বাংলা হান্ট ডেস্ক : মানুষ খাবার ছাড়া বাঁচতে পারে না। বেঁচে থাকার জন্য মানুষের মৌলিক চাহিদা হচ্ছে খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান। বিশেষ করে জীবিকা নির্বাহের জন্য মানুষের খাদ্যের প্রয়োজন। কিন্তু ভারতে (India) এমন একটি গ্রাম আছে যেখানে মানুষ দিনে একবেলাও রান্না করেন না। তারপরও তারা দিব্যি দিন গুজরান করছেন। এখন ভাবছেন রান্না না করে, না খেয়ে কিভাবে বছরের পর বছর বেঁচে আছেন। তবে তারা না খেয়ে দিনগুজরান করছেন এমনটা নয়, এর পিছনে রয়েছে বিশেষ কারণ!
ভারতের (India) কোন গ্রামে মানুষ রান্না করেন না?
শেষ বয়সে একাকীত্ব বড়ই কষ্টের। বেশিরভাগ সময় দেখা যায় ছেলেমেয়েরা কর্মসূত্রে, পড়াশোনা সুত্রে বিদেশে গিয়ে থাকছেন। এমনকি আজ পৃথিবীর বুকে গড়ে উঠেছে বৃদ্ধাশ্রমের মতো কলঙ্ক। যেখানে আজ ঠাঁই হয়েছে বৃদ্ধ বাবা মায়েদের। কিন্তু ভারতের (India) মধ্যে গুজরাটের চন্দনকি নামের একটি গ্রাম, সেখানকার মানুষদের জীবন যাপন দেখলে আপনাদেরও ঈর্ষা হবে। এখানে দুবেলা খাওয়ার চিন্তা থাকে না, এমনকি এখনোও পযর্ন্ত এখানে বিদ্যুতের আলো পৌঁছায়নি। তারপরও হেসে খেলে জীবন যাপন করছেন এই গ্রামের বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা।
তথ্যসূত্রে জানা গিয়েছে ভারতের (India) এই গ্রামে একসময় ১১০০ মানুষ বসবাস করতেন। কিন্তু বর্তমানে সেই সংখ্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৫০০। হ্যাঁ একটি গ্রামে বাস করে ৫০০ জন বৃদ্ধ- বৃদ্ধারা। আর এই ৫০০ জন মিলেই তৈরি হয়েছে একটি পরিবার। এখানে সবাই একসাথেই থাকে। সকলের সুখ দুঃখের সঙ্গী তারা নিজেরাই। আর এই পরিবারের হেড গ্রামেরই সরপঞ্চ পুনম ভাই প্যাটেল। এই ব্যক্তি একসময় ২০ বছর নিউইর্য়কে কাটিয়ে এসেছেন। আর আজ বৃদ্ধ বয়সে এসে একমাত্র সম্বল এই গ্রাম।
আরও পড়ুন : বৃহস্পতির চাঁদে রয়েছে সমুদ্র? খুঁজে দেখতে নতুন অভিযান NASA-র, সামনে এল দিনক্ষণ
- তবে কেনো এই গ্রামে কারোর উনুন জ্বলে না?
আসলে গ্রামবাসীদের নিয়ে সরপঞ্চ পুনম ভাই প্যাটেল একটি কমিউনিটি কিচেন খুলেছেন। খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে দিনের অধিকাংশ সময়টাই এখানেই কেটে যায় সকলের। এই কমিউনিটি কিচেনে গুজরাটি খাবারের বিভিন্ন পদ পরিবেশন করা হয়। সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট দিনে থাকে খাবারের বিশেষ ব্যবস্থাও। এই কিচেনে রয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। সৌর বিদ্যুতের সাহায্যে লাইট ও এসির সুবন্দোবস্ত রয়েছে সেখানে।
এই বিষয়ে সরপঞ্চ প্যাটেল বলেন, “আমাদের মধ্যে কোনও বিভেদ নেই। আমদের ৫০০ জন মিলিয়েই এই গোটা পরিবার। বিপদে যেমন আমরা সবাই পাশে দাঁড়াই, তেমনই সবাই আনন্দ ভাগও করে নি।”
তিনি আরও জানান, গ্রামবাসীরা খাবারের জন্য মাথাপিছু ২০০০ টাকা করেন। রান্নার জন্য ভাড়া করা ঠাকুরও রয়েছে। তারাই এই ৫০০ জন বয়স্কের রান্না করেন। এই ভাবেই একটি গ্রাম জীবন নির্বাহ করে যাচ্ছে।