বাংলা হান্ট ডেস্ক: হাতেগুনে আর কয়েক দিন তারপরই শুরু হবে ইংরেজি নববর্ষ। আর নতুন বছর শুরু হওয়ার আগেই একের পর এক সুসংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। এরই মাঝে শোনা গেল ঝাড়গ্রামের (Jhargram) রাজবাড়ি নিয়ে নতুন সংবাদ। নববর্ষের উইকেন্ডে কিংবা শীতের আমেজে যদি রাজবাড়ির ঐতিহ্যকে উপভোগ করতে চান তাহলে ঝাড়গ্রামের রাজবাড়ি অনায়াসে ঘুরে আসতে পারেন। কারণ ৩৫০ বছর পর অবশেষে ঝাড়গ্রামের চিল্কিগড়ের রাজবাড়ির সিংহ দুয়ার খোলা হয়েছে। নতুন বছরের আগে এই পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে এই প্রাসাদের অন্দরমহল।
খুলে গেছে ঝাড়গ্রামের (Jhargram) চিল্কিগড়ের রাজবাড়ির অন্দরমহল:
জানা গিয়েছে ৩৫০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবার এই রাজবাড়ির অন্দরমহলের দরজা সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি এই রাজবাড়ির অতিথিশালায় থাকতে পারবেন পর্যটকরা। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজবাড়ির কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, রাজা গোপীনাথ সিংহ মত্তগজ প্রায় ৩৫০ বছর আগে এই প্রাসাদ স্থাপন করেছিলেন। ঝাড়গ্রাম (Jhargram) শহর থেকে ১৩ কিমি দূরে চিল্কিগড়ের রাজবাড়ি অবস্থিত। এতদিন এই রাজবাড়ির ভেতরে প্রবেশের অনুমতি ছিল না। কিন্তু অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটলো।
কি রয়েছে এই রাজবাড়িতে: ঝাড়গ্রামে (Jhargram) অবস্থিত এই রাজবাড়ি বহু ইতিহাসের সাক্ষী। প্রধান রাস্তার উপরেই রয়েছে প্রবেশের বড় তোরণদ্বার। সামনেই রয়েছে বিশাল চত্বর যা দেখলে চোখ হবে ছানাবড়া। ওই চত্বরের মধ্যেই রয়েছে রত্ন মন্দির, রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও শিব মন্দির। তবে ভেতরের কারুকার্য তো আপনার মন আরো ভালো করে তুলবে। আধুনিক ইন্টেরিয়র ডিজাইন না থাকলেও অন্দরমহল সজ্জিত মুঘল ও রাজস্থানি স্থাপত্য শৈলীতে। শুধু তাই নয় প্রাসাদে রয়েছে পৃথক জেনানা মহলও। গোটা রাজপ্রাসাদ ঘুরে দেখতে পারবেন সকল পর্যটক।
শুধু তাই নয় প্রাসাদ থেকে অনতি দূরে রয়েছে কনকদুর্গা মন্দির। সবুজে ঘেরা ঝাড়গ্রাম (Jhargram) ঘুরতে আসলেই চিল্কিগড়ের এই মন্দির সকলেই ঘুরে যেতে চান। দেবী দুর্গার মন্দির দর্শনের পাশাপাশি এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। শীতের আমেজে ছুটি কাটাতে ঝাড়গ্রামের চিল্কিগড়ের রাজবাড়ি ঘোরার জন্য উত্তম জায়গা। ইতিমধ্যেই এখানে শুরু হয়ে গেছে পর্যটকদের ভিড়।
আরও পড়ুনঃ এবার হাঁফ ছেড়ে বাঁচবে ভারতীয়রা! বাজেটে Tax’য়ে মিলতে পারে বড় ছাড়, ইঙ্গিত কেন্দ্রীয় সরকারের
এ বিষয়ে কি বলছেন রাজ পরিবারের সদস্য: রাজ পরিবারে বর্তমান বংশধর তেজসচন্দ্র দেও ধবলদেব বলেন, “আমাদের রাজবাড়ির সঙ্গে বহু ইতিহাস জড়িত। এলাকাটি আগে জঙ্গলমহল বা বড়মহল নামে পরিচিত ছিল। রাজা গোপীনাথ সিংহের কন্যা সুবর্ণমণির সঙ্গে ধলভূমগড়ের রাজা জগন্নাথ সিংহ দেও ধবলদেবের বিয়ে হয়। পরবর্তীতে চিল্কিগড়ের রাজা হন তাঁদের পুত্র কমলাকান্ত দেও ধবলদেব। সেইসময় থেকে এই রাজবাড়ির অন্দরমহলে বাইরের কোনও মানুষের প্রবেশাধিকার ছিল না। রাজবাড়ির ইতিহাসে এই প্রথমবার অন্দরমহলে সাধারণ মানুষ ঢোকার ছাড়পত্র পাচ্ছেন।”
আরও পড়ুনঃ ‘পান্ডিত্য করলেই রাজনৈতিকভাবে…’ সোহমের মন্তব্য ঘিরে তৃণমূলে বিরাট হইচই
তবে এরপরই তিনি জানিয়েছেন এখানে পর্যটকরা কতটা স্বল্প মূল্যে থাকতে পারবেন। তিনি বলেছেন, “চিল্কিগড় হেরিটেজ অতিথিশালায় পর্যটকরা রাতে থাকতে পারবেন। রুমের ভাড়া, ৮০০ , ১০০০ ও ১২০০ টাকা। রাজবাড়ির স্পেশাল থালির সঙ্গে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন খাবারের পদেরও ব্যবস্থা রয়েছে।” আর এই খবর সামনে আসতেই আনন্দে আত্মহারা হয়েছেন পর্যটকরা। ঝাড়গ্রামের (Jhargram) রাজবাড়িতে থাকা খাওয়া এত কম টাকায় হওয়ায় হাতে চাঁদ পাওয়ার মত অবস্থা সকলের।