্তাই পেল না ট্রাম্পের হুমকি! iPhone-এর জন্য Tata-র সাথে বড় চুক্তি করল Apple
৪. উত্তরপ্রদেশের মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা নীতি: জানিয়ে রাখি যে, উত্তরপ্রদেশ সরকার মহাকাশ এবং প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি চালু করেছে। স্থানীয় উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বাড়াতে লখনউ এবং কানপুর সহ ৬ টি অঞ্চলকে প্রতিরক্ষা নোড হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। ওই অঞ্চলগুলির মধ্যে রয়েছে আলিগড়, আগ্রা, লখনউ, কানপুর, ঝাঁসি এবং চিত্রকূট। সরকার অনুমান করেছে যে এই নোডগুলির মাধ্যমে মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা শিল্প স্থাপনের প্রচুর সম্ভাবনা গড়ে উঠবে। যার ফলে বিদেশি বিনিয়োগ থেকে শুরু করে স্থানীয় উৎপাদন এবং কর্মসংস্থানের সুযোগও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।
আরও পড়ুন: পদপিষ্টের ঘটনায় বড় অ্যাকশন! RCB-র বিরুদ্ধে দায়ের FIR, বাদ গেলনা কর্ণাটক ক্রিকেট বোর্ডও
৫. প্রতিরক্ষা বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি: সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য ভারতের (India) প্রতিরক্ষা বাজেট ৯.৫৩ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। যেটি এখন পৌঁছে গিয়েছে ৬.৮১ লক্ষ কোটি টাকায়। এই বরাদ্দ আধুনিকীকরণ প্রচেষ্টা এবং দেশীয় উৎপাদন উদ্যোগকে সমর্থন করবে। জানিয়ে রাখি যে, এর মধ্যে ১,৮০,০০০ কোটি টাকা অর্থাৎ মোট বরাদ্দের ২৬.৪৩ শতাংশ প্রতিরক্ষা পরিষেবার মূলধন ব্যয়ের ক্ষেত্রে খরচ করা হবে। এর পাশাপাশি এই বরাদ্দের ৪৫.৭৬ শতাংশ খরচ করা হবে সশস্ত্র বাহিনীর জন্য। এছাড়াও প্রতিরক্ষা পেনশন থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনে অসামরিক সংস্থাগুলির জন্য যথাক্রমে ২৩.৬০ শতাংশ এবং ৪.২১ শতাংশ খরচ করা হবে বলেও জানা গিয়েছে।
দেখুন গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও: