মাত্র ১০ বছরেই পয়সা ডবল! গ্রাহকদের জন্য পোস্ট অফিস নিয়ে এল একদম ঝুঁকিহীন স্কিম

বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রত্যেকের কাছে বিনিয়োগই একমাত্র উপায় যার মাধ্যমে আপনি নিজের এবং আপনার পরিবারের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে পারেন। বর্তমান সময়ে বাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য একাধিক বিকল্প উপলব্ধ থাকলেও তাতে রিস্কও থাকে প্রচুর। যে কারণে বিনিয়োগ করার আগে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেন গ্রাহকেরা।

তবে, বহু বছর ধরেই বিনিয়োগকারীদের কাছে পোস্ট অফিস একটি নির্ভরযোগ্য নাম। এই প্রতিষ্ঠানকে চোখ বন্ধ করে ভরসা করেন সবাই। পাশাপাশি, পোস্ট অফিসও গ্রাহক এবং বিনিয়োগকারীদের কথা মাথায় রেখেই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে একাধিক লাভজনক স্কিম নিয়ে আসে। যেখানে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকির কোনো প্রশ্নই থাকেনা। সেই রেশ বজায় রেখেই পোস্ট অফিসের সেভিংস স্কিম (কিষাণ বিকাশ পত্র) একটি ভাল বিকল্প হতে পারে সকলের কাছে।

পোস্ট অফিসের স্কিমগুলিতে সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ লক্ষ্য করা যায়। পাশাপাশি, এই স্কিমগুলিতে সরকারি গ্যারান্টি পাওয়া যায়, অর্থাৎ এতে কোনো ঝুঁকির সম্ভাবনা নেই। এছাড়াও, বিনিয়োগের পরে নিশ্চিত রিটার্নও পাওয়া যায়। বর্তমান প্রতিবেদনে আমরা আপনাদের কাছে পোস্ট অফিসের যে স্কিমটির প্রসঙ্গ বিস্তারিত ভাবে উপস্থাপিত করব তার নাম হল কিষাণ বিকাশ পত্র (Kisan Vikas Patra)।

এই স্কিমের সময়কাল ১২৪ মাস অর্থাৎ ১০ বছর ৪ মাস। আপনি যদি এই স্কিমে ১ এপ্রিল ২০২২ থেকে ৩০ জুন ২০২২-এর মধ্যে বিনিয়োগ করে থাকেন, তাহলে আপনার জমা করা অর্থ ১০ বছর ৪ মাসে দ্বিগুণ হয়ে যাবে। পাশাপাশি, কিষাণ বিকাশ পত্রে, বিনিয়োগকারীরা বার্ষিক ৬.৯% চক্রবৃদ্ধি সুদের সুবিধা পাবেন।

এছাড়াও, ন্যূনতম ১,০০০ টাকার বিনিয়োগের সাথে কিষাণ বিকাশ পত্র শংসাপত্র কেনা গেলেও এই স্কিমে কোনো সর্বোচ্চ বিনিয়োগের সীমা নেই। অর্থাৎ, আপনি এই স্কিমে যত চান তত টাকা রাখতে পারেন। মূলত এই প্রকল্পটি ১৯৮৮ সালে শুরু হয়েছিল। তখন এর উদ্দেশ্য ছিল, কৃষকদের বিনিয়োগ দ্বিগুণ করা। কিন্তু এখন এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। বলা যেতে পারে যে, শুধুমাত্র কৃষকদের সঙ্গে বর্তমানে কিষাণ বিকাশ পত্রের কোনো সম্পর্ক নেই।

তবে, এই স্কিমে ৫০,০০০ টাকার বেশি বিনিয়োগের জন্য সরকার ২০১৪ সালে প্যান কার্ড বাধ্যতামূলক করেছে। এছাড়াও, ১০ লক্ষ বা তার বেশি পরিমান অর্থ বিনিয়োগ করলে আইটিআর, বেতন স্লিপ এবং ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টের মত আয়ের প্রমাণও (ইনকাম প্রুফ) জমা দিতে হবে। এর পাশাপাশি পরিচয়পত্র হিসেবে আধার কার্ড লাগবে।

তিনটি উপায়ে এই স্কিম কিনতে পারেন বিনিয়োগকারীরা:
১. একক হোল্ডার টাইপ সার্টিফিকেট: এই ধরনের সার্টিফিকেট নিজের জন্য বা নাবালকের জন্য কেনা হয়।
২. জয়েন্ট A অ্যাকাউন্ট সার্টিফিকেট: এটি দু’জন প্রাপ্তবয়স্কদের যৌথভাবে জারি করা হয়। এর ফলে উভয় হোল্ডারকেই অর্থ প্রদান কর হয়, অথবা যিনি বেঁচে আছেন তিনি অর্থ পান।
৩. জয়েন্ট B অ্যাকাউন্ট সার্টিফিকেট: এটিও দু’জন প্রাপ্তবয়স্কদের যৌথভাবে জারি করা হয়। এখানে উভয়ের মধ্যে একজনকে অর্থ প্রদান করা হয় বা যিনি জীবিত থাকেন তিনি অর্থ পান।

কিষাণ বিকাশ পত্রের বৈশিষ্ট্য:
১. এই স্কিমে রিটার্ন গ্যারান্টি সহকারে পাওয়া যায়। পাশাপাশি, বাজারের ওঠানামার সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। তাই এটি বিনিয়োগের একটি খুব নিরাপদ উপায়। মেয়াদ শেষে গ্রাহকেরা পুরো টাকা পেয়ে যান এই স্কিমে।

২. এতে, আয়করের ধারা ৮০C-এর অধীনে কর ছাড় পাওয়া যায় না। তাই, এর উপর রিটার্ন সম্পূর্ণ করযোগ্য। তবে, মেয়াদপূর্তির পর প্রত্যাহারে কর লাগেনা।

post office news

৩. আপনি ১২৪ মাস পরে মেয়াদপূর্তিতে অর্থ উত্তোলন করতে পারেন। তবে এর লক-ইন সময়কাল ৩০ মাস। এর আগে আপনি স্কিম থেকে টাকা তুলতে পারবেন না। তবে, অ্যাকাউন্টধারীর মৃত্যু হলে বা আদালতের নির্দেশ থাকলে সেক্ষেত্রে বিষয়টি আলাদা হয়।

৪. এতে কেউ চাইলে ১,০০০, ৫,০০০, ১০,০০০, এবং ৫০,০০০-এর মূল্যেও বিনিয়োগ করতে পারেন।

৫. আপনি কিষাণ বিকাশ পত্রকে জামানত বা সিকিউরিটি হিসেবে রেখেও ঋণ নিতে পারেন।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর