বাংলাহান্ট ডেস্ক : করোনা পরবর্তী সময়কালে সারা বিশ্বেই ছেয়ে আছে অর্থনৈতিক মন্দার (Economic Recession) কালো ছায়া। এশিয়াতেও পাকিস্তান (Pakistan), শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka) গভীর অর্থনৈতিক সংকটে। বাংলাদেশও ধীরে ধীরে একই পথে চলছে। চিনেও (China) অর্থনীতির অবস্থা খুবই খারাপ। এই পরিস্থিতিতে ভারতের (India) অবস্থা কী হতে পারে তা নিয়ে চিন্তায় দেশের অর্থনীতিবিদরা। তবে সমগ্র ভারতের মানুষকে আশ্বস্ত করে একটি সার্ভে রিপোর্ট পেশ করলো বিখ্যাত সার্ভে কোম্পানি ব্লুমবার্গ (Bloomberg)। এই কোম্পানির পক্ষ থেকে একটি সার্ভে করা হয় বিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ে। সেখানে বলা হয় এশিয়ার একাধিক রাষ্ট্র অর্থনৈতিক মন্দার শিকার হলেও বেঁচে যাবে ভারত।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, শ্রীলঙ্কার উপর অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব থাকবে প্রায় ৮৫ শতাংশ। যা সর্বাধিক। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নিউজিল্যান্ড। সেই দেশে অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব থাকবে প্রায় ৩৩ শতাংশ। ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র চিন এবং পাকিস্তানে প্রভাব পড়বে ২০ শতাংশ। এই রিপোর্টে সবার নিচে রয়েছে ভারত। ভারতে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়বে শূন্য শতাংশ। এমনই আশার খবর শোনালো ব্লুমবার্গ।
অর্থনীতির (Economy) হাল ফেরাতে দাম বাড়ানো হচ্ছে একের পর এক নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের। গৃহস্থের উপরে ক্রমেই বাড়ছে মূল্যবৃদ্ধির (Inflation) চাপ। শুধু ভারত (India) নয়, গোটা বিশ্বই মুদ্রাস্ফীতির এক কঠিন সময়ের সামনে দাঁড়িয়ে। ভবিষ্যতে এই মন্দা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। বেশ কিছু বড় দেশে এই মুদ্রাস্ফীতি ও আর্থিক মন্দার প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়তে চলেছে। বলেই জানা যাচ্ছে। তবে বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ এখনও রয়েছে ভারতের সামনে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে এমনই আশার কথা জানানো হয়েছে।
সংকটে শ্রীলঙ্কা : এশিয়াতে অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে শ্রীলঙ্কায়। এমনিতেই এই দ্বীপ রাষ্ট্র অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে এর পর আবারও আসতে চলেছে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব। জানা যাচ্ছে, শ্রীলঙ্কায় ৮৫ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে অর্থনৈতিক মন্দায় প্রভাবিত হওয়ার।
প্রভাব পড়বে চিনেও : বিশ্বব্যাপি অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়তে চলেছে চিনেও। করোনা ছোবলে চিনের অর্থনীতির এমনিতেই টালমাটাল অবস্থা। জায়গায় জায়গায় দেখা দিচ্ছে বিদ্রোহ। ব্যাবসা ক্ষেত্রেও ভারত সহ বহু দেশ মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার মন্দার মুখে পড়তে চলেছে চিন। এছাড়া নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপিন্স এবং তাইওয়ানেও থাবা বসাবে অর্থনৈতিক মন্দা।
অন্যদিকে, আরবিআই-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে মুদ্রাস্ফীতি ও মন্দার প্রভাব কতটা পড়ছে, তার উপর নজর রাখা হচ্ছে। ভারতের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর, তাই চলতি বর্ষাকালের উপরে আগামী মাসগুলিতে অর্থনীতির কী অবস্থা থাকবে, তা নির্ভর করছে। দক্ষিণ-পশ্চিমী মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে দেশজুড়েই শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হলে, চাষের ফলনও ভাল হবে। আর ফলন ভাল হলে, বাজারে চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত জোগান থাকবে, যার জেরে মূল্যবৃদ্ধিও নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম কমানো সম্ভব হলে, দেশের অর্থনীতিতে কু-প্রভাবের বদলে, মন্দার বাজারেও অগ্রগতি হবে ভারতের।