রাজীব মুখার্জী, হাওড়া : ভারতের মুসলিম সমাজের কাছে আজ এক ঐতিহাসিক দিন। দীর্ঘ টানা পোড়েনের পর অবশেষে লোকসভা এবং রাজ্যসভা, দুই কক্ষেই পাশ হয়েছে তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিল।
যার পর স্বাভাবিকভাবেই খুশি তিন তালাক নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাকারীদের মধ্যে অন্যতম হাওড়ার ইশরাত জাহান। তিন তালাক নিয়ে এই মুহুর্তে তিনি দিল্লি তে আছেন। আজ রাজ্যসভায় বিলটি পাশ হওয়ার পরে তিনি টেলিফোনে একটি সাক্ষাৎকারে তার অভিব্যক্তি দেন। মুসলিম মহিলাদের অধিকার রক্ষায় এই বিল সংসদে উপস্থাপন ও তা পাশ হওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে কৃতজ্ঞ বলে জানান। এর পাশাপাশি ইশরাতের বক্তব্য, এই তাৎক্ষণিক তালাকের জন্য মুসলিম মহিলাদের জীবন অন্ধকারে চলে যেত। এখন আর তা হবে না। আর পাশাপাশি তিনি বলেন আমি মুসলিম মহিলাদের শুভেচ্ছা জানাতে চাই। কারণ এই তালাক নিয়ে তাদের মনে যে ভয় কাজ করত তা এখন আর থাকবে না। মুসলিম ভাইদেরও শুভেচ্ছা জানিয়ে ইশরাত বলেন, তাদের বাড়ির মেয়ে বোনেদের বিয়ে হওয়ার পরে তারাও একই ভয়ে দিন কাটাতো। সেই ভয় থেকে মুক্তি মিলবে এবার তাদের।
অন্যদিকে প্রথমেই তৃণমূল সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই তালাক বিরোধী বিলের বিরোধিতা করেছিলেন। তার উদ্দেশ্যে ইশরাত বলেন, আমি দিদিকে বলতে চাই তিনি মুসলিম মহিলাদের দেখেনই নি। দেখলে আমাকে বাংলা ছেড়ে সুপ্রিম কোর্টে আসতে হত না। উনি ভোট ব্যাংকের লক্ষ্যে ভেবেছেন মহিলাদের পক্ষে গেলে ছেলেদের ভোট পাবেন না। কিন্তু উনি নিজে মহিলা। মুখ্যমন্ত্রীও বটে। কিন্তু তাও উনি মহিলাদের কষ্ট বুঝলেন না। আমি দিদিকে বলতে চাই আপনি মহিলাদের দেখুন। ওদের কষ্ট বুঝুন এবং ওদের পাশে দাঁড়ান। রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় হোক। তালাকের জন্য একটা জীবন নষ্ট হয়। তাই গোটা বাংলাবাসীকে আমি এই বিলের সমর্থন করার আবেদন জানাচ্ছি।
একটা কথা বলতে চাই, সবাইকে শাস্তি দেওয়া মোদিজির লক্ষ্য নয়। এই বিল সংসারকে বাঁচানোর। ভয় তৈরি করবে। এই ভয় থাকলেই কেউ তালাক দেবে না। আর না দিলে কারুর শাস্তিও হবে না।
প্রসঙ্গত আজই রাজ্যসভায় পাস হয় তিন তালাক বিল।
মুসলিম মহিলাদের বিবাহ রক্ষার এই বিলের পক্ষে ভোট পড়ল ৯৯টি। বিপক্ষে ভোট পড়ল ৮৪টি।
মঙ্গলবার রাজ্যসভাতে এই বিল পাশের পর ট্যুইট করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান, সমগ্র দেশের জন্য আজ একটি ঐতিহাসিক দিন৷