বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কাউকে ‘পাকিস্তানি’ বলে ডাকা কি অপরাধ? সম্প্রতি এমনই এক প্রশ্ন উঠেছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালতে (Supreme Court)। বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার শুনানিতে জানালেন কাউকে পাকিস্তানি বলে ডাকা খারাপ রুচির পরিচয় দেয় ঠিকই, তবে তা কারও ধর্মীয় ভাবে আঘাত করার মত অপরাধ নয়।
বিরাট পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court)
আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ সূত্রে খবর কর্তব্যরত অবস্থায় থাকা এক সরকারি কর্মীকে ‘পাকিস্তানি’ বলে ডেকেছিলেন অভিযুক্ত। ওই মামলার শুনানি চলছিল সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দুই বিচারপতির এজলাসে। ওই মামলা চলাকালীন শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চ জানিয়েছে, কাউকে ‘পাকিস্তানি’ বা ‘মিঞা-টিঞা’ বলে সম্বোধন করা হলে তা নিঃসন্দেহে নিম্নরুচির পরিচয় দেয়। তবে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৮ ধারা অনুযায়ী ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের মতো অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না ওই সম্বোধন।
জানা যাচ্ছে, মামলাকারী ব্যক্তি সরকারি তথ্যের অধিকার সংক্রান্ত দফতরে উর্দু অনুবাদক হিসাবে কাজ করেন। তথ্যের অধিকার (আরটিআই) আইনের অধীনে অভিযুক্ত ব্যক্তি কিছু তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই তথ্যে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না একেবারেই। তাঁর সন্দেহ ছিল,নথিতে হয়তো কোনো কারচুপি করা হয়েছে। সন্দেহের দূর করতে তিনি আবার আবেদন করেন। এরপর কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে তথ্যের অধিকার সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ওই ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: শহুরে ভোটারদের মন পাওয়ার চেষ্টা? জঞ্জাল সাফাইয়ের বিরাট নির্দেশ মমতার
নির্দেশ মিলতেই মামলাকারী সরকারি কর্মী অভিযুক্তের বাড়ি নথি পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু মামলাকারীর দাবি, প্রথমে ওই নথি নিতে না-চাইলেও পরে তিনি নিতে রাজি হয়েছিলেন। মামলাকারীর অভিযোগ ওই সময়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি তাঁর উদেশ্যে কিছু অশ্রাব্য কথা বলেছিলেন। পরে থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। জানা যায়, শান্তি ভঙ্গের উদ্দেশ্য অপমান, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত, হুমকি, কর্তব্যরত সরকারি কর্মীর উপর চড়াও হওয়া এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে আঘাত করার মতো একাধিক মামলা রুজু করা হয়েছিল।
উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে নিম্ন আদালতে এই মামলা খারিজ হয়ে যায়। পরে ওই সরকারি কর্মী রাজস্থান হাই কোর্টে যান। কিন্তু ধাক্কা খান সেখানেও। মামলা খারিজ হওয়ার পর শেষপর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। যদিও সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) জানিয়েছে, মামলাকারীর উপর চড়াও হওয়ার কোনও প্রমাণ মেলেনি, তাই অভিযোগ খারিজ করে হাই কোর্টের রায় সঠিক বলে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি শান্তিভঙ্গের চেষ্টাও হয়নি বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। শেষ পর্যন্ত এই মামলায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।