নিজেই সুইচ টিপে লাল আলো জ্বালাতে পারবেন, অত্যাধুনিক সিগন্যাল চালুর ভাবনা কলকাতায়

   

বাংলা হান্ট ডেস্ক: কলকাতার রাজপথ মানেই সেখানে অগণিত মানুষের ভিড়। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ নিজের কাজে বেরিয়ে পড়েন মহানগরে। তাই, এত সংখ্যক মানুষের নিরাপত্তার প্রসঙ্গও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমনিতেই মাঝে মাঝে সাধারণ পথচারীদের দুর্ঘটনার খবর সামনে আসে। তবে, এবার দুর্ঘটনা এড়াতে এবং পথচারীদের কথা মাথায় রেখেই নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

কলকাতার যে সমস্ত পথে কোনো ট্রাফিক সিগন্যাল এবং পুলিশ থাকেনা সেইসব রাস্তায় পথচারীদের কথা ভেবে এবার নতুন সিগন্যাল ব্যবস্থা অর্থাৎ “হাইব্রিড পথচারী বেকন” লাগানোর সিদ্ধান্ত নিল লালবাজার।

নতুন ওই ব্যবস্থার সাহায্যে একজন পথচারী নিজেই খুব সহজে সিগন্যালের সুইচ টিপে লাল আলো জ্বালিয়ে, দু’দিকের গাড়ি থামিয়ে রাস্তা পেরোতে পারবেন। তবে, এখানেই শেষ নয়, ওই পথচারী রাস্তার অপর প্রান্তে চলে যাওয়ার পরে সিগন্যাল স্বয়ংক্রিয় ভাবে সবুজও হয়ে যাবে।

যদিও, ঠিক কি ভাবে কাজ করবে নতুন এই সিগন্যাল পদ্ধতি? এর উত্তরে আপাতত জানা গিয়েছে যে, ট্র্যাফিক সিগন্যাল নেই এমন জায়গাতেই বসানো হবে ওই সিগন্যাল পোস্ট। তবে এই সিগন্যাল সবসময়ে সচল থাকবে না। কোনো পথচারী সেখান দিয়ে রাস্তা পারাপার করতে চাইলে তিনি সুইচ টিপে সচল করবেন ওই সিগন্যালকে।

এদিকে, এই কাজের জন্য একজন পুলিশকর্মী মোতায়েন করা যেতে পারে বলেও ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে। কোনো পথচারী রাস্তা পারাপারের সময়ে সুইচ টিপে সিগন্যাল চালু করার প্রথম কয়েক সেকেন্ড সেখানে হলুদ আলো জ্বলবে-নিভবে। তারপরে কিছুক্ষণ তা স্থির ভাবে জ্বলে থাকার পরে সেখানে লাল আলো জ্বলে উঠবে।

স্বাভাবিকভাবেই, সেই সময়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে ওই পথচারী সহজেই কোনো বিপদ এড়িয়ে রাস্তা পারাপার করতে পারবেন। রাস্তা পেরোনোর শেষে সিগন্যালের লাল আলো কিছুক্ষণ দপদপ করে আস্তে আস্তে নিজেই নিভে যাবে। তখন ফের গাড়ি স্বাভাবিক নিয়মে চলাচল করতে পারবে।

এই প্রসঙ্গে পুলিশের আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে, কলকাতার রাস্তায় বর্তমানে যে সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু রয়েছে, তার থেকে অনেক কম খরচে এই “হাইব্রিড পথচারী বেকন” সিগন্যাল পদ্ধতি লাগানো যাবে। পাশাপাশি, এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যখন পথচারীদের রাস্তা পারাপারের চাপ বেশি থাকবে, তখনই ওই সিগন্যাল কাজ করবে আর বাকি সময় তা অকেজো থাকবে।

3008

তবে, যে রাস্তায় সব সময়েই প্রচুর পরিমাণে পথচারী রাস্তা পারাপার করেন, সেখানে এই সিগন্যাল পদ্ধতি অচল। এই প্রসঙ্গে পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে যে, শহরের কয়েকটি জায়গা বাদ দিলে প্রায় সর্বত্রই সবসময়ে প্রচুর মানুষ রাস্তা পারাপার করেন। বিশেষ করে অফিস টাইমে এই ভিড় সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায়।

ফলে ওই গুটিকতক জায়গা ছাড়া এই সিগন্যাল পদ্ধতি এই শহরে অচল বলে তাঁরা মনে করছেন। যদিও, ইতিমধ্যেই শহরের কোথায় কোথায় এই “হাইব্রিড পথচারী বেকন” লাগানো যায়, তার সমীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে যে, যেসব রাস্তায় গাড়ির গতিবেগ ৫০ কিলোমিটারের কম থাকে এবং যেখানে বর্তমানে কোনো সিগন্যাল পোস্ট নেই, সেখানেই ওই বিশেষ সিগন্যাল বসানো যেতে পারে। প্রাথমিক ভাবে ইএম বাইপাসের একটি জায়গা এবং বাসন্তী হাইওয়ের উপরে তিনটি জায়গায় নতুন ওই সিগন্যাল ব্যবস্থা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুলিশ।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর