বাংলা হান্ট ডেস্ক : কোনও সামরিক ‘অ্যাকশন’ নয়, বরং পর্যটন অস্ত্রেই চিনকে (China) হারাতে চাইছে ভারত (India)। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে চিন যে ‘মডেল গ্রাম’ গড়ে তুলেছে, সেটার পালটা হিসেবে সামরিক ও অসামরিক উদ্যোগে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অরুণাচল প্রদেশের একাধিক গ্রামে উন্নয়নমূলক কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এই বিষয়ে আধিকারিকরা জানান, সেই পদক্ষেপের মাধ্যমে যেমন স্থানীয় গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা, কর্মসংস্থান বাড়বে, কাজের জন্য দেশের অন্য প্রান্তে যাওয়ার প্রবণতা কমবে, তেমনই সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতের হাত আরও মজবুত করবে। যে অরুণাচল সীমান্ত নিয়ে চিনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত চলছে ভারতের।
জানা যাচ্ছে, চিন সীমান্তের আশেপাশে অরুণাচলের গ্রামগুলিতে হোমস্টে, ট্রেকিংয়ের ক্যাম্প, ক্যাম্পিংয়ের জায়গা, অ্যাডভেঞ্চার্স স্পোর্টস, ধর্মীয় যাত্রার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। পূর্ব অরুণাচল প্রদেশে ভারত-চিনের সীমান্তের প্রথম গ্রাম কাহো, কিবিথু এবং মেশাইয়ে হোমস্টে, ক্যাম্পিংয়ের জায়গা, জিপ-লাইন এবং ট্রেকিং রুট তৈরি করা হয়েছে। অঞ্জা জেলার যে জায়গাগুলিতে মিশমি এবং মেয়র উপজাতির মানুষরা বসবাস করেন, সেগুলিকেও পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।
অরুণাচলের যে সমস্ত জায়গায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়েছিল, সেগুলিকেও পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে রাজ্য সরকার। সেইসঙ্গে অরুণাচলের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় যাতে সহজেই পৌঁছানো যায়, সেজন্য ওয়ালঙে হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য বাণিজ্যিক হেলিপ্যাড তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। তার ফলে অসমের ডিব্রুগড় থেকে সহজেই পর্যটকরা অরুণাচলের প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে যেতে পারবেন। যে রাজ্যের ১,১২৯ কিলোমিটার অংশে ভারত-চিনের আন্তর্জাতিক সীমান্ত আছে।
অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু বলেছেন, ‘রাফটিং, প্যারাগ্লাইডিং, গাড়ি ও বাইকের র্যালি-সহ অন্যান্য অ্যাডভেঞ্চার্স স্পোর্টসের জন্য আমরা অনেক যুবক-যুবতীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। অবিশ্বাস্য পাহাড় থেকে নৈসর্গ উপত্যকা অনেক কিছু আবিষ্কারের সুযোগ আছে মানুষের কাছে। সীমান্ত লাগোয়া প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে জোরকদমে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। সড়কপথে যোগাযোগের জন্যও কাজ চলছে। ট্রেকিংয়ের রুট এখন খুলে দেওয়া হয়েছে। ওই গ্রামগুলিতে যে কাজ চলছে, তা নজরদারি চালাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়।’