বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে শেয়ার বাজারে বেশ অস্থিরতা চলছে। কোনো কোনো দিন শেয়ার বাজার অত্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী হয়ে গেলেও আবার এমনও দিন থাকে যেখানে বিরাট পতন পরিলক্ষিত হয়। এমতাবস্থায়, স্বাভাবিকভাবেই বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। এই পরিস্থিতিতে কেউ কেউ এমন স্টক খোঁজেন, যা ভালো রিটার্ন দিতে সক্ষম হয়।
তাঁদের উদ্দেশ্যেই বর্তমান প্রতিবেদনে আমরা এমন একটি স্টকের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যা বিনিয়োগকারীদের রেকর্ড হারে রিটার্ন দিয়েছে। শুধু তাই নয়, এক বছরেই এই শেয়ারটি বিনিয়োগকারীদের কয়েক হাজার শতাংশ রিটার্ন দিতে সক্ষম হয়েছে।
সেজল গ্লাস:
আমরা মূলত সেজল গ্লাস সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানাচ্ছি। সেজল গ্লাসের স্টক এক বছরে ৮২৮৬ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছে। অর্থাৎ, মাত্র এক বছরেই এটি ৫০ হাজার টাকাকে ৪১.৯৩ লক্ষ টাকায় রূপান্তরিত করেছে। এই শেয়ারটির এক বছর আগে দাম ছিল মাত্র ৩.৪২ টাকা। যেখানে আজ এটি ২৮৬.৮০ টাকায় রয়েছে। পাশাপাশি, কোম্পানির বাজার মূলধন মাত্র ২৯০.৭৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ এটি একটি ছোট ক্যাপ কোম্পানি।
২০২২ সালে রিটার্নের পরিমান:
২০২২ সালে এখনও পর্যন্ত সেজল গ্লাসের রিটার্ন ১০৭৫.৪ শতাংশ হয়েছে। অর্থাৎ, এটি ২০২২ সালেই বিনিয়োগকারীদের ১১ গুণেরও বেশি অর্থ ফিরিয়ে দিয়েছে। যদি কেউ চলতি বছরের প্রথম দিকে এই শেয়ারগুলিতে ১ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে থাকেন, তবে সেগুলির মূল্য আজ ১১.৭৫ লক্ষ টাকার বেশি হত। এছাড়াও, এটি ২ মাসে প্রায় ৭৮.৪১ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছে। কিন্তু এর ১ মাসের রিটার্ন হয়েছে নেগেটিভ ২৫.৭৫ শতাংশ।
৬ মাসে ২০০০ শতাংশ রিটার্ন:
গত ৬ মাসে এখনও পর্যন্ত সেজল গ্লাসের রিটার্ন হয়েছে ২০০১.১০ শতাংশ। অর্থাৎ, এটি এই সময়ে বিনিয়োগকারীদের অর্থ ২১ গুণ বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে। যদি কেউ ৬ মাস আগে তাঁর ১ লক্ষ টাকা এই শেয়ারে বিনিয়োগ করে থাকেন, তবে সেটির মূল্য আজ ২১ লক্ষ টাকার বেশি হত।
শুধু তাই নয়, এটি ৩ মাসে প্রায় ৪১৮.৬ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছে। এর ৫২ সপ্তাহের নিরিখে সর্বোচ্চ মূল্য হল ৫১৭.৪৫ টাকা এবং সর্বনিম্ন মূল্য হল ২.৯০ টাকা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার দর ক্রমাগত কমছে। অর্থাৎ, এটি একটি পতনশীল প্রবণতায় রয়েছে।
সেজল গ্লাস ব্যবসা:
মূলত, এই ব্যবসা ১৯৯১সালে, একটি ছোট গ্লাস ট্রেডিং খুচরো আউটলেটের মাধ্যমে সেজাল গ্লাস হাউস নামে শুরু হয়েছিল। ভারতীয় বাজারে কাঁচের চাহিদা দেখে, কোম্পানিটি সেজাল গ্লাস ক্রাফট প্রাইভেট লিমিটেডের সাথে চারকোপে একটি প্রসেসিং ইউনিটের মাধ্যমে ব্যবসা প্রসারিত করে। মূলত, কাঁচ ক্রমবর্ধমান উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই ধারাকে অব্যাহত রেখে সেজল গ্লাস লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করা হয়। এছাড়াও, সমস্ত অত্যাধুনিক সিএনসি মেশিন সহ সিলভাসাতে এটির একটি প্রসেসিং ইউনিট রয়েছে।
আরও কিছু ব্যবসায়িক পথ:
এই গ্রূপ বীমা ব্রোকিং এবং ফিনান্স ব্যবসায় প্রবেশ করেছে। পাশাপাশি, উচ্চাভিলাষী সম্প্রসারণ পরিকল্পনার সাথে সেজাল, ইন্টেরিয়ার প্রোডাক্ট রিটেলিং এবং ফ্লোট গ্লাস উৎপাদনেও প্রবেশ করেছে। ইউরোপীয় যন্ত্রপাতি, উন্নত পরিকাঠামো ব্যবস্থা এবং কর্পোরেট গ্রাহকের পাশাপাশি, দেশে কাঁচের অন্যতম পছন্দের কোম্পানি হিসেবে বর্তমানে নিজেকে মেলে ধরতে সক্ষম হয়েছে সেজল গ্লাস।