বাংলাহান্ট ডেস্ক : প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে জাতীয় ভোটার দিবসে এবার রাজ্যকে তোপ দাগলেন রাজ্যপাল। বাংলার অবস্থা ভয়াবহ এমনই দাবি করে একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য করতে শোনা গেল তাঁকে। এদিন এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।
এদিন বিধানসভায় জাতীয় ভোটার দিবসে বি আর আম্বেদকরকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেন রাজ্যপাল। সেখানে মাল্যদানের পর তিনি বলেন, ‘আজ ভোটার দিবস। গনতন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ এই ভোটাররা। বলতে খারাপ লাগলেও পশ্চিমবঙ্গে ভোটারদের কোনো স্বাধীনতা নেই। এখানে ভোট পরবর্তী হিংসা কীভাবে হয়েছে তা আমরা দেখেছি। নিজেদের পছন্দে ভোট দিয়ে মরতে হয়েছে অগণিত মানুষকে।’
পশ্চিমবঙ্গে সংবিধানের আইন মানা হয় না এই দাবিতেও সরব হন তিনি। জগদীপ ধনকড় বলেন, ‘ এখানে সংবিধানের আইন নয় শাসকের আইন চলে। পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা ভয়াবহ, ভয়নক। রাজ্যপাল হিসেবে আমি চিন্তিত। অনেক চেষ্টা করেছি রাজ্যের শাসন ব্যবস্থা রাজ্যের প্রশাসন যাতে সংবিধান মত চলে। আইন মেনে কাজ করে। কিন্তু সরকারি আধিকারিকরা তাঁদের নিয়ম ভুলে গিয়েছেন। সাংবিধানিক মর্যাদা ভুলে গেছেন।’ সংবিধানের সঙ্গে বাংলার দূর দূরান্ত অবধিও কোনো সম্পর্ক নেই একথাও বলেন তিনি।
বিধানসভার স্পিকারকেও তোপ দাগতে ভোলেননি তিনি। বলেন, ‘মুখ্যসচীব, ডিজিপি কেউওই রাজ্যপালের প্রশ্নের জবাব অবধি দেওয়ার দরকার বোধ করেন না। আমি সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে এই বার্তা দিতে চাই যে রাজ্যপালের সাংবিধানিক অধিকার আছে। বিধানসভার স্পিকার মনে করেন তাঁর যা খুশি করার লাইসেন্স আছে। আমি তাঁকে একাধিক বার এই বিষয়ে প্রশ্ন করেছি। কিন্তু তিনি কোনো উত্তর দেন নি।’
এছাড়াও তিনি সাফ জানিয়ে দেন কোনো ফাইল আটকে নেই রাজ্যসভায়। রাজ্যপালের নামে মিথ্যে তথ্য ছড়াচ্ছে শাসক দল। যে ভাষায় রাজ্যপালকে চিঠি লেখা হয় তা ও অত্যন্ত লজ্জার বলেই জানান তিনি।
তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেই ‘আজকের অনুষ্ঠানে এসে উনি যা করলেন তা অত্যন্ত নিন্দাজনক। এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চেয়ে তিনি জানিয়েছিলেন শুধু মাল্যদান করবেন। কিন্তু তারপর যোগ দিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি যা বললেন তা মেনে নেওয়া যায় না। এই ধরণের আলোচনা বিধানসভার বিতর্কে ঠিক আছে, কিন্তু প্রকাশ্য দিবালোকে নয়।’
প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রাজ্যপাল কাদের মুখপাত্র আমি জানি না। কিন্তু উনি বাংলা বোঝেন, বাংলা বলতে পারেন। তবুও আমাদের ফাইল গুলি পাঠানো হলে অনুবাদ করে দেওয়ার ছুতো দেখিয়ে একাধিক বার ফেরত পাঠান।’ আগেও অনেক রাজ্যপালের সঙ্গে কাজ করলেও ‘এহেন’ রাজ্যপাল বাংলায় এই প্রথম এমনটাও দাবি করেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।