বাংলা হান্ট ডেস্কঃ হল না শাপমোচন, ১৮ বছরের পরাজয়ের অভিশাপ মুক্তি এবার ঠিক ঘটবে, এমন ভেবেই আশায় বুক বেঁধে আজও একবার টিভির সামনে বসেছিলেন ভারতীয় সমর্থকরা। কিন্তু রবিবারও শুরুটা ছিল পাকিস্তান ম্যাচের রিপিট টেলিকাস্টের মতই। এদিনও ফের একবার টসে হার হয় ভারতের। আর তারপর বড় চমক দিয়ে ঈশান কিশান এবং কে এল রাহুলকে ওপেনিং করতে পাঠান কোহলি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি, সাউদি আর বোল্টের দৌলতে পাওয়ার প্লে ফুরানোর আগেই রবিবার দুই ওপেনারকে ঘরে ফেরায় নিউজিল্যান্ড।
তিন নম্বরে আসা রোহিতের উপর ভরসা ছিল সকলের, এমনকি প্রথম বলেই বড় জীবনদানও পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। বোল্টের বলে পুল করতে গিয়ে তোলা সহজ ক্যাচ হাত থেকে ফেলে দেন মিলনে। কিন্তু তাও কাজে লাগাতে পারলেন না হিটম্যান। ১৪ রানের মাথায় কার্যত একইভাবে বড় শট নিতে গিয়ে সোধির বলে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়ে যান তিনি। ফলত ফের একবার ভারত ৪০ রানেই খুইয়ে ফেলে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। গত ম্যাচের মতো এবার আর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি কোহলিও। কার্যত ৯ রানের মাথায় একই ভুল করেন তিনি। ফের একবার সোধির বল মরণ বাণ হয়ে ওঠে ভারত অধিনায়কের জন্য। পান্থ, হার্দিক কিছুটা লড়াই চালালেও কেউই আজ সেভাবে ইনিংস জমিয়ে তুলতে পারেননি।
বরং বাউন্ডারির তীব্র খরায় আজ রীতিমতো ধুঁকছিল ভারতীয় দল। শেষ পর্যন্ত ১২ রানে মিলনের বলে বোল্ড হন পান্থ। অন্যদিকে হার্দিক জাদেজার সঙ্গে কিছুটা জুটি বাঁধলেও বড় শট একেবারেই খেলতে পারেননি। ২৩ রানের মাথায় চাপের মুখে পড়ে বোল্টের বলে ক্যাচ দেন তিনিও। জাদেজা অবশ্য আজও ভারতকে লড়াকু স্কোরে পৌঁছে দেবার যথাযোগ্য চেষ্টা করেছিলেন। তার ১৯ বলে ২৬ রানের ইনিংসের সৌজন্যেই নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১১০ রানে পৌঁছায় ভারত। নিউজিল্যান্ডের হয়ে মাত্র ২০ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন বোল্ট। এছাড়া দুটি উইকেট শিকার করেন সোধি এবং একটি করে উইকেট পান মিলনে এবং সাউদি।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে এই সহজ টার্গেট তাড়া করতে স্বাভাবিকভাবেই কোন অসুবিধা হয়নি উইলিয়ামসন বাহিনীর। চতুর্থ ওভারে বুমরাহের বলে গাপটিলকে হারালেও রবিবার নিউজিল্যান্ডের উপর আর বড় কোন ধাক্কা আসতে দেননি ড্যারেল মিচেল এবং উইলিয়ামসন। বরং যে পিচে খুচরো রান বার করতেও রীতিমতো ধুঁকছিল ভারতীয় দল, সেই মাঠেই চার ছয়ের বন্যা বইয়ে দেন মিচেল। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৩৫ বলে চারটি বাউন্ডারি এবং তিনটি ওভার বাউন্ডারি দিয়ে সাজানো ৪৯ রানের ইনিংস খেলে তিনি যখন সাজঘরে ফেরেন ততক্ষনে বাতাসে জয়ের সুগন্ধ পেতে শুরু করেছে নিউজিল্যান্ড। কার্যত তাদের ৭২ রানের পার্টনারশিপের দৌলতেই শেষ পর্যন্ত ৫.৩ ওভার বাকি থাকতেই ৮ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় নিউজিল্যান্ড। ফের একবার ৩৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক উইলিয়ামসন। এই ম্যাচে হারের সাথে সাথেই কার্যত বিশ্ব কাপের শেষ চারে যাওয়ার আশা শেষ হয়ে গেল বিরাট বাহিনীর।