বাংলা হান্ট ডেস্ক: আচ্ছা ধরুন আপনার বিয়ে রয়েছে। এদিকে লগ্ন বয়ে যাচ্ছে কিন্তু আপনি সময় মতো বিয়েতে পৌঁছাতে পারলেন না। তখন ঠিক কেমন অনুভূতি হবে? জীবনের শ্রেষ্ঠ মুহূর্তে যদি এমন ঘটনা ঘটে স্বাভাবিকভাবেই সকলের ঘুম উড়ে যায়। আর এবার তেমনি এক ঘটনা ঘটলো মহারাষ্ট্রের এক বাসিন্দার সাথে। তবে বিয়ের লগ্ন শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই বরকে দায়িত্ব সহকারে পৌঁছে দিয়েছে ভারতীয় রেল মন্ত্রী এবং রেলের কর্মকর্তারা। শুধু বর নয় একই সাথে বরযাত্রীকে সুষ্ঠুভাবে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নেন।
ঠিক কি ঘটেছে ট্রেনে (Train)?
মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা চন্দ্রশেখর বাগ, মুম্বাই থেকে গুয়াহাটি যাচ্ছিলেন বিয়ে করতে। আর অন্য রাজ্যে বিয়ে করতে যাওয়া মানেই ঝক্কির ব্যাপার। পরিবার পরিজনের সকলেই গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন। সেখান থেকে হাওড়া থেকে সরাইঘাট এক্সপ্রেস ধরার কথা। কিন্তু এদিকে ট্রেন (Train) ৩-৪ ঘন্টা লেট, তার উপর ট্রেন যে ধীর গতিতে এগোচ্ছিল তাতে সঠিক সময় হাওড়া পৌঁছাতে পারবেন কিনা সেটাই চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এদিকে বিয়ের লগ্ন বয়ে যাচ্ছে, আরেক চিন্তা গ্রাস করে রেখেছে।
চারিদিকে যখন সকলে চিন্তিত সেই সময় বর নেন বিরাট সিদ্ধান্ত। চন্দ্রশেখর এক্স হ্যান্ডেলে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে ট্যাগ করে নিজেদের সমস্যার কথা জানান। আর সেই সাথে, ট্রেনের (Train) গতি বাড়ানোর অনুরোধ জানান। চন্দ্রশেখর সমাজ মাধ্যমে লেখেন, তাদের ৩৪ জন বরযাত্রীর দলের সঙ্গে বয়স্করাও রয়েছেন। এই মুহূর্তে বিকল্প রাস্তা বের করার সময় নেই তার কাছে। এদিকে ট্রেন (Train) দ্রুত না এগোলে, বিয়ের লগ্ন পেরিয়ে যাবে। এমনটাই লিখে অনুরোধ জানান রেলমন্ত্রীকে।
কিন্তু তিনি ধরেই নিয়েছিলেন এতে আদৌ কোন লাভ হবে না। এমনকি রেলমন্ত্রীও যে তার এই পোষ্ট দেখবেন না তেমনটাই ভেবে নিয়েছিলেন চন্দ্রশেখর। কিন্তু যা ঘটল তা কল্পনার বাইরে। চন্দ্রশেখরের এই পোস্ট দেখে তড়িঘড়ি রেল কর্তাদের ব্যবস্থা নিতে আদেশ দেন রেলমন্ত্রী। ইস্টার্ন রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার, ডিভিশনার রেলওয়ে ম্যানেজার এবং হাওড়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজারকে একের পর এক আদেশ দেওয়া হয়। সেই আদেশের উপর নির্ভর করে কাজ করেন তারা।
আরোও পড়ুন : খালি পেটে রোজ খান এক টুকরো পেঁপে, তেড়েফুঁড়ে পালাবে বড় বড় রোগ, কমবে ওজন, বাড়বে আয়ু!
উল্টোদিকে গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসের চালকের কাছে নির্দেশ আসে গতি বাড়ানোর। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, চন্দ্রশেখর যখন স্টেশনে এসে পৌঁছান তখন হাওড়া স্টেশনে সরাইঘাট এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে আছে। কারণ সেখানেও রেলমন্ত্রীর আদেশ পৌঁছে গিয়েছে।। স্টেশনে আগে থেকেই মোতায়ন করা ছিল রেল কর্মী। চন্দ্রশেখর সহ পরিবারের সকলে স্টেশনে পৌঁছাতেই তড়িঘড়ি তাদের মালপত্র নিয়ে সরাইঘাট এক্সপ্রেসে উঠিয়ে দেওয়া হয়।
রেল কর্মকর্তাদের এমন তৎপরতার জন্যই চন্দ্রশেখর এবং পরিবার-পরিজনেরা সুষ্ঠুভাবে গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন। এমনকি রেলের কর্মকর্তাদের এমন কার্যকলাপ দেখে খুশি হয়েছেন বর এবং বরযাত্রীরা। পরবর্তীতে ভারতীয় রেলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন চন্দ্রশেখর বাগ। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে এই মুহূর্তে ভারতীয় রেলওয়ে কর্মক্ষেত্রে যথেষ্ট তৎপর।