মন থেকে ডাকলেই মা করেন ইচ্ছেপূরণ! কলকাতার “জীবন্ত কালী” শ্যামসুন্দরী খালি হাতে ফেরান না কাউকেই

বাংলা হান্ট ডেস্ক: শহর কলকাতার (Kolkata) বিভিন্ন প্রান্ত জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য মন্দির। সেগুলির ইতিহাস এবং মাহাত্ম্য অনেকেরই অজানা। শুধু তাই নয়, ওই মন্দিরগুলির মধ্যে এমন কিছু মন্দির রয়েছে যেগুলি সম্পর্কে জানার পর রীতিমতো অবাক হয়ে যান প্রত্যেকেই। বর্তমান প্রতিবেদনেও আজ আমরা ঠিক সেইরকমই এক মন্দিরের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব। মূলত, ওই মন্দিরটি বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার (Social Media) দৌলতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।

কলকাতার (Kolkata) “জীবন্ত কালী” মা শ্যামসুন্দরী:

সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ওই মন্দিরের মা শ্যামসুন্দরী “কলকাতার (Kolkata) জীবন্ত কালী” হিসেবেও ভক্তমহলে পরিচিত। এমতাবস্থায়, আজ আমরা আপনাদের কাছে মা শ্যামসুন্দরীর মন্দির সম্পর্কে কিছু চমকপ্রদ তথ্য উপস্থাপিত করব। প্রথমেই জানিয়ে রাখি যে, অত্যন্ত জাগ্রত মা শ্যামসুন্দরীর মন্দিরটি অবস্থিত রয়েছে রাজাবাজার এবং মানিকতলা ক্রসিংয়ের ঠিক মাঝখানে। একটি গলি দিয়ে কিছুটা গেলেই দেখা যাবে এই মন্দিরটিকে।

   

Interesting facts about Shyam Sundari Kali Temple Kolkata.

কিভাবে মায়ের নাম হল “শ্যামসুন্দরী”: মন্দিরের প্রধান পূজক ইন্দ্রসেন ভট্টাচার্যের মতে, মায়ের নাম “শ্যামসুন্দরী” হওয়ার পেছনে একজন বিশেষ ভক্ত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। প্রচলিত কথা অনুযায়ী, মায়ের ওই বিশেষ ভক্ত তাঁর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সবথেকে শ্যাম বর্ণের ছিলেন। যে কারণে তিনি ছোট থেকেই দুঃখ পেতেন। এদিকে, তিনি এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে মা শ্যামসুন্দরীর ছবি দেখতে পেয়ে আত্মীয়ের কাছে জানতে চান ইনি কে? তখন সেই আত্মীয় তাঁকে জানান, ইনি হলেন শ্যামা কালী। তখন, ওই ভক্ত অনুভব করেছিলেন যে তাঁকেও তো সবাই তাঁর গায়ের রঙের জন্য “শ্যামা” বলে ডাকেন। তখন তিনি, শ্যামসুন্দরীকে নিজের প্রিয়জন বলে মনে করতে থাকেন। আর তখন থেকেই মায়ের নাম হয় “শ্যামসুন্দরী”।

আরও পড়ুন: ফের পকেটে পড়বে টান! লাফিয়ে বাড়ল সোনার দাম, সামনে এল কারণ, মাথায় হাত ক্রেতাদের

এর পাশাপাশি ওই মন্দিরে আরও একটি প্রথা প্রচলিত রয়েছে। যেখানে অমাবস্যার দিনে মায়ের পুজো হয় সম্পূর্ণ অন্ধকারে। মন্দিরে থাকা মায়ের বিগ্রহটির দিকে তাকালেই বোঝা যায় তিনি অত্যন্ত আনন্দে স্মিত হাসি হাসছেন। মূলত, ৫১ টি সতীপীঠের পূর্ণাংশ রূপে মা ওই মন্দিরে বিরাজমান করছেন। আর সেই কারণেই তিনি জীবন্ত। ভক্তদের ডাকে তিনি প্রত্যক্ষভাবে সাড়া দেন। মন থেকে মায়ের কাছ থেকে কিছু চাইলে তিনি কাউকে খালি হাতে ফেরান না। আর এইভাবেই মায়ের একাধিক অলৌকিক লীলার কথা প্রচলিত রয়েছে ভক্তমহলে।

আরও পড়ুন: চলন্ত ট্রেনে অসুস্থ বোধ করলেই তৎক্ষণাৎ মিলবে ওষুধ! TTE দেবেন পরিষেবা, বড় পদক্ষেপ রেলের

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, দৈনিক পুজো ছাড়াও অমাবস্যার তিথিতে এই মন্দিরে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি, ওইদিন ভক্তদের পেট ভরে প্রসাদ খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়। ভক্তরা মনে করেন যে মায়ের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকালে মা শ্যামসুন্দরীর চোখ নড়তে দেখা যায়। অনেকেই এই বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছেন। পাশাপাশি, মাকে এখানে একজন ৫ বছরের বালিকা হিসেবে বিবেচিত করা হয়। আর এইভাবেই কলকাতার (Kolkata) বুকে থাকা মা শ্যামসুন্দরী “জীবন্ত” হিসেবেই পূজিতা হচ্ছেন ভক্তমহলে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর