বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Vote) শেষ হলেও এখনও থামেনি হিংসা-অশান্তির ঘটনা। গতকাল ভোট-সংঘর্ষে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে বারুইপুর জেলা বিজেপির কার্যালয়ে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। আর সেখান থেকেই ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে (Nausahad Siddqui) তিনি নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে বলেন। পাশাপাশি শুভেন্দুর তোলা ‘নো ভোট টু মমতা’ স্লোগানেও বিধায়ককে সরব হতে বলেন শুভেন্দু।
বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্যের পরই শুভেন্দুর উদ্দেশে বার্তা দিয়ে নওশাদ বললেন, ‘‘এ কথা (নো ভোট টু মমতা) বললেই যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এমনটা নয়। আমি শুরু থেকে বলেছি। আজও বলছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দেওয়া বাংলার জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। ওনাকে প্রত্যাখান করতে হবে। তিনি যত কম ভোট পাবেন বাংলার গণতন্ত্রের জন্য তত মঙ্গল হবে।’’
প্রসঙ্গত গতকাল নিজের গড় ভাঙড়ের দিকে যাওয়ার পথে নওশাদকে বাধা দেয় বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। এলাকায় ১৪৪ধারা জারি আছে বলে আটকানো হয় বিধায়ককে। এই নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের ওপর ক্ষোভ উগরে দেন নওশাদ। এই বিষয়েই পড়ে শুভেন্দুর মন্তব্য চাওয়া হলে তিনি সরাসরি নওশাদকে বার্তা দিয়ে বলেন, ‘‘নওশাদ আগে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করুন। বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক শক্তি হিসেবে দেখাচ্ছেন। আপনি আগে নিজে হাত খুলে দিন, তা হলে তো আমরা ভাঙড়ে যাব।’’ নন্দীগ্রামের বিধায়ক আরও বলেন, ‘‘নো ভোট টু মমতার স্লোগানও তাকে তুলতে হবে।’’
শুভেন্দুর এই মন্তব্যের জবাবে এই নিয়ে শনিবার রাতে এক ভিডিয়োবার্তায় নওশাদ বলেন, ‘‘আমি কী রাস্তা খুলে দেব? তিনি একজন সিনিয়র নেতা। এত দিনের রাজনীতিবিদ। তিনি এখন যে পদে আছেন, তাতে শুধু বিজেপি নয় বরং সারা রাজ্যের মানুষের জন্য তাকে কথা বলতে হবে। সিপিএম, কংগ্রেস, আইএসএফ-সহ সামগ্রিক ভাবে সেই মানুষের হয়ে কথা বলতে হবে যারা এই শাসকের অত্যাচারে অতিষ্ট। আমি তো প্রথম দিন থেকেই মমতা সরকারের সমালোচনা করে আসছি। পঞ্চায়েত ভোটেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে ভোট দিতে বারণ করেছি। বিধানসভা নির্বাচনেও তাদের ভোট দিতে বারণ করেছি। আবার কী ভাবে রাস্তা খুলব।’’
নওশাদ আরও বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতার থেকেও আমি সারা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলে মনে করি। তার কাজ, রাজ্যের যেখানে সংবিধান লঙ্ঘিত হচ্ছে, সংবিধান বর্হিভূত কাণ্ড হচ্ছে, মানুষের অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে, মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, গণতন্ত্র আক্রান্ত হচ্ছে, সেখানে গিয়ে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু ভাঙড়, ক্যানিং, আমতা নয়, তাকে সারা রাজ্যে যেতে হবে।’’