বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী সপ্তাহে দুই দিনের মার্কিন সফরে যাবেন। তবে, এই সফরে যাওয়ার আগে ভারত (India) সরকার এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারে যেটি আমেরিকার জন্য ইতিবাচক হিসেবে বিবেচিত হবে। গোটা বিশ্ব জানে যে ট্রাম্প-মোদী একে অপরের অন্যতম প্রিয় বন্ধু। এমতাবস্থায়, তাঁরা চাইবেন না যে, তাঁদের বৈঠকে বাণিজ্য সংক্রান্ত এমন কোনও ইস্যু উঠুক যা দুই দেশের মধ্যে দূরত্বের কারণ হতে পারে।
বড় পদক্ষেপ নিতে পারে ভারত (India):
এদিকে, ইতিমধ্যেই চিনের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। যার পরিপ্রেক্ষিতে চিনও পাল্টা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এমতাবস্থায়, ওই দুই দেশের মধ্যে রীতিমতো বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়েছে। যার ফলে লাভবান হচ্ছে ভারত। আসলে, ভারতের (India) কাছে এখন আমেরিকায় রফতানি বৃদ্ধির ভালো সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এটা তখনই সম্ভব যখন ভারত আমেরিকার স্বার্থে কিছু সিদ্ধান্ত নেবে। তাই, মোদী সরকার আমেরিকার ওপর আরোপিত শুল্ক পর্যালোচনা করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাজেটে দেওয়া হয়েছে উপহার: সরকার ইতিমধ্যেই ২০২৫ সালের বাজেটে কিছু ঘোষণার মাধ্যমে আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশকে খুশি করেছে। বাজেটে বিভিন্ন দ্রব্যের ওপর গড় আমদানি শুল্কের হার ১৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১১ শতাংশ করা হয়েছে। মূলত, ট্রাম্পের ক্রমবর্ধমান শুল্ক সংক্রান্ত পদক্ষেপ এড়াতে আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এখন সরকারের পরিকল্পনা কী: ইতিমধ্যেই রয়টার্স অর্থ মন্ত্রকের একজন আধিকারিককে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে যে, ভারত (India) বিলাসবহুল গাড়ি থেকে শুরু করে সোলার সেল এবং রাসায়নিক সহ ৩০ টিরও বেশি দ্রব্যের ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক পর্যালোচনা করার পরিকল্পনা করছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক উত্তেজনার কারণে আমেরিকা থেকে আমদানি বাড়তে পারে। পাশাপাশি, আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা সফরের আগে গড় শুল্ক কমানোর লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য যে, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি দু’দিনের আমেরিকা সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আরও পড়ুন: এসে গেল নতুন চিন্তা! চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ঘুম উড়ল টিম ইন্ডিয়ার
জানা গিয়েছে যে, ভারী শিল্প এবং রিনিউয়াবেল এনার্জির তত্ত্বাবধান করা বিভাগ সহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগ শীঘ্রই এগ্রিকালচার ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট সেস (AIDC) কমানোর বিষয়ে স্থানীয় শিল্পের সাথে পরামর্শ করবে। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস চেয়ারম্যান সঞ্জয় আগরওয়াল রয়টার্সকে এই তথ্য দিয়েছেন। জানিয়ে রাখি যে, AIDC হল একটি ঐচ্ছিক আমদানি শুল্ক। এটি কৃষি ইনফ্রাস্ট্রাকচার নির্মাণে ব্যবহৃত হয়। আগরওয়াল বলেছেন যে, এই পরামর্শের পরে, মন্ত্রক সম্ভাব্য শুল্ক কমানোর জন্য এই তালিকা থেকে আইটেমগুলি নির্বাচন করবে।
আরও পড়ুন: প্রতিবন্ধী মহিলাদের পাল্টে যাবে জীবন! বিরাট সিদ্ধান্ত নিলেন আদানি-পুত্র জিৎ, ধন্য ধন্য করছে গোটা দেশ
কী কী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে: এই তালিকায় বিলাসবহুল গাড়ি থেকে শুরু করে সোলার সেল, স্পোর্টস ভেসেল, সেমিকন্ডাক্টর তৈরিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতির মতো ৩২ টি আইটেম রয়েছে। এগুলির ওপর, সরকার বেসিক কাস্টম ডিউটি হ্রাস করার পর আমদানিতে ৬.৫ শতাংশ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত AIDC শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। আধিকারিক স্বীকার করেছেন যে, AIDC সহ ভারতের (India) এভারেজ ইমপোর্ট ট্যারিফ, আমেরিকা, চিন এবং জাপান সহ প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারদের তুলনায় অনেক বেশি। এদিকে, ভারত অস্থায়ীভাবে দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করতে এবং তাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে ধীরে ধীরে শুল্ক হ্রাস করছে বলেও তিনি জানান।