‘কোনও পদ্ধতিই মানা হয়নি’, বিচারপতির সামনে বিস্ফোরক স্বিকারক্তি টেট পরীক্ষকদের

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) বার বার প্রশ্ন উঠেছে ইন্টারভিউ, অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট (Aptitude Test) নিয়ে। চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ ছিল টেটের অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট ‘সঠিক পদ্ধতি’ মেনে হয়নি। মামলাকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের তিন জেলা থেকে ৩০ জন ইন্টারভিউয়ারকে ডেকে বয়ান নিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay)। তবে রুদ্ধদ্বার শুনানিতে ঠিক কী জানিয়েছিলেন ইন্টারভিউয়াররা? সামনে এল অবাক করা তথ্য।

জানা গিয়েছে, প্রার্থীদের করা সমস্ত অভিযোগ মেনে নিয়েছেন ইন্টারভিউয়াররা (Interviewers)। আদালতে তারা জানান প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট ‘সঠিক পদ্ধতি’তে নেওয়া হয়নি। রুদ্ধদ্বার শুনানিতে এই মর্মে নথিতেও সই করেছেন তারা। এদিন নথি প্রকাশ্যে এনে একথা জানান মামলাকারী প্রার্থীদের আইনজীবী। নিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কয়েক জন প্রার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতেই দায়ের হয়েছিল মামলা, আর তাতেই সবটা পরিষ্কার।

২০১৪ সালের প্রাথমিকের টেট পরীক্ষায় মোট ৪২ হাজার ৫০০ জনকে চাকরি দেওয়া হয়। টেটের কিছু পরীক্ষার্থী আগেই অভিযোগ তোলেন যে তাদের অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট সঠিক পদ্ধতি মেনে হয়নি। আদালতে মামলাকারীদের আইনজীবী অভিযোগ করেন অনিয়ম করে নিয়োগ হয়েছে। এরপরই রাজ্যের তিন জেলার ৩০ জন ইন্টারভিউয়ারকে ডেকে পাঠান হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। রুদ্ধদ্বার এজলাসে হয় শুনানি।

justice ganguly

সূত্রের খবর, সেখানেই ২৫ জন ইন্টারভিউয়ার কার্যত অনিয়মের কথা স্বীকার করে নেন। তারা জানান প্রকৃত পক্ষেই সঠিক পদ্ধতি মেনে অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট হয়নি। শুধু তাই নয়, কিছু প্রার্থীর কোনো অ্যাপ্টিটিউড টেস্টই নেওয়া হয়নি বলেও জানান তারা। এই মর্মে নিজেদের বয়ানের নথিতে সই করেছেন ওই ২৫ ইন্টারভিউয়ার। সেই তথ্য সামনে আসতেই শোরগোল রাজ্যজুড়ে।

কী কী জানিয়েছেন ইন্টারভিউয়াররা? কয়েকজন ইন্টারভিউয়ার বলেন, অ্যাপ্টিটিউড টেস্টে ঠিক কত নম্বর ছিল সেটা তাদের জানা ছিল না। তাই টেস্ট নেওয়া সম্ভব হয়নি। কিছুজন আবার বলেন, পর্ষদ তরফে অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট নেওয়ার কোনো নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি। আবার একজন বলেন টেস্টের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা, চক বা ব্ল্যাকবোর্ডের ব্যবস্থা ছিল না, তাই টেস্ট নেওয়া যায়নি। সূত্রের খবর, এদিন একে একে ইন্টারভিউয়ারদের ডেকে কথা বলেন বিচারপতি। পাশাপাশি তাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই নলেও আশ্বাস দেন তারা। এরপরেই বিচারকের সামনে সমস্ত সত্যিটা স্বীকার করে নেন তারা।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর