বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আফগানিস্তানে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের সদস্যতা নেওয়া কেরলের চার মহিলাকে ভারতে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা নেই। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, এক বরিষ্ঠ সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন যে, কেরলের যেই চার মহিলা জঙ্গি যোগের কারণে আফগানিস্তানের জেলে বন্দি, তাঁদের ভারতে ফিরিয়ে আনার অনুমতি দেবে না সরকার। ওই মহিলারা আফগানিস্তানের খুরাসান প্রান্তে নিজের স্বামীদের সঙ্গে ইসলামিক স্টেটে যুক্ত হওয়ার জন্য গিয়েছিল।
কেরলের এই মহিলারা ২০১৬-১৮ এর মধ্যে আফগানিস্তানের নাঙ্গারহর পৌঁছেছিল। আর সেই সময় তাঁদের জঙ্গি স্বামীরা আফগানিস্তানে বিভিন্ন হামলায় নিকেশ হয়েছিল। এই মহিলারা ২০১৯-এ ইসলামিক স্টেটের হাজার হাজার মহিলাদের সঙ্গে আফগানিস্তান সেনার সামনে আত্মসমর্পণ করেছিল।
ওই চার মহিলাদের পরিচয় সোনিয়া সাবেস্তিয়ান (আয়েশা), মেরিন জেকব (মরিয়াম), নিমিশা (ফাতিমা ইসা) আর রাফেলা বলে জানা গিয়েছে। বরিষ্ঠ আধিকারিক অনুযায়ী, আরও দুজন ভারতীয় মহিলা এবং একজন পুরুষ আফগানিস্তান সেনার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
আত্মসমর্পণের এক মাস পর ডিসেম্বর ২০১৯-এ ভারতীয় সুরক্ষা এজেন্সির আধিকারিকরা কাবুলে নিজের সন্তানদের সঙ্গে জেলে বন্দি থাকা চার মহিলার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আধিকারিকরা জানান, ওই মহিলাদের ভারতে ফিরিয়ে এনে তাঁদের রাজসাক্ষী করা নিয়ে আলোচনা চলেছিল, কিন্তু যখন আধিকারিকরা ওই মহিলাদের ইন্টারভিউ নেন, তখন তাঁরা বুঝতে পারেন যে, ওই চার মহিলা অনেক কট্টরপন্থী মনোভাবাপন্ন। ইসলামিক সন্ত্রাসবাদের প্রতি তাঁদের অনেক আস্থা, আর এই কারণে ভারত দ্বারা আফগানিস্তানের আধিকারিকদের তাঁদের বিরুদ্ধে আইনত মামলা চালানোর আবেদন করা যেতে পারে। ভারতের আবেদনে ইন্টারপোল ওই মহিলাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশও জারি করেছে।
বলে দিই, NIA দ্বারা ২০১৭ সালে দায়ের চার্জশিট অনুযায়ী, সাবেস্তিয়ান ২০১৬ সালে কেরলের ২১ জন পুরুষ আর মহিলাদের একটি গ্রুপের সঙ্গে আফগানিস্তানে আইএসকেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য ভারত ছেড়েছিল। তাঁরা ইরান থেকে পায়ে হেঁটে আফগানিস্তান গিয়েছিল।
এনআইএ জানায়, কেরলের কাসরগড থেকে সাবেস্তিয়ান ৩১ মে ২০১৬ সালে নিজের স্বামী আব্দুল রাশিদ আব্দুল্লাহর সঙ্গে মুম্বাই বিমানবন্দর থেকে রওনা দিয়েছি। এনআইএ জানায়, স্বামী-স্ত্রী জুলাই ২০১৫ সালে রমজান মাসে পডন্না আর কাসরগডে আইএস আর জিহাদকে সমর্থন করার জন্য সিক্রেট ক্লাস চালিয়েছিল। সাবেস্তিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গ্র্যাজুয়েট।
মেরিন জেকবের বিয়ে কেরলের পলক্কড়ের বাসিন্দা বেস্টিন ভিনসেন্টের সঙ্গে হয়েছিল। দুজনাই ২০১৬ সালে আইএসের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় থাকার জন্য আফগানিস্তান চলে গিয়েছিল। এঁরা বিয়ের পর ইসলাম ধর্ম কবুল করেছিল। ভিনসেন্ট সেনার অভিযানে নিকেশ হয়। ভিনসেন্টের ভাই আর ভাইয়ের স্ত্রীও আফগানিস্তানে নিকেশ হয়। তাঁরাও ইসলাম ধর্ম কবুল করেছিল।
রাফেলার বিয়ে কাসরগডের ৩৭ বছর বয়সী ডাক্তার ইজস কল্লুকেনিয়া পুরাইলের সঙ্গে হয়েছিল। রাফেলার স্বামী ২০২০ সালে পূর্ব আফগানিস্তানের জালালাবাদে একটি জেলে হামলা করেছিল। ওই হামলায় ৩০ জন মারা গিয়েছিল।