সমুদ্রে চিন-পাকিস্তানের দাদাগিরির দিন শেষ! যোগ্য জবাব দিতে প্রস্তুত INS সুরত, শক্তি বাড়ল নৌসেনার

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে সামরিক ক্ষেত্রে একের পর এক বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে ভারত। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার একটি বড় আপডেট সামনে এসেছে। যার ফলে সাগরে ফের শক্তিবৃদ্ধি হবে ভারতের। শুধু তাই নয়, জলপথে চিন এবং পাকিস্তানের দাদাগিরিও এবার কমতে চলেছে। গভীর সমুদ্রে শত্রু দেশের পরিকল্পনাকে ধ্বংস করতে ভারতীয় নৌবহরে যুক্ত হতে চলেছে আরেকটি দেশীয় ডেস্ট্রয়ার INS সুরত (INS Surat)। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এটি বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক স্টিলথ গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

শত্রুদের যোগ্য জবাব দিতে প্রস্তুত INS সুরত (INS Surat):

জানিয়ে রাখি যে, INS সুরত (INS Surat) হল বিশাখাপত্তনম ক্লাসের স্টিলথ গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ারের চতুর্থ যুদ্ধজাহাজ। যেটি জানুয়ারিতে নৌবাহিনীতে যোগ দেবে। এটি গত ২০ ডিসেম্বর ইয়ার্ড ১২৭০৭ (সুরত) নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। আরও একটি চমকপ্রদ বিষয় হল দেশে এখনও পর্যন্ত নির্মিত যুদ্ধজাহাজের মধ্যে এটি সবচেয়ে কম সময়ে তৈরি হয়েছে। এই যুদ্ধজাহাজের নকশা তৈরি করেছে নৌবাহিনীর ওয়ারশিপ ডিজাইন ব্যুরো। যেটি দেশীয় ইস্পাত দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি, এই যুদ্ধজাহাজ মাজগাঁও ডক লিমিটেড (MDL)-এ নির্মিত হয়েছে।

INS Surat will increase India's strength at sea.

INS সুরতের শক্তি: দেশীয় স্টিলথ গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ারের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল এটি শত্রুর রাডারে ধরা পড়বে না। অর্থাৎ, শত্রুর নজরে না পড়ে যেকোনও অপারেশন চালাতে পারে। এর পাশাপাশি সারফেস-টু-সারফেস মিসাইল এবং সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল দিয়ে এটি সজ্জিত থাকে। দুটি সারফেস-টু-এয়ার ভার্টিক্যাল লঞ্চারও ইনস্টল করা রয়েছে। প্রতিটি লঞ্চার থেকে ১৬ টি ক্ষেপণাস্ত্র, অর্থাৎ মোট ৩২ টি মাঝারি পাল্লার সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল নিক্ষেপ করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন: Jio- Airtel-এর উড়ল ঘুম! ১৫০ টাকার নিচে ২ টি দুর্ধর্ষ রিচার্জ প্ল্যান লঞ্চ করল Vi, বেজায় খুশি গ্রাহকেরা

এদিকে, INS সুরত (INS Surat) অ্যান্টি সারফেস যুদ্ধের জন্য ব্রহ্মোস অ্যান্টি-শিপ মিসাইল সিস্টেমে সজ্জিত থাকবে। এই সিস্টেম থেকে ১৬ টি ব্রহ্মোস মিসাইল নিক্ষেপ করা যাবে। এতে আধুনিক সার্ভিল্যান্স রাডার লাগানো হয়েছে। শত্রুপক্ষের সাবমেরিন ধ্বংস করার জন্য এটিতে একটি রকেট লঞ্চার এবং টর্পেডো লঞ্চারও রয়েছে। এই ডেস্ট্রয়ারের দৈর্ঘ্য ১৬৩ মিটার। ৭,৪০০ টন ওজনের এই ডেস্ট্রয়ারটি ৪ টি শক্তিশালী গ্যাস টারবাইনের সাহায্যে সর্বোচ্চ ৩০ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে পারে।

আরও পড়ুন: সচিনের গ্যারেজে নতুন অতিথি! কিনে ফেললেন এই বিলাসবহুল গাড়ি, দাম জানলে চমকে উঠবেন

নৌবাহিনীর প্রোজেক্ট ১৫-বি: জানিয়ে রাখি, প্রোজেক্ট ১৫-বি ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তি বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০১৩ সালে শুরু হয়েছিল। এই প্রকল্পের আওতায় মোট ৪ টি ডেস্ট্রয়ার যুদ্ধজাহাজ তৈরি করার কথা ছিল। প্রথম ডেস্ট্রয়ার INS বিশাখাপত্তনম ২০২১ সালেই ভারতীয় নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। INS মুরমুগাও এই প্রকল্পের দ্বিতীয় যুদ্ধজাহাজ। যা ২০২২ সালে নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ডেস্ট্রয়ার INS ইম্ফলকে ২০২৩ সালে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এবার INS সুরত (INS Surat) নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। P-১৫B প্রকল্পের চতুর্থ যুদ্ধজাহাজ সুরাত-এর লঞ্চ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং করেছিলেন। আত্মনির্ভর ভারতে, এই ধরণের স্টিলথ গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ারগুলি সাফল্যের অন্যতম মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর