বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরগরম পশ্চিমবঙ্গ। ইতিমধ্যেই এই মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন একাধিক হেভিওয়েট। গত বছর দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৬ সালের এসএসসির সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) ঝুলে রয়েছে প্রায় ২৬,০০০ চাকরি। এই আবহে সামনে এল ভারতীয় রেলে (Indian Railway) চাকরি দুর্নীতির অভিযোগ! ১৫ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ভারতীয় রেলে (Indian Railway) চাকরি দুর্নীতির অভিযোগ!
অবৈধভাবে ঘুষ দিয়ে স্ত্রীকে রেলের চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন। বিচ্ছেদ হওয়ার পর দুর্নীতির বিষয়ে পুলিশকে জানিয়ে দিল স্বামী। জানা যাচ্ছে, সকল গোপন তথ্য পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি। এরপরেই প্রকাশ্যে আসে চাকরি দুর্নীতির চক্রের কথা। ভারতীয় রেলে চাকরি দুর্নীতির এই ঘটনা ঘিরে জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
জানা যাচ্ছে, প্রায় ৮ মাস আগে রেল (Indian Railway) কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন কোটা নিবাসী মণীশ মিনা। তিনি দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী আশা মিনা ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে রেলের চাকরি পেয়েছেন। এমনকি তাঁর স্ত্রী পরীক্ষাতেও বসেননি বলে জানান তিনি। আশার হয়ে একজন ‘ডামি’ সেই পরীক্ষা দিয়েছেন বলে দাবি করেন মণীশ।
আরও পড়ুনঃ সরকারি কর্মীদের পোয়া বারো! এবার হু হু করে বাড়বে বেতন! কত টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকবে?
ওই ব্যক্তি দাবি করেন, একজন এজেন্টের মাধ্যমে তিনি ওই ডামিকে জোগাড় করে দিয়েছিলেন। যার নাম রাজেন্দ্র বলে জানা গিয়েছে। তিনি রেলওয়ে গার্ডের (Railway Job) কাজ করেন। জানা যাচ্ছে, মণীশের এই আর্জির ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পশ্চিম মধ্য রেলের ভিজিলেন্স ডিপার্টমেন্ট। শেষমেশ তদন্তভার পেয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি সিবিআই।
গত শুক্রবারই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফ থেকে এই মর্মে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেখানে অভিযুক্ত হিসেবে দিল্লি পুলিশের কনস্টেবল লক্ষ্মী মিনা ও রেলের পয়েন্টওম্যান আশা মিনা সহ আরও রেলকর্মীর নাম রয়েছে বলে খবর। সংবাদমাধ্যমের কাছে এই নিয়ে মুখ খুলেছেন আবেদনকারী মণীশ।
কোটা নিবাসী ওই ব্যক্তি দাবি করেন, ভারতীয় রেলওয়েতে স্ত্রী যাতে চাকরি (Indian Railway Job) পেয়ে যান, সেই জন্য চাষের জমি বন্ধক রেখে ১৫ লক্ষ টাকা জোগাড় করে দিয়েছিলেন তিনি। তবে চাকরি পেতেই স্ত্রীয়ের ভোলবদল হতে শুরু করে! চাকরি পাওয়ার ৫ মাস পরেই মণীশকে ছেড়ে চলে যান তাঁর স্ত্রী। তাঁকে বেকার বলে কটাক্ষ করা থেকে শুরু করে তাঁর সঙ্গে থাকতে অস্বীকার করেন। অর্থনৈতিক এবং ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস ভাঙার পর রেল কর্তৃপক্ষের কাছে ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়ার কথা জানান ওই ব্যক্তি।
এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মণীশ বলেন, কিছুদিন আগেই তাঁর স্ত্রী আশা ও রেলের গার্ড রাজেন্দ্রকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু যারা এই চাকরি দুর্নীতির চক্র চালাচ্ছিলেন, জব্বলপুরের ওই রেলের প্রবীণ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অন্যের হয়ে পরীক্ষা দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত লক্ষ্মী মিনার ওপরেও তদন্ত চলছে।
মণীশ জানান, শুধুমাত্র তাঁর স্ত্রীই নন, লক্ষ্মী মিনা আরও একজন প্রার্থীর হয়ে আলাদাভাবে পরীক্ষা দিয়েছিলেন ও ফিজিক্যাল টেস্টও সম্পন্ন করেছিলেন। সেই সঙ্গেই নথি যাচাই প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়। অভিযুক্ত লক্ষ্মী নিজেও কয়েক মাস আগে দিল্লি পুলিশে কনস্টেবলের চাকরি পেয়েছিলেন। ভারতীয় রেলে (Indian Railway) এই দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই তা ঘিরে জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তদন্ত প্রক্রিয়া এগোনোর সঙ্গে আর কী কী তথ্য উঠে আসে এখন সেটাই দেখার।