বাংলা হান্ট ডেস্ক: গত জুলাই মাসে ভারতের রেলমন্ত্রী (Indian Railway) পদে অশ্বিনী বৈষ্ণব আসীন হওয়ার পরেই তিনি সংশ্লিষ্ট মহলের প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই “কাজ করো অথবা নিপাত যাও”- নীতি মেনে চলার কথা বলেছিলেন। এমতাবস্থায়, লক্ষ্যপূরণের জন্য চাপ এবং রেলমন্ত্রীর কঠোর নীতির যৌথ সাঁড়াশি চাপের পরিপ্রেক্ষিতে রেলের শীর্ষ কর্তাদের মধ্যে স্বেচ্ছায় অবসর (Voluntary Retirement Scheme, VRS) নেওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে।
শুধু তাই নয়, বিগত ন’মাসে ৭৭ জন শীর্ষ কর্তার ইস্তফায় কার্যত অবাক হয়েছেন সকলে। এমনকি, স্বেচ্ছাবসরের তালিকায় দু’জন সচিবও রয়েছেন। সূত্র অনুযায়ী, মনে করা হচ্ছে যে, একটি আর্থিক বর্ষে এত সংখ্যক আধিকারিকদের স্বেচ্ছাবসরের ঘটনা কার্যত এই প্রথম। রেল মন্ত্রক সূত্রে দাবি করা হচ্ছে যে মূলত, দুর্নীতিগ্রস্ত, অকর্মণ্য, কর্তাদের সরিয়ে সঠিকভাবে কাজে আগ্রহী আধিকারিকদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে রেলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, ‘‘রেলের আর্থিক স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করতে আয় বাড়ানোর পাশাপাশি কম সংখ্যক লোক নিয়ে রক্ষণাবেক্ষণের চাপ ক্রমশ বাড়ছে। তাই কাজের চাপ সামলাতে না পেরে স্বেচ্ছাবসর নিচ্ছেন অনেকেই।’’ মূলত, স্বেচ্ছাবসরের ঘটনা নিয়ে তৈরি হয়েছে মতানৈক্যরও। ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে যাঁরা কাজ করছেন না, কড়া নজরদারি চালিয়ে তাঁদের স্বেচ্ছাবসরে বাধ্য করানোর অভিযোগ উঠছে। পাশাপাশি, সঠিকভাবে পদোন্নতি হচ্ছেনা বলেও স্বেচ্ছাবসরের দিকে ঝুঁকছেন অনেকেই।
গত জানুয়ারিতেই ১১ জন আধিকারিক স্বেচ্ছাবসর নেন। তাঁদের মধ্যে আছেন কলকাতা মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ জোশীও। তাঁর কার্যকালে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর উদ্বোধন, ফুলবাগান পর্যন্ত সম্প্রসারণ এবং নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর মেট্রো চালুর মতো লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। এমতাবস্থায়, রেলের বিভিন্ন জোনে কর্মরত ইঞ্জিনিয়াররাও মেনে নিয়েছেন যে, পূর্বের তুলনায় কাজের চাপ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, রেলমন্ত্রকের পক্ষ থেকে কঠিন “লক্ষ্য”-ও বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তাঁরা।
এদিকে, অকর্মণ্য কর্মকর্তারা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিরাট চাপের মুখে পড়েছেন। বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রী, নীতিন গড়করি এই ধরনের কর্মকর্তাদের “কাজ বন্ধ না করে পদত্যাগ করে বাড়িতে যাওয়ার” কথাও জানিয়েছিলেন। পাশাপাশি, সাম্প্রতিক পর্যালোচনা সভায়, রেলমন্ত্রী অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত কিছু প্রকল্পের কাজের ধীর গতির জন্য গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
শুধু তাই নয়, সংসদে বাজেট পেশ করার পরপরই, বৈষ্ণব নির্মাণ প্রকল্পগুলির জন্য সমস্ত সচিব এবং প্রধান প্রশাসনিক আধিকারিকদের ১ এপ্রিল থেকে বিড আমন্ত্রণ শুরু করার জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশও দিয়েছিলেন।