বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতে পরিবহণ মাধ্যম হিসেবে রেল নিঃসন্দেহে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ ট্রেনের মাধ্যমে পৌঁছে যান তাঁদের গন্তব্যে। পাশাপাশি, লকডাউন চলাকালীন যখন রেল পরিষেবা বন্ধ ছিল তখন কার্যত ভেঙে পড়ে দেশের পরিবহণ ব্যবস্থা। সেখান থেকেই সহজে অনুমেয় যে, যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে রেল কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে, ভারতীয় রেল ক্রমাগত তার পরিষেবা এবং প্রযুক্তির উন্নতিসাধনে তৎপর থাকে। পাশাপাশি, আজকের দিনটি রেলের জন্য খুবই ঐতিহাসিক হতে চলেছে। আজ পূর্ণ গতিতে দু’টি ট্রেনের প্রতিযোগিতায় নামবে রেল। ওই সময় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব নিজে একটি ট্রেনে এবং অন্যটিতে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকবেন।
জানা গিয়েছে যে, রেলওয়ে আজ দেশীয় ট্রেন সংঘর্ষ সুরক্ষা প্রযুক্তি “কবচ”-এর পরীক্ষা করবে। পরীক্ষাটি সেকেন্দ্রাবাদে সম্পন্ন হবে। এই পরীক্ষায় দু’টি ট্রেন পূর্ণ গতিতে বিপরীত দিক থেকে একে অপরের দিকে ছুটে আসবে। কিন্তু “কবচ”-এর কারণে এই দুই ট্রেনের মধ্যে কোনো সংঘর্ষ হবে না। রেলওয়ে কর্মকর্তারা এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন। পাশাপাশি, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সনাথনগর-শঙ্করপল্লী রুটে এই সিস্টেমের ট্রায়াল রানের অংশ হতে সেকেন্দ্রাবাদে পৌঁছবেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বহু বছর গবেষণার পর এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। ভারতীয় রেলওয়ে দ্বারা তৈরি এই “কবচ” প্রযুক্তিকে বিশ্বের সবচেয়ে সস্তা স্বয়ংক্রিয় ট্রেন সংঘর্ষ সুরক্ষা ব্যবস্থা বলে মনে করা হয়। এই প্রযুক্তি রেলওয়েকে “জিরো অ্যাক্সিডেন্ট”-এর লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করবে।
এই প্রসঙ্গে রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, লাল সংকেত পার হলেই ট্রেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্রেক কষবে। এছাড়াও, পাঁচ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে সমস্ত ট্রেন থেমে যাবে। পাশাপাশি, পেছন থেকে আসা ট্রেনকেও রক্ষা করবে “কবচ”।
আধিকারিকদের মতে, চালকের কাছ থেকে কোনো ত্রুটি থাকলে “কবচ” প্রথমে অডিও-ভিডিওর মাধ্যমে সতর্ক করবে। তাও, সাড়া না পেলে ট্রেনে স্বয়ংক্রিয় ব্রেক চালু হয়ে যাবে। এর পাশাপাশি, এই ব্যবস্থা ট্রেনটিকে নির্দিষ্ট সেকশনের গতির চেয়ে দ্রুত চলতে দেবে না। এছাড়াও, জানা গিয়েছে যে, “কবচ” প্রযুক্তিতে থাকা আরএফআইডি ডিভাইসগুলি ট্রেনের ইঞ্জিন, সিগন্যাল সিস্টেম এবং রেলস্টেশনের ভেতরে বসানো হবে। পাশাপাশি, এই প্রযুক্তি জিপিএস, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির মতো সিস্টেমেও কাজ করবে।