বাংলা হান্ট ডেস্ক: কিছুদিন আগেও দেশজুড়ে মহামারীর আবহ বজায় থাকলেও এবার নিঃসন্দেহে একটি সুখবর এল সকলের জন্য। পাশাপাশি, এটা ভারতের জন্যও অত্যন্ত শুভ লক্ষণ বলা যেতে পারে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সদ্য প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ভারত থেকে চরম দারিদ্র্যতা প্রায় শেষের পথে। এছাড়াও, মোদী সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্প অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার প্রশংসাও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিবেদনে করা হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ সুরজিত ভাল্লা, অরবিন্দ ভিরামনি এবং করণ ভাসিন এই প্রতিবেদনটি লিখেছেন। সেখান থেকেই জানা গিয়েছে, বর্তমানে দেশে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাসকারী মানুষের অনুপাত ১ শতাংশেরও কম। এমনকি মহামারী চলাকালীনও এই অনুপাত স্থিতিশীল ছিল। আইএমএফের এই রিপোর্ট অনুসারে আরও জানা গিয়েছে, ভারতে প্রতিদিন ১.৯ ডলারের কম খরচ করেন এমন গরিবদের সংখ্যা ০.৮%-এ নেমে এসেছে। যদিও এই পরিসংখ্যান ২০১৯ সালের, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে মহামারীর গত দুই বছরে এটি খুব বেশি পার্থক্য করেনি।
এই প্রসঙ্গে গরিবদের বিনামূল্যে রেশন, খাদ্যশস্য ইত্যাদি প্রদানের জন্য ভারত সরকার এবং বিভিন্ন রাজ্য সরকারের স্কিমগুলি সামগ্রিক পরিস্থিতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এক কথায় এই প্রকল্পগুলি ক্যাশ বেনিফিট ট্রান্সফার (CBT) স্কিমের মতোই কার্যকর হয়েছে৷
এছাড়াও, আইএমএফ-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা ভারতে চরম দারিদ্র্যের মাত্রা বৃদ্ধি রোধ করার ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মূলত প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা-র অধীনে, অভাবী লোকদের বিনামূল্যে খাদ্যশস্য সরবরাহ করা হয়। এছাড়াও, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার মেয়াদ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
যদিও বিশেষজ্ঞদের ভিন্ন মত রয়েছে:
আইএমএফ-এর প্রতিবেদনে অতি দারিদ্র্যের অবসানের কথা বলা হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্তে বিশেষজ্ঞদের মতামত কিছুটা ভিন্ন। ভারতের প্রাক্তন প্রধান পরিসংখ্যান কর্মকর্তা প্রণব সেন এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “এখনও গরিবদের সরকার কর্তৃক জনপ্রতি ৫ কেজি হারে খাদ্যশস্য দেওয়া হচ্ছে। এভাবে ৫ জনের পরিবারে এই মাত্রা হয় ২৫ কেজি। যদি এটি টাকার পরিমাণে রূপান্তরিত হয়, তাহলে এটি প্রতি মাসে প্রায় ৭৫০ টাকা। একটি অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের খাওয়ানোর জন্য এটি যথেষ্ট। কিন্তু এর ফলে বৈষম্য শেষ হয়েছে তা বলা যাবে না। অর্থাৎ এই অসমতা দূর করার জন্য এই পরিমাণটি যথেষ্ট নয়।”