দরিদ্রতাকে হারিয়ে IAS অফিসার, চোখে জল আনবে পিতৃহারা সাইকেল মেকানিক বরুণের গল্প

বাংলা হান্ট ডেস্ক : ভারত তথা বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার মধ্যে অন্যতম হল UPSC। এই পরীক্ষায় সফল হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। প্রচুর অধ্যাবসায়, একাগ্রতা এবং পরিশ্রমের পর তবেই মেলে সাফল্য। এরকমই এক উদাহরণ হলেন বরুণ বারানওয়ালা। দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে সর্বভারতীয় চাকরির পরীক্ষায় দাপটের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে এখন আইএএস অফিসার (Indian Administrative Service) পালঘরের এক যুবক।

মহারাষ্ট্রের পালঘর জেলার এক ছোট্ট শহর বইসারে বেড়ে উঠেছেন বরুণ। ছোট থেকেই দারিদ্র তার নিত্য সঙ্গী। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য বলতে ছিলেন তার বাবা। সম্বল বলতে ছিল কেবল একটা সাইকেল সারাইয়ের দোকান। দশম শ্রেণীতে পড়াকালীন সেই বাবাকেও হারান তিনি। রীতিমত মাঝ দরিয়ায় পড়ে বরুণের পরিবার। টাকার অভাবে তার পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে যায়।

পরবর্তীতে সামান্য টাকা জমিয়ে ফের ভর্তি হয়ে যান স্কুলে। সারাদিন স্কুল করতেন আর বিকেলে ফিরেই বসতেন দোকানে। এভাবেই চলতে থাকে এবং অবশেষে দশম শ্রেণীর পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়ে যান তিনি। ছেলের পড়াশোনায় আগ্রহ দেখে দোকানের দায়ভার গ্রহন করেন বরুণের মা। কিন্তু দশম শ্রেণী পাস করার পর একাদশে ভর্ত্তি হতে গিয়ে অনেকখানি টাকার প্রয়োজন পড়ে, যা বরুণের কাছে ছিলনা।

আরও পড়ুন : অপেক্ষার প্রহর শেষ! বুলেট ট্রেন চলবে কবে? দিন ঘোষণা করে দিলেন রেলমন্ত্রী

varun ias yourstory

ঠিক এসময়ই মুশকিল আসান হিসেবে এগিয়ে আসেন এক চিকিৎসক। দ্বাদশ শ্রেণীর পর মেডিক্যাল কলেজে ভর্ত্তি হন বরুণ। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজে দেওয়ার মতো টাকা না থাকায় ছেড়ে দিতে হয় সেই কলেজ। এরপর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য বেছে নেন পুণের এমআইটি কলেজ। বৃত্তি থাকায় পড়াশোনার খরচ নিয়ে ভাবতে হয়নি তাকে। অবশেষে সেখান থেকে ডিগ্রী লাভের পর বহুজাতিক সংস্থায় চাকরি মেলে তার।

আরও পড়ুন : মাথার দাম ছিল ৩৬ লক্ষ! ছত্তিশগড়ে এনকাউন্টারে খতম ৪ নকশাল নেতা

কিন্তু সেখানেই থেমে থাকতে পারেননি বরুণ। তার লক্ষ্য ছিল সরকারি চাকুরী। আর তাই মোটা অংকের চাকরী ছেড়ে দিয়ে শুরু করে দেন UPSC পরীক্ষার প্রস্তুতি। এক্ষেত্রে বরুণকে সাহায্য করে এক বেসরকারি সংস্থা। তারাই তাকে বই ইত্যাদি দেয়। এবং ২০১৬ সালে প্রথমবারের চেষ্টাতেই UPSC এর মতো জটিল পরীক্ষায় উতরে যান বরুণ। উতরে যান বললে অবশ্য কম বলা হয়, কারণ সারা ভারতে ৩২ র‌্যাঙ্ক হাসিল করেন তিনি।

ias sixteen nine

বরুণ আজ এভাবেই সারা ভারতের লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থীদের কাছে আইকন হয়ে উঠেছেন। বরুণ যেভাবে লড়াই করে সাফল্য পেয়েছেন তার জন্য আমাদের পুরো বাংলা হান্টের তরফ থেকে তাকে কুর্ণিশ জানাই।

Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর