বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভারতের গণপরিবহন ব্যবস্থার মেরুদন্ড ভারতীয় রেল (Indian Railways)। যাত্রী পরিবহন থেকে পণ্য পরিবহন, ভারতের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই রেলের অবদান অনস্বীকার্য বললেও কম বলা হয়। বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্কে পরিণত হয়েছে ভারতীয় রেল। দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত আজ সংযুক্ত হাজার হাজার লোকাল ও দূরপাল্লার ট্রেনের মাধ্যমে।
ভারতীয় রেলের (Indian Railways) এক অজানা তথ্য
একটি পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে দেশে প্রায় সাত হাজারেরও বেশি স্টেশন রয়েছে ভারতীয় রেলের (Indian Railways) আওতায়। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রী এই স্টেশনগুলির মাধ্যমেই পৌঁছে যাচ্ছেন নিজেদের গন্তব্যে। তবে ভারতের স্টেশনগুলিতে ঘোষক হিসাবে এক জনৈক মহিলার কন্ঠস্বর অতি পরিচিত আমাদের কাছে।
আরও পড়ুন : ‘শুধু রামনবমীতে এত নিষেধাজ্ঞা কেন?’ কেষ্টপুরে মিছিল আটকাল পুলিশ, ফুঁসে উঠলেন লকেট
কখনও ট্রেনের অন্তিম স্টেশনের তথ্য দেওয়া, আবার কখনও কোন ট্রেন কত নম্বর প্ল্যাটফর্মে রয়েছে সেই সংক্রান্ত ঘোষণা করে থাকে এই মহিলা কন্ঠ। ‘যাত্রীগণ কৃপেয়া ধ্যান দে…’ এই কথাটি মনে আসলেই আমাদের কানে বেজে ওঠে নির্দিষ্ট এক মহিলা কন্ঠস্বর। কখনও হিন্দি আবার কখনও ইংরেজিতে ভাঙা ভাঙা শব্দে একাধিক ভাষায় এই মহিলা কণ্ঠের ঘোষণা বুঝতে কিন্তু খুব একটা বেগ পেতে হয়না যাত্রীদের।
আরও পড়ুন : আরেব্বাস! কলকাতা টু কাশ্মীর ভ্রমণ এখন হাতের মুঠোয়! IRCTC আনল সস্তার এই ট্যুর প্যাকেজ
তবে ভারতের স্টেশনগুলিতে বছর পর বছর ধরে বেজে চলা এই কণ্ঠস্বরের অধিকারিনী কে, সেটা কি কখনও ভেবেছেন? বেশ কিছু সূত্র মারফত জানা যায়, সরলা চৌধুরী নামের এক মহিলা রেল কর্মীর গলা এটি। বছরের পর বছর ধরে ভারতের বিভিন্ন স্টেশনে সরলা চৌধুরীর কন্ঠই ব্যবহৃত হচ্ছে ঘোষক (Announcer) হিসাবে।
বহু বছর ভারতীয় রেলওয়েতে ঘোষকের কাজ করেছেন সরলা দেবী। পরবর্তীকালে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাঁর গলার রেকর্ড ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের রেলওয়ে স্টেশনগুলিতে। সালটা ১৯৮২। অন্যান্য আর পাঁচটা চাকরিপ্রার্থীর মতো আবেদন করেছিলেন ভারতীয় রেলওয়ের ঘোষক পদে। নিয়োগ প্রক্রিয়া চলাকালীন অসংখ্য চাকরি প্রার্থীর মধ্যে রেল কর্তাদের পছন্দ হয়ে যায় সরলা দেবীর কন্ঠ।
তারপরই ভারতীয় রেলওয়ের ঘোষক হিসাবে কাজে যোগ দেন সরলা চৌধুরী। জানা যায়, মহারাষ্ট্রের পারলি ভাজিনাথ রেল স্টেশনে প্রথম জীবনে ঘোষক হিসাবে বছরের পর বছর চাকরি করেছেন সরলা দেবী। এরপর সরলা দেবীর কন্ঠ রেলওয়ের এতটাই পছন্দ হয় যে যান্ত্রিক উপায়ে তাঁর কন্ঠ ছড়িয়ে দেওয়া হয় দেশের বিভিন্ন স্টেশনে।
১৯৮৬ সাল নাগাদ কম্পিউটার প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে রেকর্ড করা হয় সরলা দেবীর কন্ঠ। এরপর সেই রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা স্টেশনগুলিতে। পরবর্তী সময়ে সরলা দেবীর অনুপস্থিতিতেই রেকর্ডারের মাধ্যমে স্টেশনগুলিতে (Railway Station) বাজতে থাকে অতি পরিচিত সেই কণ্ঠস্বর।