বাংলা হান্ট ডেস্ক: রাশিয়ার (Russia) সাথে ভারতের (India) সম্পর্ক বহুদিনের। প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে ভারতের বিপদে-আপদে বরাবরই পাশে দাঁড়িয়েছে রাশিয়া। আজ পর্যন্ত বহুবার ভারতের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে ভারতের অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু হয়ে উঠেছে পুতিনের দেশ। স্বাধীনতার পর থেকেই নয়াদিল্লির একাধিক আভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক সংকটে পাশে দাঁড়িয়েছে এই দেশ।
তাই সেই বন্ধুত্বের দাম দিতে ভোলেনি ভারত-ও। এই কারণেই দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পর যখন রাশিয়াকে ভাতে-মারতে বদ্ধপরিকর পশ্চিমী দেশগুলি ঠিক তখনই সমস্ত নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করেই রাশিয়ার সাথে বন্ধুত্ব অটুট রেখেছে ভারত। আমেরিকার মতো শক্তিধর দেশে থেকে নানা ধামকানি চমকানির পরেও নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকেছে ভারত।
তাই অন্যান্য দেশগুলি যখন রাশিয়া থেকে তেল না কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তখনও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা অব্যাহত থেকেছে ভারত। প্রসঙ্গত কেউ যাতে রাশিয়া থেকে তেল কিনতে না পারেন তার জন্য কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্সের মতো দেশগুলি। যার ফলে ক্রমাগত ভয়ংকর অর্থ সংকটের মধ্যে ডুবে যাচ্ছে।
তাই এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার অর্থনীতিকে বাঁচাতেই একজন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞকেও নিয়োগ করেছেন পুতিন। এসবের মধ্যেই এবার রাশিয়ার সাথে হাত মিলিয়ে জলে এবংস্থলে দুই জায়গাতেই পরমাণু চুল্লি গড়ে তুলতে চলেছে ভারত। আর এই বিষয়ে ভারতকে সমস্ত রকম সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন সরকারি পরমাণু সংস্থা ‘রোসাটম’-এর প্রধান অ্যালেক্সেই লিখাচেভে। এদিন তাঁর সঙ্গেই সাইবেরিয়ায় গিয়ে বৈঠক করেছেন ভারতের ‘অ্যাটমিক এনার্জি কমিশন’-এর প্রধান অজিতকুমার মোহান্তি।
আরও পড়ুন: মমতার সভার দিকে আধলা ইট ছুঁড়েছিল! ভোট আবহে বিস্ফোরক টলিউড অভিনেত্রী অপরাজিতা
তারপরেই রুশ সংবাদমাধ্যম রাশিয়া টুডে’র প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে ভারতের প্রতিনিধিকে অত্যাধুনিক পরমাণু কেন্দ্র ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন রুশ প্রতিনিধি। যা ভবিষ্যতে বিশ্বের সর্বাধিক সুরক্ষিত পরমাণু চুল্লি হিসাবে পরিণত হতে চলেছে।দুই দেশের পরমাণু বিষয়ক বৈঠকে ভবিষ্যতের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এরপর বৈঠকের শেষে লিখাচেভে জানিয়েছেন রাশিয়া পরমাণু শক্তির ব্যবহার নিয়ে ভারতের সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার বিষয়ে আগ্রহী। ঠিক করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক করা হয়েছে, সমুদ্র উপকূলবর্তী স্থলভাগে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পরমাণু কেন্দ্র তৈরি করার পাশাপাশি তুলনায় কম শক্তির ভাসমান পরমাণু কেন্দ্র তৈরিতে ভারতকে সহায়তা করবে রাশিয়া।
তবে এদিন দুই দেশের বৈঠকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল ভাসমান পরমাণু কেন্দ্র। রাশিয়ার সহায়তায় এই জিনিস ভারতের হাতে এলে শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমূল বদল ঘটবে দেশে। প্রসঙ্গত এই ভাসমান পরমাণু কেন্দ্র মূলত রাশিয়ারই মস্তিষ্কপ্রসূত। এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র রাশিয়াই এটি তৈরির কলাকৌশল জানেন। তবে এদিনের বৈঠকের পর প্রশ্ন উঠছে নিজেদের দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতেই মোটা টাকার বিনিময়ে রাশিয়া এবার ভারতের হাতে এই কৌশল তুলে দিচ্ছে।