হাতে শাঁখা-পলা থাকায় টেট পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হল না মৌমিতাকে! শোরগোল রাজ্য জুড়ে

বাংলাহান্ট ডেস্ক : আজব নিয়মের বেড়াজাল। শাখা-পলা খুলে (Conch Shell and red coral bangles) তবে বসা যাবে টেট পরীক্ষায়। নিয়মের গেরোয় শেষ পর্যন্ত পরীক্ষাই দেওয়া হল না জলপাইগুড়ির গৃহবধূর। শাখা-পলা পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় তাকে৷ কিন্তু শাখা-পলা খুলতে তিনি রাজি না হওয়ায় টেট না দিয়েই বাড়িতে ফিরতে হয় তাঁকে । জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় এমন অনেক ঘটনা প্রকাশ্যে এল। জলপাইগুড়ি দেবনগর সতীশ লাহিড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা ৷ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নিয়মটা আর একটু শিথিল করা উচিত ছিল বলে দাবি করলেন পরীক্ষার্থী মৌমিতা চক্রবর্তী। এই ঘটনা শুনে হতবাক জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri News) জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্যমোহন রায়েরও।

জলপাইগুড়ি সেনাগ্রামের বাসিন্দা মৌমিতা চক্রবর্তী বলেন, ‘দীর্ঘদিন বাদে এ বারের প্রাথমিকের টেট (WB TET 2022) দিয়ে একটা চাকরি পাব বলে আশা করেছিলাম ৷ অতি উৎসাহ নিয়ে জলপাইগুড়ি দেবনগরের সতীশ লাহিড়ী উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও অলঙ্কার পরে পরীক্ষা দেওয়া যাবে না। তাই বাড়িতেই সমস্ত সোনার গয়না খুলে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম । কিন্তু পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটে থাকা পুলিশ কর্মীরা আমার শাখা ও পলা খুলতে বলে । যেহেতু আমার শাখা-পলা সোনা দিয়ে বাঁধানো ছিল । তাই পুলিশ কর্মীরা শাখা পলা খুলে ঢুকতে হবে বলে নির্দেশ দেন।

কিন্তু আমার বিয়ের পর থেকেই আমি এই শখা-পলা পরে আসছি ৷ তাই আমি খুলতে পারব না জানিয়ে দিই । কারণ বিয়ের পর থেকে আমি শাখা-পলা হাত থেকে খুলিনি৷ এ বারও খুলতে পারব না। তাই পরীক্ষা কেন্দ্রে না ঢুকতে পেরে বাড়ি ফিরে চলে আসি। কিন্তু একজন বিবাহিত মহিলার জন্য শাখ-পলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা সরকারের বোঝা উচিত ছিল । কী কী পরা যাবে সেটা পরিস্কার বলে দেওয়া উচিত ছিল । শাখা-পলাকেও অলংকারের মধ্যে ধরা হবে এটা ভাবতেই পারিনি।’

768 512 17184204 183 17184204 1670845057466

অপরদিকে, জলপাইগুড়ি তরুলপাড়া কাঠের ব্রিজের বাসিন্দা মাম্পি সরকার অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার টেট-এর সিট পরেছিল ধুপগুড়িতে । পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে গেলে একটি হাতে লোহা বাঁধানো ছিল। সেটা খুলে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার ছাড়পত্র দেওয়ার কথা বলা হয় । হাত থেকে কোনও ভাবেই খোলা যাচ্ছিল না । এরপর সোনার দোকানে গিয়ে কাটার চেষ্টা করলেও তা কাটা যায়নি । এরপর পরীক্ষাকেন্দ্রের পাশে থাকা একটি সাইকেলের দোকান থেকে এটি কাটা হয় । এরপর আমাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়’। মাম্পির দাবি, ‘সমস্ত নিয়ম ঠিক ছিল পর্ষদের ৷ শুধু বিবাহিত গৃহবধূদের ক্ষেত্রে শাখা, পলা ও লোহা বাঁধানো বিষয়ে নিয়মটা একটু শিথিল করা উচিত ছিল। অযথা পরিক্ষার্থীদের এইগুলি নিয়ে হয়রানি করা হয়েছে।’


Sudipto

সম্পর্কিত খবর