বাংলাহান্ট ডেস্ক: পাকিস্তানের (Pakistan) অর্থনৈতিক দুরবস্থা এতটাই ঘোরতর যে এ বার নেমে প্রতিবাদ করছেন সাধারণ মানুষ। অর্থনৈতিক দুরবস্থার ফলে কার্যত স্তব্ধ হয়েছে জনজীবন। জিনিসের দাম এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে ঠিক মতো খেতে পাচ্ছেন না তাঁরা। অবস্থা এমনই যে নতুন বিয়ে করে কী খেয়ে বাঁচবেন তা বুঝছেন না নবদম্পতিরা। সে জন্য তাঁরাও শামিল হয়েছেন প্রতিবাদে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিগত ৫০ বছরে মুদ্রাস্ফীতির এমন আকাশচুম্বী হার দেখেনি পাকিস্তান। ডলারের তুলনায় একেবারেই ধরাশায়ী হয়েছে পাক রুপি। এমনকী পাক সেনার কাছেও দু’বেলা খাওয়ার মতো পয়সা নেই। অর্থের অভাবে আমদানি বন্ধ। দেখা দিয়েছে বিদ্যুতের ঘাটতি। ঋণে জর্জরিত পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াচ্ছে না কোনও দেশ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও (International Monetary Fund) মুখ ফিরিয়েছে।
শুধু তাই নয়, একের পর এক সংস্থা তাদের ঝাঁপ ফেলেছে। ফলে কর্মহারা হয়েছেন আমজনতা। সিন্ধ প্রদেশের নবাবশাহ জেলায় একজন বর ও কনে (Bridegroom) এই চরম মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। তাঁরা একটি অভিনব উপায়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিয়ে করে বাড়ি ফেরার পথে আকাশছোঁয়া মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাঁরা।
বিয়ের শোভাযাত্রায় মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন ইয়াসির বারো এবং তাঁর স্ত্রী ডঃ সহরিশ। কনে জানিয়েছেন, তাঁকে এই প্রতিবাদে শামিল হওয়ার ধারণা স্বামী ইয়াসিরই দিয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই নবদম্পতির এই অভিনব প্রতিবাদের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, দু’জনেই বিয়ের পোশাক পরে স্লোগান দিচ্ছেন।
ইয়াসির জানিয়েছেন, এই প্রতিবাদ পূর্বপরিকল্পিত নয়। বরং বাড়ি যাওয়ার পথে এই ধারণা মাথায় আসে তাঁর। তারপর বন্ধুদের জানালে তাঁরাও রাজি হয়ে যান। অন্যদিকে, পাকিস্তানের মুদ্রাস্ফীতি ৩১.৫ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। পাকিস্তান ব্যুরো অফ স্ট্যাটিসটিক্স জানিয়েছে, গত ৫০ বছরে এটিই সর্বাধিক মুদ্রাস্ফীতির হার। দেশে খাদ্য ও পরিবহন খরচ ৪৫ শতাংশেরও বেশি বেড়ে গিয়েছে। জানুয়ারির থেকে মুদ্রাস্ফীতির হার ৪.৫ শতাংশ বেশি ছিল ফেব্রুয়ারিতে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের থেকে পাকিস্তানের দরকার ঋণ। কিন্তু এই অনুদান পেতে তাদের অনেক শর্ত পূরণ করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ভর্তুকি তুলে দিয়ে কর বৃদ্ধি করা। এর ফলেই সব জিনিসের দাম এতটা বেশি বেড়ে গিয়েছে। মার্চে রমজান মাস পড়বে। এর মধ্যে আরও বাড়বে মুদ্রাস্ফীতির হার। ফলে আরও বিপাকে পড়তে চলেছে প্রতিবেশী দেশটি।