বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার ব্রহ্মসের (BrahMos Missile) চেয়েও দ্রুত এবং আরও মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করবে ভারত। যেটি নিঃসন্দেহে ঘুম হরিয়ে দেবে পাকিস্তানের। এমনিতেই অপারেশন সিঁদুরের সময়ে পাকিস্তানে প্রত্যাঘাতের আবহে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসা ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের পর, ভারত আরও মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, DRDO দেশীয় স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন প্রযুক্তিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জনের পর, ভারত এখন তার পরবর্তী প্রজন্মের হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্রহ্মস-II তৈরিতে নিযুক্ত রয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি আগের চেয়ে আরও মারাত্মক এবং বিপজ্জনক হবে।
এবার ব্রহ্মস-II (BrahMos Missile) তৈরিতে নিযুক্ত রয়েছে ভারত:
জানা গিয়েছে যে, এই উন্নত ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ম্যাক ৮ (শব্দের গতির ৮ গুণ) স্পিড এবং ১,৫০০ কিলোমিটারের স্ট্রাইক রেঞ্জ হাসিল করার সক্ষমতার লক্ষ্যে ডিজাইন করা হচ্ছে। প্রতিরক্ষা সূত্রের মতে, ব্রহ্মস-II (BrahMos Missile) তৈরির জন্য ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে আবার উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা শুরু হতে চলেছে। এই হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল লক্ষ্য ম্যাক ৬-এর বেশি গতি অর্জন করা এবং এটি রাশিয়ার 3M22 জিরকন মিসাইল দ্বারা অনুপ্রাণিত হবে। যেটি একটি স্ক্র্যামজেট-চালিত হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র। যা পারমাণবিক বোমা হামলায় সক্ষম।
প্রকল্পটি ২০০৮ সালেই ঘোষণা করা হয়েছিল: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ব্রহ্মস-II (BrahMos Missile) প্রকল্পটি প্রায় ১ দশক আগে ব্রহ্মস অ্যারোস্পেস দ্বারা প্রস্তুত করা হয়েছিল। তবে, এটি অনেক বাধার সম্মুখীন হয়। যার মধ্যে ছিল উন্নত হাইপারসনিক প্রযুক্তি ভাগাভাগি করতে রাশিয়ার প্রাথমিক অনীহা এবং প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্রের উচ্চ মূল্য নিয়ে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর উদ্বেগ। মূল্যর, রাশিয়া, মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিমের (MTCR) সদস্য হওয়ায়, প্রাথমিকভাবে ২০০ কিলোমিটারের বেশি রেঞ্জের প্রযুক্তি ভাগাভাগি করতে পারেনি। কিন্তু, ২০১৪ সালে ভারত MTCR-এর সদস্য হওয়ার পর পরিস্থিতি বদলে যায়। এমতাবস্থায়, বিশ্বজুড়ে উন্নত হাইপারসনিক অস্ত্রের প্রতি ক্রমবর্ধমান আগ্রহ এবং প্রতিযোগিতা এই প্রকল্পে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছে। যার ফলে দুই দেশ তাদের কৌশলগত প্রতিরক্ষা অবস্থান জোরদার করার জন্য বর্ধিত সহযোগিতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এদিকে, ব্রহ্মস-II প্রকল্পটির পরীক্ষা ২০১৫ সালের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: ফের চমক দেখাবেন বৈভব সূর্যবংশী? পাবেন IPL-এর এই বড় পুরস্কার? ফাইনালের পরেই হবে ঘোষণা
ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র: নতুন প্রজন্মের ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রটি (BrahMos Missile) ভারত-রাশিয়ান যৌথ উদ্যোগ, ব্রহ্মস অ্যারোস্পেসের (১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত) ফলাফল। এটিকে বিশ্বের দ্রুততম সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা ম্যাক ৩.৫ গতিতে পৌঁছতে পারে এবং ২৯০ থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। এটি ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর বহরে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পাশাপাশি, স্থল, জল, আকাশ এবং সাবমেরিনে অপারেশনাল ব্যবহারের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রের নির্ভুলতা, লো রাডার ভিজিবিলিটি এবং “ফায়ার অ্যান্ড ফরগেট” প্রযুক্তি এটিকে ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র করে তুলেছে। গত মাসে পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে অপারেশন সিঁদুরের সময়ে এই মিসাইল ব্যবহার করা হয়েছিল। ব্রহ্মসের লক্ষ্য এতটাই নির্ভুল ছিল যে এটি তার সমস্ত “টার্গেট” অর্জন করতে সক্ষম হয়।
আরও পড়ুন: ব্যয়বহুল EMI থেকে মিলবে মুক্তি? শীঘ্রই বড় ঘোষণা করতে পারে RBI
ব্রহ্মস-২ ভবিষ্যতের ক্ষেপণাস্ত্র: ব্রহ্মস-II (যাকে ব্রহ্মস মার্ক-II-ও বলা হয়) ক্ষেপণাস্ত্র (BrahMos Missile) প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ। এর গতিবেগ ৬ থেকে ৮ ম্যাকের মধ্যে থাকবে এবং এর রেঞ্জ হবে ১,৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। এটি হাইপারসনিক গতিতে অবিরাম উড়তে সক্ষম এবং টার্গেট ধ্বংস করবে। এই মিসাইলের ডিজাইন রাশিয়ার 3M22 জিরকন দ্বারা অনুপ্রাণিত। যেটি ম্যাক ৯ গতিতে চলতে সক্ষম করে এবং এটি রাশিয়ান নৌবাহিনীর একটি অংশও। ব্রহ্মস-II-তে একটি স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন থাকবে। যা বর্তমান ব্রহ্মসের র্যামজেট সিস্টেমের তুলনায় অনেক উন্নত। অনুমান করা হচ্ছে যে ব্রহ্মস-II-র ওজন প্রায় ১.৩৩ টন হতে পারে। যা আকাশে উৎক্ষেপিত ব্রহ্মস-এ (২.৬৫ টন)-এর প্রায় অর্ধেক। এটি ভারতের স্বদেশী লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফট (LCA) তেজসের পাশাপাশি একাধিক বিমানে স্থাপন করা যেতে পারে।
দেখুন গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও: