মিলে গেল শুভেন্দুকে নিয়ে করা তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী, ভিডিওর মাধ্যমে প্রমাণ দিলেন দেবাংশু ভট্টাচার্য

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ২০১৪ সালে জাতীয় বদলের হাওয়ায় কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন জয়প্রকাশ মজুমদার। বিরোধী শিবির থেকে বারবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়েছেন তিনি। কিন্তু বিজেপিতে তাঁর যোগদানের পর থেকে মাঝখানে কেটেছে বছর আটেক। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই দলবিরোধী কাজকর্মের জেরে তাঁকে জয়প্রকাশ মজুমদারকে বরখাস্ত করে গেরুয়া শিবির। এরপর থেকেই চাঁচাছোলা ভাষাতেই বিজেপিকে আক্রমন শানাতে দেখা যায় এই বরিষ্ঠ নেতাকে। এবার বিজেপিতে শুভেন্দু অধিকারীর অবস্থান নিয়েও বিস্ফোরক মন্তব্য করতে শোনা গেল জয়প্রকাশ মজুমদারকে।

এদিন একটি সাক্ষাৎকারে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘বিজেপির বর্তমান যে নেতৃত্ব আছেন তাঁরাও মনে করছেন শুভেন্দুকে আর বাড়তে দেওয়া উচিত নয়। তাঁরা কথায় কথায় আমাদের সামনেই বলেছেন। শুভেন্দুবাবু নিজের লড়াইয়ের একটা জায়গায় বাঘের পিঠে চড়ে বসে আছেন। সুতরাং তাঁকে লড়তেই হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে তিনি বিধায়ক হয়েছেন। সেই লড়াই চলছে। অধিকারীদের গড়; মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় তার অবস্থান।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুভেন্দুবাবু একরকম চলছেন, পার্টি আরেক রকম চলছে। এটা বলতে আমার কোনো অসুবিধা নেই।’

গতকাল আশুতোষ কলেজ চত্ত্বরে আক্রান্ত হন শুভেন্দু অধিকারী। এই প্রসঙ্গে জয়প্রকাশ জানান, ‘আজকের দিনে শুভেন্দুবাবু কিন্তু খুবই চাপে আছেন। একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াইয়ের চাপ,অন্যদিকে বিজেপির মধ্যে অমিতাভ চক্রবর্তীর সঙ্গে লড়াইয়ের চাপ। কারণ অমিতাভ চক্রবর্তী যিনি এখন সাধারণ সম্পাদক তাঁর সঙ্গে এখন সেই সাংবাদিক আছেন, তাঁরা উঠে পড়ে লেগেছেন শুভেন্দুবাবুর ডানা ছাঁটার জন্য। এই চাপটাই কিন্তু বেরোচ্ছে।’ শুভেন্দু অধিকারীর জন্য মায়া হচ্ছে বলেও জানান জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি আরও জানান, ‘আজকে যেটা দেখলাম ছাত্ররা স্লোগান দিচ্ছেন, ছাত্রদের সঙ্গে মারামারি করা যায় কি?’

এদিন ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন যুব তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। সেই ভিডিওটিতে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের একটি ভিডিও পোস্ট করেন দেবাংশু। সেখানে এই যুব নেতাকে বলতে দেখা যায়, ‘বিজেপি সবচেয়ে বড় মুরগী যাঁকে বানাতে পেরেছে তাঁর নাম শুভেন্দু অধিকারী। অমিত শাহ আজকে জানে তার শুভেন্দুকে দরকার ভোটে জেতার জন্য। এবার একুশের ভোটটা যখন মিটে যাবে তখন তো শুভেন্দুর আর কোনো দরকার নেই। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি ছেড়ে যেতে পারবে না। কারণ তৃণমূল তাকে নেবে না। আর সিপিএম বা কংগ্রেসে গিয়ে কোনো লাভ নেই। রাজনৈতিক জীবনে আত্মহত্যা করেছে শুভেন্দু অধিকারী। আজ তার অবস্থা চায়ে চোবানো প্যাটিসের মতন’।

এই ভিডিওটিতে নিজের এবং জয়প্রকাশ মজুমদারের বক্তব্যকে পাশাপাশি রেখেই তুলনা করতে দেখা যায় দেবাংশুকে। তিনি দাবি করেন, ‘সেদিন আমি বলেছিলাম, আজ এরাও বলছে’।

প্রসঙ্গত, বিগত বেশ কিছুদিন যাবৎ টালমাটাল বঙ্গ রাজনীতি। বড়সড় ভাঙন গেরুয়া শিবিরে। দলের অন্দরে কোন্দল-বিদ্রোহে জেরবার রাজ্য বিজেপি। রাজ্য রাজনীতি সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ একদল নেতা, অন্যদলের আবার সমস্যা সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীকে নিয়ে। এহেন পরিস্থিতিতে বেশ কিছুদিন ধরেই জল্পনা, তৃণমূলে ফিরতে চলেছেন শুভেন্দু। এবার জয়প্রকাশের এহেন বক্তব্য সেই জল্পনাকে আরও খানিক জোরদার করলেও ছেড়ে গেল বেশ কিছু জটিল হিসেবও। তৃণমূলে কি ফিরবেন শুভেন্দু, ফিরলেও কবে, এই প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা থাকলেও, বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, জয়প্রকাশ মজুমদারের তৃণমূলে যোগদান এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।


Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর