বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের নির্বাচনে ফলাফল আশানুরূপ হয়নি রাজ্য বিজেপির। তারপর থেকেই একদিকে যেমন গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে বঙ্গ বিজেপি-র অন্দরে। তেমনি অন্যদিকে বেশ কিছু নেতার সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে বিজেপির। যাদের মধ্যে একদিকে যেমন রয়েছেন সদ্য সদ্য নির্বাচনের আগে ‘ফুল বদল’ করা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, তেমনি রয়েছেন তৃণমূলের একসময়কার চাণক্য মুকুল রায়। বর্তমানে যদিও কৃষ্ণনগর বিধানসভায় জয়ী হয়ে বিরোধী দলের অন্যতম প্রধান বিধায়ক তিনি। তবে নির্বাচন শেষ হওয়ার পর থেকেই ফের একবার দলবদলের জল্পনা তৈরি হয়েছে মুকুল রায়কে ঘিরে।
প্রথমবার অবশ্য টুইট করে এই জল্পনা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছিলেন মুকুল। তিনি জানিয়েছিলেন, দলবদল করার কোন প্রশ্নই উঠছে না। কিন্তু ফের একবার মুকুল রায় অন্য কোন দলে মুকুলিত হবেন কিনা সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সাম্প্রতিককালে দিলীপ ঘোষের ডাকা বিজেপির দলীয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না মুকুল। এমনকি তিনি এও জানান তাকে বৈঠকের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। যার জেরে আবারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তবে কি প্রকাশ্যে আসছে দিলীপ-মুকুল দ্বন্দ্ব অথবা মুকুল রায় কি ক্রমাগত দূরত্ব বাড়াচ্ছেন দলের সঙ্গে?
এর উত্তর যদিও এখনই সামনে আসেনি তবে শোনা গিয়েছে বেশকিছু অনুগামীদের নিয়ে নিজের সল্টলেকের বাড়িতে বৈঠক করছেন মুকুল রায়। যদিও বৈঠকের আলোচনার বিষয় একেবারেই চুপ মুকুল অনুগামীরা। আর সেখান থেকেই জল্পনা হয়েছে আরো জোরালো? ইতিমধ্যেই অনেক নেতা প্রকাশ্যে ফুল বদলের আভাস দিয়েছেন, তবে কি একই পথে হাঁটবেন মুকুলও। ঘনিষ্ঠ মহল অবশ্য বলছে, আপাতত দলবদলের কোনো সম্ভাবনা নেই। তিনি কৃষ্ণনগরের বিধায়ক। এই মুহূর্তে দল ছাড়লে বিধায়ক পদত্যাগ করতে হবে তাকে। শুধু শুধু কেন এই ঝুঁকি নেবেন তিনি।
তার উপর রয়েছে নারোদা সারদা কাণ্ড। অনুগামীরা এ বিষয়ে মুখ না খুললেও এটুকু বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না যে বিজেপি ছাড়লে সিবিআইয়ের চোখ পড়তে পারে মুকুলের উপরেও। তাই এতটা ঝুঁকি তিনি কেন নেবেন? যদিও তার ছবিটা একটু বদলেছে শুভ্রাংশু রায়ের ক্ষেত্রে। বিধানসভা নির্বাচনে হারের পর প্রথমে ঘনিষ্ঠমহলে এবং পরে প্রকাশ্যে দলের সমালোচনা শুরু করেছেন তিনি। ফেসবুক পোস্টে তিনি এও লিখেছিলেন, দলের আত্মসমালোচনার প্রয়োজন।
এরই মধ্যে আবার মুকুল রায়ের স্ত্রী অসুস্থ হওয়ায় তাকে দেখতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের বর্তমান সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে শুভ্রাংশু রায়ের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ একান্ত আলোচনা করেন তিনি। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক এও প্রশ্ন তুলছেন যে, শুভ্রাংশু কি হয়ে উঠতে পারেন মুকুলের আস্তিনের শেষ টেক্কা? যদিও দলবদলুদের দলে ফেরানোর নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে তৃণমূলের একাংশেও। তাদের দাবি, পুরসভা নির্বাচনের আগে কাউকে যেন দলে ফেরানো না হয়। কারন তাহলে কাউন্সিলরের টিকিট নিয়ে দলের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব তৈরি হতে বাধ্য। অবশ্য মুকুলের ক্ষেত্রটা আলাদা। তিনি একুশের নির্বাচনের আগে ফুল বদল করেননি। এখন শেষ পর্যন্ত এই সমীকরণ কোন দিকে গড়ায় তা বলে দেবে সময়ই।