বাংলাহান্ট ডেস্কঃ রোগীর প্রতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার চিত্র নতুন কিছু নয়। এবার এরকমই এক খবর উঠে এল পশ্চিমবঙ্গের (West bengal) স্টিল সিটি দুর্গাপুর (Durgapur) থেকে। দুর্গাপুরের এক বেসরকারী হাসপাতাল গাফিলতির কারণে এক বৃদ্ধার মৃত্যুর অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দিকে আঙ্গুল তুলেছেন মৃতার ছেলে ছেলে শুভজিৎ রায়।
ঘটনার বিবরণ
দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের বাসিন্দা ৭০ উর্দ্ধ অঞ্জলি রায়কে নিউরোলজিক্যাল সমস্যার কারণে গত ২৯ শে মে দুর্গাপুর হেলথ ওয়ার্ল্ড হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন তাঁরই ছেলে শুভজিৎ রায়। কিন্তু প্রথম থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অসুস্থ রোগীকে দায়সারাভাবে চিকিৎসা করেছিলেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন ছেলে শুভজিত রায়। তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘নিউরোলজিস্ট উপেন কুমার শাহ সেই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। একজন চিকিৎসক হওয়া সত্ত্বেও রোগী ভর্তির বিষয়ে তিনি কোনরূপ কর্ণপাত করেননি’।
হাসপাতালের উপর গাফিলতির অভিযোগ
পরিবারের জোরাজুরিতে রোগীকে ভর্তি নিলেও, হাসপাতাল অবহেলার চিত্র ধরা পরে। ছেলে শুভজিৎ রায় বাংলাহান্টকে (Bangla Hunt) জানিয়েছেন, ‘মাকে ভর্তি করার দিন মা হেঁটেই হাসপাতালের গাড়িতে উঠেছিলেন। কিন্তু হাসপাতালে জোর করে ভর্তি করালেও, তার শারীরিক অবস্থার অবন্নতি হতে থাকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথম থেকেই মাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। অবশেষে গত ১৫ ই জুন তারা ডীসচার্জ সার্টিফিকেট দিয়ে মাকে বাড়ি নিয়ে যেতে বাধ্য করে। সেখানে লেখা ছিল, রোগীর অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতি ঘটছে’।
শুভজিৎ রায় আরও জানিয়েছেন, ‘মাকে বাড়ি নিয়ে ফিজিওথ্যারাপি করানো হয়। কিন্তু হঠাৎ ৫ দিন পর ২০ শে জুন মায়ের অবস্থার অবন্নতি দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অ্যাম্বুলেন্স, সাহায্য চাইলেও সঠিক সময়ে তারা এসে পৌঁছায় না। দুপুর দেড়টা থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে পরিষেবা চাইতে চাইতে সময় গড়িয়ে যখন দুপুর ৩ টে হয়ে যায়, তখন মা আর বেঁচে নেই। তাই আমি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে উপযুক্ত তদন্ত মারফত প্রকৃত দোষীর শাস্তি হোক। সেইসঙ্গে অনুরোধ করব এই সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালগুলোর অবিলম্বে লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হোক’।
হাসপাতালের এই অবহেলার বিষয়ে ছেলে শুভজিৎ রায় সুবিচার চেয়ে মানবাধিকার কমিশনকে সমস্ত ঘটনাটি চিঠি মারফত জানান। বর্তমান দিনে আসানসোল কর্তৃপক্ষের চিফ মেডিকেল অফিসার হাসপাতাল গাফিলতির বিষয়ে এক চিঠি প্রেরণ করেন অ্যাসিস্টেন্ট চিফ মেডিকেল অফিসারের কাছে। ঘটনার তদন্তের বিষয়ে নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ।