মাত্র সাড়ে ১২ হাজার টাকা বিনোয়গ করে হয়ে যান কোটিপতি, সুবর্ণ সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রের এই স্কিম

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত করতে সময় থাকতে থাকতে কম-বেশি সকলেই বিনিয়োগের কথা ভাবেন। তবে, বর্তমানে বিনিয়োগের বাজার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বড় অঙ্কের কোনও বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে ঝুঁকির আশঙ্কাও থাকে প্রচুর।এমতাবস্থায়, অনেকেই সেই ঝুঁকি নিতে চান না। বরং বেসরকারি সংস্থায় বিনিয়োগ করার পরিবর্তে সরকারি বিনিয়োগের পথে হাঁটেন তাঁরা। এই ব্যক্তিদের জন্য পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড নিঃসন্দেহে অত্যন্ত ভাল বিনিয়োগের বিকল্প বলে বিবেচিত হয়। এছাড়াও, সরকারি প্রকল্প হওয়ায় ঝুঁকিহীন বিনিয়োগের পাশাপাশি যথেষ্ট আর্থিক সুরক্ষা দিতে পারে এই প্রকল্প।

১৯৬৮ সালে ন্যাশনাল সেভিংস অর্গানাইজেশন এই প্রকল্পটি শুরু করে। সময়ে-সময়ে সামান্য কিছু অর্থ জমা করে দীর্ঘ মেয়াদে বিশাল অর্থ ফেরত দিতে পারে পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড। এছাড়াও, রয়েছে দারুণ সুদের হার এবং আয়কর ছাড়ের সুবিধাও। যে কোনও পোস্ট অফিস বা ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকলেই এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারেন গ্রাহকেরা।

স্বল্প বিনিয়োগের এই প্রকল্পে বছরে ন্যূনতম ৫০০ টাকা জমা রাখতে হয় গ্রাহকদের। তবে কোনও ভাবেই বছরে দেড় লক্ষ টাকার বেশি জমা দেওয়া যাবে না এই প্রকল্পে। পাশাপাশি, এখানে কিস্তির পরিমাণ হবে সর্বোচ্চ ১২টি। তবে, প্রতি মাসে কোনও বিনিয়োগকারী সর্বাধিক সাড়ে ১২ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন।

এছাড়াও, টাকা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা সুবিধা অনুযায়ী এক সঙ্গে বড় অঙ্কের টাকা জমা করতে পারেন অথবা কিস্তিতেও জমা দিতে পারেন। এই প্রকল্পের মেয়াদ ১৫ বছর। তবে কোনও গ্রাহক চাইলে এই প্রকল্পের মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়াতে পারেন। কর ছাড়ের সুবিধাও রয়েছে এই প্রকল্পে। এখানে বিনিয়োগ করে কোনও বিনিয়োগকারী আয়করের ৮০ সি ধারার অধীনে সর্বোচ্চ দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর ছাড়ের সুবিধা নিতে পারেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বর্তমানে পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদের হার কমিয়ে ৭.১ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় যে এখনও অনেকটাই বেশি সুদ দিচ্ছে এই ফান্ড তা বলাই বাহুল্য। এই প্রকল্পে সরকার মার্চের পর সুদ দেয়।

কোনও পোস্ট অফিস বা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে সেভিংস অ্যাকাউন্ট থাকলেই বিনিয়োগকারীরা পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। এই অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে নথি হিসেবে প্যান কার্ড, আধার কার্ড ও একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবির প্রয়োজন পড়ে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীরা যে পরিমাণ টাকা জমা করতে চান সেটাও ওই দিনই জমা করতে হয়।

WhatsApp Image 2022 02 02 at 11.26.47 AM

মাত্র সাড়ে ১২ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলেই কোটিপতি হওয়ার সুযোগ থাকে এই প্রকল্পে। প্রতি মাসে গ্রাহকদের প্রাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে সর্বোচ্চ সাড়ে ১২ হাজার টাকা জমা করতে হবে। এই ভাবে ১৫ বছর টাকা রাখার পর আরও পাঁচ বছর এই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে। তবে এই প্রকল্প থেকে এক কোটি টাকা পেতে হলে বিনিয়োগের সময়কাল হতে হবে ২৫ বছর।

তত দিনে দেড় লক্ষ টাকার বার্ষিক আমানতের ভিত্তিতে সাড়ে ৩৭ লক্ষ টাকা জমা হয়ে যাবে। পাশাপাশি, এই অর্থের ওপর বার্ষিক ৭.১ শতাংশ হারে ৬৫ লক্ষ ৫৮ হাজার ১২ টাকা সুদ পাওয়া যাবে। একই সময়ে মেয়াদকাল পূর্ণ হওয়ায় মোট পরিমাণ দাঁড়াবে এক কোটি ৩ লক্ষ ৮ হাজার ১২ টাকা। ২৫ বছর বয়স থেকেই এখানে বিনিয়োগ করতে পারেন বিনিয়োগকারীরা। সেক্ষেত্রে, প্রতি বছর এই অ্যাকাউন্টে দেড় লক্ষ টাকা করে রাখলে ৫৫ বছরেই বিনিয়োগকারীরা কোটিপতি হতে পারবেন।

তবে, মনে রাখতে হবে যে, একজন ব্যক্তি সারা দেশে মাত্র একটি পিপিএফ অ্যাকাউন্টই খুলতে পারবেন। নাবালকদের জন্যও খোলা যেতে পারে এই অ্যাকাউন্ট। পাশাপাশি, প্রয়োজনে আপনি আপনার পিপিএফ অ্যাকাউন্ট থেকে লোনও নিতে পারবেন।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর