প্রশান্তর সাথে কোন থার্ড ফ্রন্টের বৈঠক নয়, পরিস্কার জানালেন শরদ পাওয়ার

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ক্ষমতায় আসার পিছনে অন্যতম কারিগর ছিলেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরেই মোদীর সঙ্গ ত্যাগ করেন তিনি। এরপর কখনও জনতা দল ইউনাইটেড কখনও কংগ্রেস, কখনও আম আদমি পার্টি আবার কখনও মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। তবে একুশের নির্বাচনের পর তৃণমূলের জয়ের অন্যতম কাণ্ডারী প্রশান্ত কিশোর অন্যভাবে উঠে এসেছেন সকলের নজরে। তার প্রতিটি মুভ এখন বিশ্লেষণ করতে তৎপর রাজনৈতিক গবেষকরা। যদিও সংবাদ মাধ্যমে তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন, একুশের নির্বাচনের পর আর ভোট কুশলী হিসেবে কাজ করবেন না তিনি। এমনকি নিজের সংস্থা আইপ্যাক থেকেও একপ্রকার নাম তুলে নিয়েছেন প্রশান্ত।

কিন্তু অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, মুখে বললেও আদতে তৃণমূলের হয়েই ব্যাটিং করছেন প্রশান্ত। ইতিমধ্যেই মিশন ২০২৪ কে পাখির চোখ করেছেন মমতা ব্যানার্জি। অর্থাৎ আগামী লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় তৃনমূল। তার ওপর এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের বারবার বৈঠক জল্পনা আরও বাড়িয়েছে। কিন্তু এরই মাঝে সামনে এসেছে ভোট কুশলীর আরও এক বড় বয়ান, তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন মোদী সরকারকে হারানোর স্বপ্ন দেখলেও কোন তৃতীয় ফ্রন্টে বিশ্বাস করেন না তিনি। ফলে সব মিলিয়ে বিষয়টি হয়ে উঠেছে আরও জটিল। তাহলে প্রশান্তর আগামী দিনের স্ট্র্যাটেজি কি? এখনও তা রয়ে গেছে ধোঁয়াশায়।

তবে এর মধ্যেই এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারও জানান, তিনি কোন থার্ড ফ্রন্টের বৈঠক ডাকেন নি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহাও। যিনি বর্তমানে রয়েছেন তৃণমূলে। সোমবার একটি টুইটে তিনি জানান, এটি আদতে ছিল রাষ্ট্রমঞ্চের বৈঠক। বৈঠকে রাজনীতিকরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বহু বুদ্ধিজীবী। তবে প্রত্যেকেই জানান এর সঙ্গে তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ার কোন সম্পর্ক নেই। এখন তাহলে কিভাবে সম্ভব মোদী বিরোধিতা?

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, প্রশান্ত কিশোর চান আগামী দিনে সোনিয়া গান্ধীর বদলে ইউপিএ প্রধান হন শরদ পাওয়ার। তাহলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ প্রোজেক্ট করতে আরও বেশি সুবিধা হবে। এই মুহূর্তে ক্রমশ দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে পড়ছে কংগ্রেস। এমনকি বিভিন্ন রাজ্যে ক্ষমতা লাভের পরেও ক্ষমতা ধরে রাখতে পারছে না তারা। আর তাই এ ধরনের দুর্বল একটি দলের প্রমুখকে ইউপিএর চেয়ারম্যান পদে রাখার কোন যৌক্তিকতা নেই।

Why is tmc breaking up? Mamata Banerjee asked Prashant Kishore directly

অন্যদিকে ইউপিএ জোটে না থাকলেও বাইরে থেকে সমর্থন করে তৃণমূল । আর সেই কারণেই বিজেপি ছাড়া সমস্ত পার্টিকে আহ্বান জানানো হয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। জানানো হয়েছে যে কেউ এই মঞ্চের সদস্য হতে পারেন। অনেকেই মনে করেন, বাংলায় তৃণমূল পরপর যে স্ট্র্যাটেজি অবলম্বন করছে তাতে হাত রয়েছে প্রশান্ত কিশোরের। তা সে মুকুল রায়ের দলে ফেরাই হোক কিম্বা অভিষেক ব্যানার্জীর সর্বভারতীয় সভাপতি হওয়া। অন্যদিকে লোকসভায় ভালো ফলের জন্য এখন থেকেই উত্তরবঙ্গেও দাঁত ফোটাতে শুরু করেছে তৃণমূল। অনেকের মতে সেই সূত্র ধরেই দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে গঙ্গাপ্রসাদকে। এখন আগামী দিনে প্রশান্ত কিশোর কি রণনীতি নেন তা তাই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে সর্বভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে।

Avatar
Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর