বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের নির্বাচনে ফের একবার বাংলা জয়ের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অন্যতম বড় প্রতিপক্ষ রূপে উঠে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই টুইটারে ট্রেন্ড করছে ‘ইন্ডিয়া ওয়ান্টস দিদি’ সহ একাধিক শ্লোগান। অনেকেই মনে করছেন ২০২৪ এর লোকসভায় মোদীর সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারে আঞ্চলিক দলগুলির মহাজোট। কংগ্রেস এমনিতেই বর্তমানে বেশ কিছুটা লাচার অবস্থায়। নিজেদের জয়ী রাজ্যগুলিও তেমন ভাবে ধরে রাখতে পারছে না তারা। তার জেরেই বিজেপির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সম্বল এখন আঞ্চলিক দলগুলি। সেই সূত্র ধরেই হয়তোবা আগামী দিনে তৈরি হতে পারে মহাজোট।
আর তাই এখন থেকে দলের বিস্তার বাড়ানো একান্ত দরকার। বাংলা ছড়া তৃণমূল কংগ্রেসের যেটুকু জায়গা রয়েছে তার সবটাই বাঙালি অধ্যুষিত ত্রিপুরায়। বর্তমানে এই রাজ্য রয়েছে বিজেপির দখলে। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব নেতা হিসেবে যথেষ্ট প্রথিতযশা। তবে এবার তার বিরুদ্ধেই মাঠে নামতে চাইছে তৃণমূল। অন্তত তেমনটাই সামনে আসছে একটি গানের কলি থেকে। একুশে নির্বাচনে বাংলার অন্যতম বড় শ্লোগান হয়ে উঠেছিল ‘খেলা হবে’ গানটি। দেবাংশু ভট্টাচার্যের লেখা এই গানের প্রাসঙ্গিকতা ফুরোয়নি নির্বাচন শেষেও, অন্তত এমনটাই দাবি করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ বাংলার পর নাকি এবার খেলা শুরু হবে ত্রিপুরায়।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সঙ্গে সুদীপ রায় বর্মনের দ্বন্দ্ব সকলের কাছে সুপরিচিত। অনেকের মতে, দল ত্যাগ করতে পারেন এই সুদীপ রায় বর্মন। এমনিতেই তিনি মুকুল ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সেই মুকুল রায়ের প্রচ্ছন্ন মদতেই নাকি একাধিক বিধায়ক সহ দল পরিবর্তন করতে পারেন সুদীপ রায় বর্মন। সূত্রে খবর অনুযায়ী, তৃণমূল ত্রিপুরা জয়ের ভার দিয়েছ মুকুল রায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের ওপর। আর তার কারণেই এখন থেকেই মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তৃণমূলের বার্তা।
ইতিমধ্যেই একটি গান ট্রেন্ড করছে এলাকায়। যার কথা হল ‘ত্রিপুরা কইতাসে মমতাদি আইতাসে’ এই গানে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের উল্লেখ। কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্য সাথী, প্রভৃতি প্রকল্পগুলি মানুষকে কিভাবে সাহায্য করেছে তারও উল্লেখ রয়েছে এই গানে। এই গান এখন হোয়াটসঅ্যাপে শেয়ার করছেন অনেকেই। ত্রিপুরার অনেক চায়ের দোকানে শোনা যাচ্ছে টুকরো-টাকরা গানের কলি। সেই সূত্র ধরেই অনেকেই মনে করছেন আগামী দিনে তৃণমূলের পাখির চোখ হতে পারে ত্রিপুরা।
২০২৪ সালে মোদীর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে গেলে এখন থেকেই দরকার সুস্পষ্ট রণনীতি। অনেকেই বলছেন, সেই লক্ষ্যেই ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছেন প্রশান্ত কিশোর। মহারাষ্ট্র এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের সাথে কিছুদিন আগেই বৈঠক করেছেন তিনি। অনেকের মতে এই বৈঠকেই প্রেজেন্টেশন দিয়ে প্রশান্ত কিশোর দেখিয়েছেন কিভাবে আগামী দিনে মোদির বিরুদ্ধে ৩০০ আসন পেতে পারে বিরোধীদের মহাজোট। ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আম আদমি পার্টি। অন্যদিকে আরেক বিজেপি অধ্যুষিত রাজ্যে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন মমতাও। তাই আগামী দিনে হয়তোবা এখান থেকেই শুরু হতে পারে মহাজোটের পরিকল্পনা।