ছিল না কোচিংয়ের ফি দেওয়ার টাকা! দীর্ঘ লড়াইয়ের পর IPS হয়ে নজির গড়লেন গ্রামের এই যুবক

বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রত্যেক সফল মানুষের সফলতার পেছনেই থাকে এক অদম্য লড়াইয়ের কাহিনি। কঠোর পরিশ্রম এবং আত্মবিশ্বাসের ওপর ভর করেই তাঁরা সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে দিয়ে নিজের লক্ষ্যপূরণ করে ফেলেন। আর এইভাবেই তাঁরা বাকিদের কাছে হয়ে ওঠেন অনুপ্রেরণার উৎস। বর্তমান প্রতিবেদনে আমরা ঠিক সেই রকমই এক লড়াকু ব্যক্তির প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব। মূলত, আজ আমরা আপনাদের IPS (Indian Police Service) অফিসার নুরুল হাসানের (IPS Noorul Hasan) সাথে পরিচয় করাব। যিনি মহারাষ্ট্র ক্যাডারের ২০১৫ ব্যাচের IPS অফিসার।

প্রথমেই জানিয়ে রাখি যে, নুরুল উত্তরপ্রদেশের পিলিভীতের একটি ছোট গ্রামের কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পরিবারে বাবা-মা ছাড়াও দুই ভাই রয়েছেন। ছোটবেলা থেকেই তাঁর বাড়িতে আর্থিক সঙ্কটের আবহ বজায় ছিল। আর এই সঙ্কট থেকেই নুরুল তাঁর পরিবারকে বের করে আনতে চেয়েছিলেন। সেই কারণেই তিনি UPSC পরীক্ষায় বসার সিদ্ধান্ত নেন।

একদম ছোট থেকেই নুরুল পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। শুধু তাই নয়, দশম শ্রেণির পরীক্ষায় তিনি স্কুলে প্রথম স্থান অর্জন করেন। এরপর তাঁর বাবা বেরেলিতে চাকরি পান। যার কারণে তাঁদের পুরো পরিবার সেখানে চলে যায়। সেখানে তিনি ৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারপরে তিনি IIT থেকে বি.টেক করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কোচিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না পরিবারের কাছে।

এমতাবস্থায়, কোচিংয়ের ফি দিতে না পারায় নুরুলের বাবা গ্রামের পৈতৃক জমিও বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এদিকে, নুরুল পরবর্তীকালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে বি.টেক কোর্সে ভর্তি হন। কিন্তু, কলেজে ফি দেওয়ার মতো টাকা না থাকায় তিনি টিউশন পড়িয়ে কলেজের ফি শোধ করেন। বি.টেক করার পর একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি পেলেও এক বছর পর সেই চাকরি ছেড়ে সরকারি চাকরির প্রস্তুতি শুরু করেন নুরুল।

WhatsApp Image 2023 06 09 at 6.12.50 PM

তিনি ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটে সায়েন্টিস্টের পরীক্ষা দেন এবং তারাপুর সেন্টারে চাকরি পান। কিন্তু তাতেও তিনি সন্তুষ্ট হননি। বরং, নুরুল UPSC-র জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি প্রথম চেষ্টায় UPSC-তে সফল হতে না পারলেও হাল ছেড়ে দেননি। এদিকে, দ্বিতীয়বার তিনি ইন্টারভিউতে সফল হতে পারেননি। এরপরে, ২০১৪ সালে নুরুল কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পান এবং পরীক্ষায় ৬২৫ র‍্যাঙ্ক করে একজন IPS অফিসার হিসেবে তাঁর স্বপ্নপূরণ করে ফেলেন।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর