বাংলাহান্ট ডেস্ক : মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) তরুণী শ্রদ্ধা ওয়াকারকে (Sraddha Murder Case) খুনের ঘটনার পিছনে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। শ্রদ্ধা কি ‘লভ জিহাদ’-এর শিকার? মেয়ের হত্যাকাণ্ড নিয়ে এমন সন্দেহই দানা বেঁধেছে শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ ওয়াকারের মনে। শ্রদ্ধাকে নৃশংস ভাবে খুনের পর তাঁর দেহ ৩৫টি টুকরো করে কেটে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে প্রেমিক আফতাবের বিরুদ্ধে। মেয়ের এই পরিণতিতে স্বাভাবিক ভাবেই ভেঙে পড়েছেন শ্রদ্ধার বাবা। আফতাবের মৃত্যুদণ্ডের দাবিও জানান তিনি।
জানা যাচ্ছে, একটি ডেটিং সাইটের মাধ্যমে শ্রদ্ধা ও আফতাবের আলাপ হয়েছিল। পরে সেই আলাপ গড়ায় প্রেমে। প্রেমিককে নিয়ে এক সঙ্গে থাকবেন বলে ঘর ছাড়েন শ্রদ্ধা। ভিন্ ধর্মের ছেলের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক তৈরি হোক, প্রথম থেকেই এটা চাননি শ্রদ্ধার বাবা-মা। কিন্তু, প্রেমের টানে বাবা-মার আপত্তিকে অগ্রাহ্য করেই ঘর ছাড়েন শ্রদ্ধা। যাঁর জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করেন সেই প্রেমিকের হাতেই খুন হতে হল তাঁকে।
গত ১০ নভেম্বর মেয়ের হদিস না পেয়ে মুম্বই পুলিসে এফআইআর দায়ের করেন শ্রদ্ধার বাবা। প্রেমিকের সঙ্গে শ্রদ্ধা থাকতেন দিল্লিতে। তাই ওই অভিযোগ দিল্লি পুলিসকে জানানো হয়। এর পরই আফতাবকে পাকড়াও করা হয়। জেরা চলাকালীন খুনের কথা স্বীকার করেন আফতাব। বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন শ্রদ্ধা। এ নিয়ে অশান্তির জেরেই তাঁকে খুন করেছেন বলে দাবি করেছেন আফতাব। তদন্তে নেমে পুলিস এ-ও জানতে পারে যে, শ্রদ্ধাকে খুনের পর তাঁর দেহ কেটে ৩৫টি টুকরো করা হয়। তার পর সেগুলি বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো হয়েছে। এই ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় গোটা দেশ জুড়ে।
সংবাদ সংস্থাকে মহারাষ্ট্রের পালঘর নিবাসী শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ মঙ্গলবার খুনের নেপথ্যে ‘লভ জিহাদ’-এর তত্ত্ব রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেছেন, ‘আমার সন্দেহ লভ জিহাদ হয়ে থাকতে পারে।’ সেই সঙ্গে মেয়ের খুনের জন্য আফতাবের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানান হতভাগ্য পিতা। তাঁর কথায়, ‘দিল্লি পুলিশের উপর আস্থা রয়েছে। তদন্ত সঠিক পথেই এগোচ্ছে। আফতাবের সঙ্গে কখনই যোগাযোগ ছিল না। মুম্বইয়ের ভাসাইয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলাম।’
পুলিস সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০১৯ সালে পেশায় ফুড ব্লগার আফতাবের সঙ্গে সম্পর্ক শুরু হয় শ্রদ্ধার। ২০২০ সালে দিল্লিতে তাঁরা একসঙ্গে থাকতে শুরু করে। চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসে ওই যুগল হিমাচল প্রদেশে ঘুরতে যান। দিল্লির ছতরপুরে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেয় আফতাব। সেখানেই শ্রদ্ধাকে নিয়ে থাকছিল সে। ওই ফ্ল্যাটেই গত ১৮ মে শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন আফতাব। খুনের কিছু দিন আগেই আফতাব ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিস।