বাংলা হান্ট ডেস্ক: করোনা মহামারীর জেরে, শুধু দেশের নয় বরং গোটা বিশ্বেরই অর্থনৈতিক অবস্থা একপ্রকার ভেঙে পড়ে। কিন্তু এরই মধ্যে মিলেছে সুখবর! ধুঁকতে থাকা অর্থনৈতিক আবহেই ভারতে উল্লেখযোগ্য হারে ধনীর সংখ্যা বেড়েছে। গত কয়েক বছরেই এই সংখ্যা বিপুল হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই প্রসঙ্গে নাইট ফ্রাঙ্ক ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ২০২১ সালে, ভারতে অত্যধিক সম্পদশালী ব্যক্তিদের (high net-worth individuals, HNIs) পরিমান প্রায় ১১ শতাংশ হারে বেড়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই সংখ্যাটা বর্তমানে বেড়ে হয়েছে ১৩ হাজার ৬৩৭ জন।
এদিকে, বিলিয়নিয়ারদের নিরিখে ভারত বিশ্বের তৃতীয় স্থানে রয়েছে। তবে এই দৌড়ে, প্রথম স্থানে রয়েছে আমেরিকা। সে দেশে বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা ৭৪৮ জন। পাশাপাশি, চিন ৫৫৪ জন বিলিয়নিয়ার নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে এবং ভারত ১৪৫ জন ধনকুবের নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২০ সালে, ভারতে Ultra HNI ক্যাটাগরির ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ১২,২৮৭ জন। যা গত বছর অর্থাৎ ২০২১-এ বেড়ে হয়েছে ১৩,৬৩৭।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রপার্টি কনসালট্যান্ট নাইট ফ্রাঙ্ক তার সর্বশেষ প্রতিবেদন (ওয়েলথ রিপোর্ট ২০২২) প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, গত বছর বিশ্বব্যাপী Ultra HNI ব্যক্তির সংখ্যা ৯ শতাংশ বেড়েছে। ২০২০ সালে, তাঁদের মোট সংখ্যা ছিল ৫,৫৮,৮২৮ জন। যদিও, বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬,১০,৫৬৯ জন। এর পাশাপাশি, আশা করা হচ্ছে যে, ৬৯ শতাংশ “super wealthy” ভারতীয়দের সম্পদ এই বছর ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ, বিলিয়নিয়ারস ক্লাবে এশিয়ার দেশগুলোর আধিপত্য ক্রমাগত বাড়ছে।
নাইট ফ্রাঙ্কের এই প্রতিবেদনে, সেই ব্যক্তিরাই HNI ক্যাটাগরিতে এসেছেন, যাদের মোট সম্পদ ৩০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ২২৫ কোটি টাকা বা তারও বেশি। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, ২০২৬ সাল নাগাদ Ultra HNI ব্যক্তির সংখ্যা ৩৯ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। অর্থাৎ, তাঁদের মোট সংখ্যা বেড়ে ১৯,০০৬ হয়ে যাবে। এদিকে, উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০১৬ সালে ভারতে মাত্র ৭,৪০১ জন HNI ক্যাটাগরির ব্যক্তি ছিলেন।
পাশাপাশি, ভারতের বিভিন্ন শহরের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে বেঙ্গালরুতে HNI-এর সংখ্যা সর্বোচ্চ হারে ১৭.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে, দিল্লিতে HNI ক্যাটাগরির সংখ্যা ১২.৪ শতাংশ বৃদ্ধির সাথে সাথে মোট সংখ্যা ২১০-এ দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও, মুম্বাইতে এই সংখ্যা ৯ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়ে মোট সংখ্যা হয়েছে ১,৫৯৬।
এদিকে, বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে ওই প্রতিবেদনে শেয়ারবাজার ও ডিজিটাল গ্রহণের ব্যবস্থাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এই কারণেই, HNI ক্যাটাগরির সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও মনে করা হচ্ছে। সবচেয়ে অবাক করার মত বিষয় হল, এই HNI-দের বেশিরভাগই তরুণ এবং তাঁরা স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাবে ধনী। এই প্রসঙ্গে, নাইট ফ্রাঙ্ক ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর শিশির বৈজাল বলেছেন যে, বর্তমানে ভারত সমগ্র বিশ্বের মধ্যে একটি দ্রুত উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।