বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বুমরা প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাঠে নামতে পারেনি। দলের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল যে মঙ্গলবার অনুশীলনের সময় ফের পিঠে টান লেগেছে তারকা পেসারের। তার অনুপস্থিতিতে অবশ্য দীপক চাহার এবং অর্শদীপ সিং দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন। কিন্তু তার মানে এমনটা নয় যে ভারতীয় দল বুমরাকে ছাড়া মাঠে নামার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। তাই তার চোটের কথা শুনে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অনেকেই।
কিন্তু আজ দুপুর বেলা ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের আশঙ্কা বাস্তবে পরিণত হল। বিসিসিআইয়ের এক সূত্র সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছে যে পিঠের চোটের কারণে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে উড়ে যেতে পারবেন না ভারতের এক নম্বর পেসার যশপ্রীত বুমরা। খুব স্বাভাবিকভাবেই হতাশ ভারতীয় সমর্থকরা।
অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। ভারতীয় দল গত একবছরে বুমরাকে যথেষ্ট সাবধানে ব্যবহার করেছে। ইংল্যান্ডের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর তাকে বেশ বড় রকমের বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। ওয়েস্টইন্ডিজ বা জিম্বাবোয়ে সফরে তাকে পাঠানোর ঝুঁকি নেয়নি বিসিসিআই। এশিয়া কাপে তার প্রত্যাবর্তন করার কথা ছিল। কিন্তু বিশ্রামে থাকাকালীনই পিঠে চোট পেয়েছিলেন তারকা পেসার। ফলে এশিয়া কাপে নামা হয়নি তার।
এশিয়া কাপে না থাকার পরে তাকে দলে রেখেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্কোয়াড এবং ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজের স্কোয়াড ঘোষণা করেছিল বিসিসিআই। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও তাকে নামানো হয়নি। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নেমেছিলেন বুমরা কিন্তু তাকে তার সেই পুরোনো পরিচিত ছন্দে দেখা যায়নি। দুটি ম্যাচ মিলিয়ে মোট ৬ ওভার বল করে ৭৩ রান দিয়ে মাত্র একটি উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছিল যে ম্যাচ প্র্যাক্টিসের অভাব তাকে ভোগাচ্ছে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে পর্যাপ্ত ম্যাচ প্র্যাক্টিসের সুযোগ তিনি পেয়ে যাবেন এমনটা ভেবে নিশ্চিন্ত ছিলেন ভারতীয় সমর্থকরা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে বুমরা দলে না থাকায় তাঁর জায়গায় ভারতীয় দল কাকে সুযোগ দেবে। ৩ মাস আগে ভারতের ইংল্যান্ড সফর চলাকালীন মনে করা হচ্ছিল যে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পেস বোলিং ভারতের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হতে চলেছে। কিন্তু এশিয়া কাপ থেকে একের পর এক চোট-আঘাত, ফর্ম হারানোর ঘটনা এখন ভারতের পেস বোলিং লাইনআপকে প্রশ্নচিহ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। একজন পেসারকেও নিশ্চিত করে বলা যায় না যে তিনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য তৈরি রয়েছেন।
গতকালের ম্যাচে দীপক চাহার এবং অর্শদীপ দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করলেও সেটা যে তারা ধারাবাহিকভাবে করে যেতে পারবেন এমনটা নয়, কারণ কালকের পিচ ও পরিস্থিতি ছিল সুইং-বোলিং বান্ধব যা অস্ট্রেলিয়ায় পাওয়া যাবে এমন আশা করা উচিত নয়। ভারতের এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সমস্যা ডেথ বোলিং। তার একমাত্র সমাধান হতে পারতেন সুস্থ বুমরা। ভারতীয় দল করোনামুক্ত শামিকে দলে ফেরাতে পারে, কিন্তু গত এক বছরে একটিও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ না খেলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করাটা কতটা যুক্তিযুক্ত হবে সেই নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।