বাংলা হান্ট ডেস্ক: কথায় আছে শিক্ষা নয়, মানুষের আসল পরিচয় হচ্ছে তার ব্যবহার। আপনার ব্যবহারই বলে দেবে আপনি ঠিক কেমন মানুষ। আর এবার এক আইপিএস অফিসারের (IPS Officer) ব্যবহার দেখে রীতিমত সকলেই মুগ্ধ হয়েছেন। তিনি শিখিয়েছেন মানবিকতা কাকে বলে। সেইসাথে দেখিয়ে দিয়েছেন বন্ধুত্ব সমানে সমানে হয় না বন্ধুত্ব হয় মন থেকে। আজ গল্প বলব আইপিএস অফিসার এবং এক সবজি বিক্রেতার।
IPS অফিসার (IPS Officer) হয়েও ভোলেননি সবজি বিক্রেতাকে:
প্রতিদিনের মতো সন্ধ্যাবেলায় সবজি নিয়ে বিক্রি করছিলেন এক সবজি বিক্রেতা। তার কাছে আসা ক্রেতাদের চাহিদা মতো সবজি দিচ্ছিলেন তিনি। আর তখনই হঠাৎ করে তার ঠেলাগাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালো একটি চারচাকা গাড়ি। গাড়ি থেকে নেমে এলেন ডিএসপি অফিসার। হঠাৎই তার নাম ধরে ডাকতেই তিনি কিছুটা চমকে গেলেন। প্রথম দেখাতে সবজি বিক্রেতা চিনতে পারেননি কে সেই ব্যক্তি। তারপরে কিছু সময় যাওয়ার পরেই চিনতে পারেন কে এই ডিএসপি। চেনা মাত্রই দুজন দুজনকে আলিঙ্গন করেন। উল্টোদিকে ক্রেতারাও কিছুটা অবাক হয়ে যান।
আসলে ঘটনাটি ঘটেছে ভোপালে। প্রতিদিনের মতো সন্ধ্যাবেলায় সবজি বিক্রি করতে বসেছিলেন সালমান নামের ব্যক্তি। আর সেই সময় তার ঠেলাগাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়, ডিএসপি অফিসার (IPS Officer) সন্তোষ প্যাটেল। জানা যায় দীর্ঘ ১৪ বছর পর দুজনের সাথে দেখা হলো। এর মাঝে অনেকটা সময় চলে গিয়েছে কিন্তু একে অপরের সাথে দেখা হয়নি। তবে এবার দেখার সৌভাগ্য হয়েছে দুজনের।
দেখামাত্রই পুলিশ অফিসার, সন্তোষ সালমানকে ডাকেন। তারপরে তার নাম জিজ্ঞেস করে। সবজি বিক্রেতা উত্তর দেন তার নাম সালমান। এরপরই পুলিশ অফিসার জিজ্ঞেস করেন, মেরে কো পেহচান্তে হো? অর্থাৎ “আমাকে চিনতে পারছো?” সবজি বিক্রেতা সালমান বলেন, “বিলকুল আছি তারাহ সে, স্যার, আপ সবজি লেনে আতে থে মেরে পাস” অর্থাৎ “একদম ভালো করে মনে আছে স্যার, আমার কাছে সবজি নিতে আসতেন আপনি” এরপরই গাড়ি থেকে নেমে সবজি বিক্রেতাকে জড়িয়ে ধরেন সন্তোষ প্যাটেল। এরপর তারা তাদের পুরনো দিনের স্মৃতি কথা মনে করেন কথা বলতে থাকেন। সেই ভিডিওই সমাজ মাধ্যমে পোস্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: আর নেই চিন্তা! এবার মধ্যবিত্তদের আসছে সুদিন, কি জানালেন অর্থমন্ত্রী?
প্রশ্ন হচ্ছে একজন এত বড় মাপের পুলিশকর্তার বন্ধু কি করে একজন সবজি বিক্রেতা হতে পারে: ভিডিও মারফত জানা যায়, পুলিশ অফিসার সন্তোষ প্যাটেল সালমান খানকে বিগত ১৪ বছর ধরে চেনেন। খারাপ সময় পাশে ছিলেন একমাত্র এই মানুষটি। ২০০৯ থেকে ১৩ নাগাদ তখন সন্তোষ সরকারি চাকরি পড়াশোনার জন্য ভোপালে থাকতেন। আর সেই সময় তার আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। সেই কঠিন সময় এই সবজি বিক্রেতা বিনামূল্যেই সবজি দিয়ে দিতেন। এতে করে তাকে অভুক্ত থেকে দিন গুজরান করতে হতো না। আর সেই কঠিন সময় যে মানুষটি, তাকে এত সাহায্য করেছে তাকে ভুলে যাওয়া পাপ কাজের সমান। আর এমন ভিডিও সমাজের পোস্ট হতে দেখে সকলেই বাহবা করছেন।
আরও পড়ুন: কি অবস্থা! এবার নিজের দেশের ক্লাবের কাছেই চরম অপমানিত নেইমার, কারণ জানলে আপনিও পাবেন দুঃখ
যদিও সন্তোষ প্যাটেলের আইপিএস অফিসার (IPS Officer) হওয়ার গল্পটা প্রায় সকলেই জানেন। ঠিক কি পরিমাণ কষ্ট করে তিনি নিজের জায়গাটি অর্জন করেছেন। আর আজ এই ব্যক্তির মানবিকতা যেন আবারও একবার মানুষকে মুগ্ধ করল। এর আগে তাঁর বহু ভিডিও মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। আর এবারও সেই একই ভাবে তার এই অমায়িক ব্যবহার মানুষকে অনুপ্রাণিত করল।