বাংলা হান্ট ডেস্ক : মনোনয়নের শেষপর্বে রণক্ষেত্র ভাঙড়। গুলিতে মৃত্যু হল এক আইএসএফ কর্মীর (Bhangar ISF worker shot dead)। সারা দিন ধরে বোমাবাজি চলেছে। তুমুল উত্তেজনা গোটা এলাকায়। গত তিন দিন ধরে ভাঙড়ে কুরুক্ষেত্র চলছে। মনোনয়ন পর্বের শেষ দিনে এক আইএসএফ কর্মী খুনের ঘটনাও ঘটে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার তার জন্য সামগ্রিকভাবে আইএসএফকে দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা থেকে মমতা বলেন, ‘ভাঙড়ে একটা দল নতুন জিতেছে। তারাই পরশুদিন ওখানে গন্ডগোল, লুঠপাট করেছে, আগুন লাগানো শুরু করেছে।’
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এদিন কলকাতা পুলিস এসকর্ট করে ভাঙড়ে মনোনয়ন দিতে নিয়ে যাচ্ছিলেন ৮২ জন বিরোধী প্রার্থীকে। ভাঙড়ের সোনপুর বাজারের কাছে তাঁদের উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। গুলিতে মৃত্যু হয় এক আইএসএফ কর্মীর। আইএসএফের অভিযোগ, পুলিস এসকর্ট করে নিয়ে যাচ্ছিল মনোনয়ন জমা দিতে।
এরপরই দুষ্কৃতীরা বিরোধী প্রার্থীদের উপর হামলা চালায়। সেই সময় কার্যত দর্শকের ভূমিকা নেয় পুলিস। পরের পর গুলি চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। বোমা পড়তে থাকে। ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারপাশ। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য আইএসএফের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাঁদের কর্মীদের লক্ষ্য করে আইএসএফ বোমাবাজি করেছে বলে তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ।
হামলা চলাকালীন আশেপাশের বেশকিছু দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়। ভেঙে দেওয়া হয় একাদিক গাড়ি। অবাধে চলে লুঠপাট ও অগ্নিসংযোগ। কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। অবস্থা সামাল দিতে বিরাট পুলিস বাহিনী গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে। মনোনয়নের শেষপর্বে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তেতে উঠেছিল ভাঙড়। সকালেই সিপিএম প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শাসকদলের বিরুদ্ধে। মনোনয়ন কেন্দ্রে যাওয়ার পথে সিপিএমের কর্মীদের মারধর করা হয়। তারপরেও দিনভর দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় ভাঙড়ে।
বুধবার যখন ভাঙড় তপ্ত তখন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিসমন্ত্রী মমতার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন নওসাদ। কিন্তু মমতা দেখা করেননি। ফিরে আসতে হয়েছিল ‘ভাইজান’কে। এদিনের ঘটনা সম্পর্কে মমতা বলেন, ‘আজ কী হয়েছে আমি জানি না। আমি রাস্তায় ছিলাম। যাই হয়ে থাক, পুলিসকে বলেছি কড়া ব্যবস্থা নিতে।’
শুধু ভাঙড় নয়। মনোনয়নের শেষ দিনে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়াও রক্তে ভেসেছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ গিয়েছে এক সিপিএম কর্মীর। হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আরও তিন বাম-কংগ্রেসকর্মী। এদিন চোপড়ার ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই বলেও দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।