বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে ভারতে ক্রমশ বাড়ছে গাড়ির বাজার (Indian Car Market)। বিশ্বের অধিকাংশ অটোমোবাইল কোম্পানিগুলিই ভারতীয় বাজারে তাদের গাড়ি বিক্রি করছে। পাশাপাশি, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ক্রেতাদের সংখ্যাও। কিন্তু, বর্তমানে হু হু করে গাড়ি বিক্রির রেশ শুরু হলেও আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে, ভারতের প্রথম গাড়িটি কোথায় বিক্রি হয়েছিল? কিংবা সেই গাড়ির ক্রেতা কে ছিলেন? অনেকের কাছেই এই প্রশ্নগুলির উত্তর অজানা।
তবে, জানিয়ে রাখি যে, দেশের প্রথম গাড়ি বিক্রি হয়েছিল আমাদের রাজ্যের রাজধানী শহর কলকাতাতেই! মূলত, ব্রিটিশ শাসনকালে বাণিজ্য ও শিল্পের সবচেয়ে বড় কেন্দ্র ছিল কলকাতা। আর সেই কারণেই ভারতীয় বাজারে লঞ্চ হওয়া প্রথম গাড়িটি কলকাতা থেকেই তার পথচলা শুরু করে। শুধু তাই নয়, দেশের প্রথম গাড়িটি কিনেছিলেন এই শহরেরই এক শিল্পপতি।
প্রকাশিত হয়েছিল লঞ্চের বিজ্ঞাপন: বিভিন্ন জায়গায় উল্লেখ রয়েছে যে, ক্রম্পটন গ্রিভসের মিঃ ফস্টার ভারতের প্রথম গাড়িটি কিনেছিলেন। তবে এটি সম্পর্কে কিছুটা অনিশ্চয়তা থেকে গিয়েছে। যদিও, একটা জিনিস অবশ্যই স্পষ্ট যে, প্রথম গাড়িটি কেনা হয়েছিল কলকাতা থেকেই। এই গাড়িটি সম্ভবত ফ্রান্সের DeDion গাড়ি ছিল। যখন এই গাড়িটির লঞ্চের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়, তখন কলকাতার বাসিন্দাদের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা দেখা যায়।
মুম্বাইয়ে চারটি গাড়ি বিক্রি হয়: তৎকালীন সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের প্রথম গাড়িটি কলকাতায় বিক্রি হলেও কিছু সময় পর মুম্বাইয়ে আরও ৪ টি গাড়ি বিক্রি হয়। এই চারটি গাড়ি যাঁরা কিনেছিলেন তাঁরা সকলেই পার্সি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এমনকি, ওই ৪ জন ক্রেতার মধ্যে টাটা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জামশেদজি টাটাও ছিলেন। পাশাপাশি, ভারতের আরেকটি শহর মাদ্রাজ (অধুনা চেন্নাই) ১৯০১ সালে প্রথম গাড়িটি পায়।
জমিদাররা গাড়িগুলি কিনে নেন: ১৯০৭ সাল নাগাদ, গাড়ি কলকাতা শহরের সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠতে শুরু করে। তখন এইসব গাড়িগুলি জমিদাররা কিনেছিলেন। মূলত, গাড়ি তখন মানুষের মধ্যে জমিদারদের প্রতিপত্তিকে প্রকাশ করত। এমনকি, স্ট্যাটাস দেখানোর জন্যও সে যুগে অনেক গাড়ি কেনা হয়েছিল।
এমতাবস্থায়, তৎকালীন যুগের একাধিক বিদেশি কোম্পানি তাদের গাড়িগুলিকে ভারতের বাজারে নিয়ে আসে। যদিও, ল্যানচেস্টার (Lanchesters) এবং ফোর্ড মডেল টি (Ford Model T)-র চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি। কিছু কিছু পরিসংখ্যান মারফত জানা গিয়েছে যে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার আগে দেশে এক হাজারেরও বেশি গাড়ি বিক্রি হয়েছিল।