‘মুসলিমদের পছন্দ না হলে পাকিস্তানে চলে যান’, হিন্দুত্ববাদীদের তোপ জমিয়তের

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দেশে হিন্দু এবং মুসলিম ইস্যু নিয়ে ক্রমশ চড়ছে পারদ। একদিকে যেমন মন্দির-মসজিদ বিতর্ক নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে রাজনীতি, আবার অন্যদিকে লাউডস্পিকার কাণ্ড এবং মাদ্রাসা প্রসঙ্গ নিয়েও মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর একের পর এক আক্রমণ করে চলেছে হিন্দু সংগঠনগুলি। আর এবার তার পাল্টা হিসেবে বিরোধীদের পাকিস্তানে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন জমিয়তে উলামা ই হিন্দের সভাপতি মাওলানা মামুদ মাদানি। স্বভাবতই তাঁর আক্রমণের মূল কেন্দ্র বিন্দুতে গেরুয়া শিবির ছিল বলেই মনে করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, এর পূর্বে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি একাধিক বার মুসলিমদের পাকিস্থানের চলে যাওয়ার প্রসঙ্গে মত প্রকাশ করে আর এবার তাদের অস্ত্রকে তাদের দিকেই পাল্টা তাক করলেন মাদানি। সম্প্রতি, দেশের বুকে এমন কিছু হিংসার ঘটনা শিরোনামে উঠে এসেছে, যা রীতিমতো শিউরে তুলেছে দেশবাসীকে। কিছুদিন পূর্বে মধ্যপ্রদেশে এক ব্যক্তিকে মুসলিম বলে মারধর করা হয় এবং পরবর্তীকালে জানা যায় যে, সে হিন্দু। তবে শুধুমাত্র মানুষের উপর অত্যাচার করাই নয়, সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন মসজিদ গুলিকে মন্দির বানানোর ক্ষেত্রেও মত প্রকাশ করে চলেছে হিন্দু সংগঠনগুলি।

দেশে এহেন ভয়ঙ্কর পরিবেশ মাঝেই গত শনি এবং রবিবার উত্তরপ্রদেশে একটি সম্মেলন আয়োজন করে জমিয়তে উলামা ই হিন্দ। সম্মেলনে ভাষণ দিতে উঠে সভাপতি মাদানি বলেন, “বর্তমানে দেশে যেভাবে হিংসা এবং প্রতিহিংসার পরিবেশ গড়ে উঠেছে, আমাদের সেটিকে মোকাবিলা করতে হবে। দেশে কিছু সংখ্যক মানুষ এখন আগুন নিয়ে খেলতে চাইছে, আমাদের তাতে জল দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশে যেভাবে জ্ঞানবাপী মসজিদ সহ অন্যান্য একাধিক ধর্মীয় স্থান নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, আমরা তার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।” এরপর এক প্রকার কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, “মুসলিমদের বিরুদ্ধে যারা প্রতিহিংসা চালিয়ে যাচ্ছে, তাদেরকে আমি পাকিস্তানে চলে যেতে বলব।”

বর্তমানে দেশের একাধিক রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করা প্রসঙ্গে এদিন মুখ খোলেন মাদানি। প্রসঙ্গত, সমগ্র দেশে এই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার প্রসঙ্গে বহুদিন ধরেই উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র সরকার। তবে গোটা দেশে বর্তমানে চালু করা না গেলেও একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে ইতিমধ্যে এই সম্পর্কিত পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি, হিমাচল প্রদেশ সরকার একটি কমিটি গঠন করে এই আইনটিকে বলবৎ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিরোধিতা করছি। সংবিধানে ‘মুসলিম পার্সোনাল ল’-এর উল্লেখ রয়েছে। ফলে এই আইন কার্যকর করার কোন মানে হয় না। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব।”

Avatar
Sayan Das

সম্পর্কিত খবর