বাংলার গণতন্ত্র কি আজ আক্রান্ত? প্রাক্তন IPS থেকে আইনজীবী, প্রত্যেকের নিশানায় শাসক দল

বাংলা হান্ট ডেস্ক : গণতন্ত্র! গণতন্ত্র! গণতন্ত্র! বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের অংশ হওয়ার গর্ব রয়েছে প্রত্যেক ভারতবাসীর মধ্যে। ইতিহাস সাক্ষী, ভারতের (India) বুকে এই গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা হয়েছে প্রাচীনকালেই। ষোড়শ মহাজনপদের সময়ই পাওয়া যায় গণতন্ত্রের অস্তিত্ব। কিন্তু সুপ্রাচীন এই ভারতীয় গণতন্ত্র মাঝেমধ্যেই বিতর্কের কাঁটায় বিদ্ধ হয়। আর সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্র (Democracy in West Bengal) আরও একবার দাঁড়িয়ে পড়েছে বিরোধীদের কাঠগড়ায়।

বাংলা হান্ট পরিচালিত কনক্লেভ ২০২৩-এ বিতর্ক সভার মূল বিষয়ই ছিল পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রের অবস্থা। এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আইনজীবি থেকে শুরু করে প্রাক্তন আইপিএস আধিকারিকদের মতো সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। মঞ্চে উঠে ভাষণ দেন প্রাক্তন আইপিএস আধিকারিক নজরুল ইসলাম। তাঁর ক্ষুরধার বক্তব্যে কার্যত পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রের পরিষ্কার চিত্রটাই ফুটে ওঠে।

কী বললেন নজরুল ইসলাম? প্রক্তন দুঁদে পুলিস আধিকারিক নজরুল ইসলাম এদিন নিজের ভাষণ শুরু করেন প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের একটি মন্তব্য থেকে। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের সঙ্গা যদি জানতে হয় তাহলে উইনস্টন চার্চিলকে পড়তে হবে। চার্চিল বলেছিলেন, কোনো দেশে গণতন্ত্র আছে কিনা কিভাবে বুঝবেন? যদি ভোটার লিস্টে নাম থাকা যেকোনও ব্যক্তি বিনা বাধায় নমিনেশন ফাইল করতে পারেন এবং সাধারণ ভোটাররা বিনা সংঘর্ষে ভোট দিয়ে নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরতে পারেন তাহলে বুঝবেন সেখানে গণতন্ত্র আছে।’

এরপরই নজরুল ইসলাম তুলে আনেন সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা। তিনি বলেন, ‘মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার দিন থেকে দেখে আসছি বিরোধীদের উপর আক্রমণ চালিয়েছে শাসক দলের গুন্ডারা। কোথাও জোর করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছে। কোথাও আবার জমাই দিতে দেওয়া হয়নি মনোনয়ন। তাহলে কি বলা যায় যে পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র আছে?’

প্রাক্তন পুলিস কর্তার ভাষণে উঠে আসে পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার চিত্রও। নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ভোটের দিনও হয়েছে তুমুল অশান্তি। কোথাও প্রিসাইডিং অফিসার আসার আগেই শেষ হয়ে গেছে ভোট। কোথাও আবার ভোটারদের মেরেধরে বের করে দেওয়া হয়েছে। কোথাও বা ভোট দেওয়ার পরে ভোটারদের উপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। ব্যালট বক্স ফেলে দেওয়া হয়েছে নর্দমায়, ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে পুকুরে। এ থেকে পরিষ্কার পশ্চিমবঙ্গে কোনও গণতন্ত্র নেই।’

এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী নাজিয়ে ইলাহি খান ও সাংবাদিক সফিকুল ইসলাম। তাঁদের দুজনেরই আক্রমণের কেন্দ্রে ছিল রাজ্য সরকার। তাঁদের বক্তব্যে ফুটে ওঠে কিভাবে গণতন্ত্রের চার স্তম্ভকেই আক্রমণ করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বুকে।

Sudipto

সম্পর্কিত খবর