বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলার রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র (Dearness Allowance) ২৫% মেটানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। হিসেব বলছে, ২৭ জুনের মধ্যে এই টাকা মেটাতে হবে। তার আগে চলতি মাসেই ৪০০০ কোটির ঋণ তুলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার (Government of West Bengal)। এবার শোনা যাচ্ছে, আরও ৩৫০০ কোটি ধার চেয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (Reserve Bank) দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য। নবান্ন সূত্র উদ্ধৃত করে একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে কোনও এক মাসে একসঙ্গে এত টাকা ঋণ নেয়নি সরকার। সেদিক থেকে দেখলে এটি একটি রেকর্ডও বটে!
বকেয়া ডিএ (Dearness Allowance) মেটাতেই বিপুল পরিমাণ ধার রাজ্যের?
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আগেই জানিয়েছিল, গত ৩ জুন ২০ বছরের মেয়াদি বন্ডের দ্বারা ২০০০ কোটি টাকা তুলেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এরপর ১৭ জুন রাজ্য সরকারের সিকিউরিটিজের নিলামে ২২ বছরের জন্য আরও ২০০০ কোটির ঋণ নেওয়া হয়। শুক্রবার আরবিআই জানায়, আরও ৩৫০০ কোটি ধার নেওয়ার জন্য আগামী ২৪ জুন এসজিবি নিলামে অংশ নিচ্ছে বাংলা। অর্থাৎ সব মিলিয়ে জুন মাসেই মোট ৭৫০০ কোটি টাকা ঋণ নিতে চলেছে রাজ্য।
রিপোর্ট বলছে, এই ৩৫০০ কোটি টাকার মধ্যে ২০০০ কোটি টাকা ২৫ বছরের মেয়াদি ও বাকি টাকা ২৬ বছরের মেয়াদি ধার হিসেবে নেওয়া হবে। এখন প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র (DA) ২৫% মেটাতেই কি এত ধার নিচ্ছে সরকার? এই নিয়ে জল্পনা কল্পনা চললেও অফিশিয়াল কোনও আপডেট সামনে আসেনি।
রাজ্য সরকারি (Government Employees) কর্মীদের একাংশের অবশ্য দাবি, সুপ্রিম নির্দেশ মতো বকেয়া মহার্ঘ ভাতার ২৫% মেটানোর জন্য রাজ্যের ঋণ নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। কারণ এর চেয়ে বেশি টাকা সরকারের কাছে আছে।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের সংগঠন ইউনিটি ফোরামের আহ্বায়ক দেবপ্রসাদ হালদার বলেন, ‘সাসপেন্স ও মিসেলেনিয়াস অ্যাকাউন্টে হেডে ১১.৬৫ লক্ষ কোটি টাকা আছে। (এই অবস্থায়) ডিএ দেওয়ার জন্য (রাজ্যের) ঋণ নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না’। তাঁর দাবি, রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতার ২৫% দিতে গেলে যে টাকা দরকার, তার থেকে অনেক বেশি টাকা রাজ্যের কাছে রয়েছে। কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠেও শোনা গিয়েছে কার্যত একই সুর।
উল্লেখ্য, গত ১৬ মে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতার (Dearness Allowance) ২৫% মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে এদেশের সর্বোচ্চ আদালত। নির্দিষ্ট সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীঘ্রই সেই ‘ডেডলাইন’ শেষ হবে। তার আগে রেকর্ড পরিমাণ ঋণ নিতে চলেছে রাজ্য। বকেয়া ডিএ মেটানো নাকি অন্য কোনও খাতে এই টাকা খরচ করা হবে সেটা এখনও জানা যায়নি।