বাংলা হান্ট ডেস্ক: পরিস্থিতি যাই হোক নিজের সিদ্ধান্ত থেকে যে কখনই সরতে নেই তা আরও একবার প্রমাণ করলেন এক তরুণী। পাশাপাশি, মনের জোর থাকলে এবং দৃঢ় আত্মবিশ্বাস থাকলে যে সবকিছুই করা সম্ভব তাও একবার প্রমাণিত হল। সম্প্রতি এমন এক ঘটনা ঘটেছে যা রীতিমতো চমকে দিয়েছে সকলকে।
জানা গিয়েছে যে, ভারতের অন্যতম দ্রুতগতির ট্রেন রাজধানী এক্সপ্রেসে করে রাঁচি যাচ্ছিলেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্রী অনন্যা। ওই সফরকালে ট্রেন ছাড়ার সময়ে সেখানে ছিলেন মোট ৯৩০ জন যাত্রী। কিন্তু তারই মধ্যে হঠাৎ ডালটনগঞ্জে নেমে বাসে করে গন্তব্যে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ৯২৯ জন যাত্রী।
স্বাভাবিকভাবেই গোটা ট্রেনের মধ্যে বাকি পড়েছিলেন শুধুমাত্র অনন্যা। কিন্তু তাঁর গন্তব্যস্থল রাঁচি হওয়ায় শুধুমাত্র একজন যাত্রী নিয়ে ট্রেন রাঁচি যাবে না বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এমতাবস্থায়, চরম বিপাকে পড়ে যান অনন্যা। এমনকি, তাঁকে নেমে যেতেও বলা হয়। কিন্তু, অনন্যা সাফ জানিয়ে দেন যে, তিনি ট্রেনে উঠেছেন এবং তাঁর কাছে নির্দিষ্ট টিকিটও রয়েছে। যেই কারণে ট্রেনের দায়িত্ব তাঁকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া।
অনন্যার নিজের সিদ্ধান্তে এতটাই অটল ছিলেন যে, শুধুমাত্র একজন যাত্রীকে নিয়েই রেলের ইতিহাসে প্রথমবারের জন্য ৫৩৫ কিলোমিটার যাত্রা করে রাজধানী এক্সপ্রেস। যদিও, প্রথমে সেখানে কর্মরত রেলের অফিসাররা বাসের বদলে গাড়ির সুযোগ-সুবিধা দিতে চেয়েছিলেন অনন্যাকে। কিন্তু অনন্যা রাজি হননি তাতে।
এমনকি, পরে পুরো বিষয়টি রেলওয়ে চেয়ারম্যানের কাছে পৌঁছে গেলে তিনি রেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন যাতে অনন্যাকে সঠিকভাবে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেওয়া হয়। প্রায় সাড়ে চার ঘন্টার বাকবিতন্ডার পরে অনন্যা রেলের অফিসারদের রাজি করাতে সক্ষম হন। পাশাপাশি, স্থির হয়ে যে, তিনি একাই সফর করবেন এই সুদীর্ঘ পথ।
এইভাবে শুধুমাত্র নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে সম্পূর্ণ রেল কর্তৃপক্ষকে মাথা নত করতে বাধ্য করেন অনন্যা। এদিকে, অনন্যার এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই অবাক হয়েছেন সকলে। একটিমাত্র যাত্রী নিয়ে রাজধানী এক্সপ্রেসের এমন যাত্রা যে অত্যন্ত দুর্লভ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।