নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনছে মলদ্বীপ? এবার মুইজ্জুকে সতর্ক করল ভারত

বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি বড় আপডেট সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, মলদ্বীপের দুর্বল অর্থনীতি নিয়ে ভারত (India) আর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আসলে, মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর নেতৃত্বে ওই দ্বীপরাষ্ট্র ক্রমাগত এমন বাণিজ্যিক চুক্তি করছে যা তার আর্থিক অবস্থার অবনতি ঘটাতে পারে। এমতাবস্থায়, ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক গত শুক্রবার একটি বিবৃতি জারি করে বলেছে যে, সাম্প্রতিক চুক্তিগুলি মলদ্বীপের রাজস্বকে প্রভাবিত করতে পারে এবং এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব আর্থিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। ভারত কোনও দেশের নাম না করলেও, এটা স্পষ্ট যে দিল্লি চিন ও তুরস্কের কথা উল্লেখ করছিল। যাদের সঙ্গে মলদ্বীপ সম্প্রতি বাণিজ্য চুক্তি করেছে।

মলদ্বীপকে সতর্ক করল ভারত (India):

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, মলদ্বীপের অর্থনীতি ইতিমধ্যেই সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। ৭.৮ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির এই দ্বীপ দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে এবং ঋণের বোঝা ক্রমাগত বাড়ছে। চিন মলদ্বীপকে ১.৩৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। যার কারণে চিনের ওপর মলদ্বীপের অর্থনৈতিক নির্ভরতা প্রত্যক্ষভাবে বাড়ছে।

India warned Maldives for this reason.

চিনের জালে আটকা পড়েছে মলদ্বীপ: এদিকে, গত ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া চিন-মলদ্বীপ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) দেশটির বাণিজ্য ভারসাম্যকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এই চুক্তি মলদ্বীপের শুল্ক ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলার পাশাপাশি সরবরাহ চেইনকেও অস্থিতিশীল করতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এছাড়া তুরস্কের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। ভারতীয় (India) বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, এই চুক্তিগুলি মলদ্বীপের রাজস্বকে প্রভাবিত করবে। যা দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য ভালো লক্ষণ নয়।

আরও পড়ুন: ভারতে এই প্রথম….রতন টাটার প্রয়াণের পর যা করে দেখাল টাটা গ্রুপের এই সংস্থা, ধন্য ধন্য করছে সকলে

ভারত মলদ্বীপকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছে: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ভারত গত বছর মলদ্বীপের অর্থনীতিকে ভালো জায়গায় রাখার জন্য ৪০০ মিলিয়ন ডলারের সাহায্য এবং ৩০ বিলিয়ন টাকা (৩৪৬ মিলিয়ন ডলার) মূল্যের মুদ্রা অদলবদল করেছে। তা সত্বেও, মুইজ্জু সরকার ভারত থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে চিনের কাছাকাছি চলে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, এবারের বাজেটেও মলদ্বীপের উদ্দেশ্যে ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এমতাবস্থায়, চিনের নির্দেশ মেনে চলার ফল মুইজ্জু সরকারকে ভোগ করতে হবে কি না এই নিয়ে ভারতের কূটনৈতিক মহলে আলোচনা জোরদার হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ভারত-মলদ্বীপ সম্পর্ক ইতিমধ্যেই প্রভাবিত হয়েছে। এখন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেই মলদ্বীপ এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যা বিষয়টিকে কঠিন করে তুলতে পারে।

আরও পড়ুন: জয় দিয়েই সমাপ্ত হল কেরিয়ারের শেষ ম্যাচ! ক্রিকেটের প্রতিটি ফরম্যাট থেকে অবসর নিলেন ঋদ্ধিমান সাহা

মলদ্বীপকে সতর্ক করেছে মুডিসও: সম্প্রতি, রেটিং এজেন্সি মুডিসও সতর্ক করেছে যে মলদ্বীপকে তার আর্থিক চাহিদা মেটাতে বাইরের সাহায্যের ওপর নির্ভর করতে হবে। এখন ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে মলদ্বীপের অর্থনীতির ক্ষতি করছে এই চুক্তিগুলিকে তারা হালকাভাবে নেবে না। এমতাবস্থায়, মুইজ্জু সরকার এই সতর্কতাকে গুরুত্ব সহকারে নেয় নাকি চিনের জালে আরও আটকে যেতে থাকে এটাই এখন দেখার বিষয়।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর