বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পঞ্চায়েত ভোট পূর্বে রাজ্যে চলছে দলবদলের হিড়িক। সেই তালিকায় নাম লিখিয়েই গত রবিবার পদ্ম ছেড়ে শাসকদলে যোগদান করেন আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) বিজেপি বিধায়ক (BJP MLA) সুমন কাঞ্জিলাল (Suman Kanjilal)। তারপর থেকেই উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। এবার সেই দলবদলু বিধায়ককেই বেনজির আক্রমণ শানালেন জলপাইগুড়ির বিজেপি সভাপতি (BJP Leader) বাপী গোস্বামী।
ঠিক কী বললেন বিজেপি নেতা? দলত্যাগী বিজেপি বিধায়কে কটাক্ষ করলেন বিজেপি নেতার বক্তব্য, “সুমন কাঞ্জিলাল বিশ্বাস ঘাতক। নিষিদ্ধপল্লির মা-বোনেদের যা সম্মান রয়েছে, ওনার সেটাও নেই।” শুধু তাই নয় এরপর সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বাপী গোস্বামী বলেন, “উনি বিজেপির প্রতীকে লড়াই করেছেন বলেই জিতেছেন। ক্ষমতা থাকলে পদত্যাগ করে তৃণমূলে যোগদান করুন।”
নেতার এই মন্তব্যের পরই তার বিরুদ্ধে পাল্টা ময়দানে নেমেছে শাসকদল। বিজেপি নেতার তির্যক মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে তৃণমূলের ডাক্তার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, “নারীজাতিকে অপমান করেছেন উনি। অনেকেই আছেন যারা তৃণমূলের সাংসদ হয়েও বিজেপির মঞ্চে ঘোরেন, আগে তাঁদের পদত্যাগ করতে বলুন।” তিনি আরও বলেন, ভোটপূর্বে সুমনের দলবদলে বিজেপি হতাশ। আর সেই হতাশা থেকেই এসব কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে ক্যামাক স্ট্রিটে গিয়ে তৃণমূল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন সুমনবাবু। তৃণমূল সেকেন্ড ইন কমান্ডো অভিষেকই সুমনের গলায় উত্তরীয় পরিয়ে দিয়েছিলেন। তবে তার পরদিনই সুমনবাবুর কথায় ধরা দেয় অসঙ্গতি। তিনি জানান, দলবদল নয় বরং আলিপুরদুয়ারের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে গিয়েছিলেন তিনি।
বিজেপি বিধায়ক বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গে এসে মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তার কথা শুনে নেতাকে আন্তরিক মনে হয়েছিল। শুধুমাত্র সেজন্যই তার সঙ্গে দেখা করে অসুবিধার কথা জানিয়েছি । তৃণমূল সাংসদ আমাকে সব ধরনের সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। আমার ক্যামাক স্ট্রিটে সাক্ষাতে যাওয়া রাজনৈতিক সৌজন্য ছাড়া কিছু নয়।” এরপরই সুমনের অবস্থান নিয়ে ধন্দ পরে যায় রাজনীতির অন্দরে। শুরু হয় বিতর্ক।
তবে সমস্ত বিতর্ক কাটিয়ে গতকাল আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের (Alipurduar Hospital ) রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান (Chairman) করা হল সুমনবাবুকে। এই পদে আসীন ছিলেন তৃণমূল নেতা সৌরভ চক্রবর্তী। উল্লেখ্য, একুশের ভোটে তৃণমূলের সৌরভকে হারিয়েই বিজেপি বিধায়কের পদ পেয়েছিলেন তিনি। সুমনকে রাজ্যের দেওয়া নয়া দায়িত্বেই কাল সবটা পরিষ্কার হয়ে যায়।