বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক সময়ে মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) পতন হয় শিবসেনা সরকারের। পরবর্তীতে সেই স্থানে ক্ষমতায় বসে একনাথ শিন্ডে-বিজেপি জোট সরকার। বর্তমানে মহারাষ্ট্রের মতোই ঝাড়খণ্ড (Jharkhand) শাসক জোট সরকারের পতন ঘটতে চলেছে বলে ইতিমধ্যে একাধিক জল্পনা সামনে উঠে এসেছে। বর্তমানে সেই সকল বিতর্কের হাত থেকে বাঁচতে অবশেষে বিধায়কদের ঝাড়খণ্ড ছেড়ে ছত্তিশগড়ে (Chhattisgarh) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল জোট সরকার।
সূত্র মারফত জানা যায়, গতকাল রাতেই সকল বিধায়কদের জন্য একটি বিমান সংরক্ষণ করে নেয় কংগ্রেস দল। এদিন সেটিতে চড়েই ঝাড়খণ্ড থেকে ছত্তিশগড়ের রায়পুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন সকলে।
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্র সরকারের পতনের পর থেকেই দেশের অন্যান্য একাধিক রাজ্যে বিরোধী শক্তিদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে সেই স্থানে বিজেপি বসার চক্রান্ত করে চলেছে বলে একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। এই তালিকায় সবচেয়ে উপরে রয়েছে ঝাড়খণ্ডের নাম, যেখানে বর্তমানে হেমন্ত সোরেনের জেএমএম এবং কংগ্রেস-আরজেডির জোটকে সরিয়ে সেখানে বিজেপি আসার সম্ভাবনা ক্রমশ উজ্জ্বল হয়ে উঠছে।
সম্প্রতি, ক্ষমতা বাঁচানোর জন্য সকল বিধায়কদের নিয়ে বাসে করে রাজ্য ছাড়ার খবর সামনে আসতে থাকে আর এর মাঝে এদিন অবশেষে শাসকপক্ষের বিরোধীরা পৌঁছে গেলেন রায়পুর রিসোর্টে।
তবে কেন এই সম্ভাবনা? আসলে, বর্তমানে খনি লিজ মামলায় গুরুতরভাবে ফেঁসে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। এক্ষেত্রে দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে নির্বাচন কমিশন; এমনই দাবি করে আসছে বিরোধী দল বিজেপি। এমনকি, এই প্রসঙ্গে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল রমেশ ব্যাসের কাছে একটি চিঠি পৌঁছে গিয়েছে বলে খবর। এই পরিস্থিতিতে যদি পরবর্তী সময়ে হেমন্ত সোরেনের বিধায়ক পদ খারিজ করা হয়, তবে তাঁর মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়েও দেখা দেবে একাধিক প্রশ্ন চিহ্ন।
সূত্রের খবর, বর্তমান পরিস্থিতিতে ঝাড়খণ্ডে জোট সরকারকে টিকিয়ে রাখাই প্রধান চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। উল্লেখ্য, ঝাড়খণ্ড বিধানসভার মোট ৮০ টি আসনের মধ্যে ৫০ টি দখলে রয়েছে শাসক জোটের। অপরদিকে, ৩০ টি রয়েছে বিজেপির দখলে। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পরবর্তী সময়ে যদি জোটপক্ষ থেকে বিধায়করা বিজেপিতে যোগদান করেন, তবে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দল ভাঙার আশঙ্কার মাঝেই এদিন সকল বিধায়কদের নিয়ে একটি বৈঠক সংগঠিত করেন মুখ্যমন্ত্রী এবং পরবর্তীতে তাদের সকলকে ছত্তিশগড়ের রায়পুরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল দল। বর্তমানে ঝাড়খণ্ড সরকারের এই প্রয়াস শেষ পর্যন্ত তাদের ক্ষমতায় থাকতে সহায়তা করে কিনা, সেদিকে তাকিয়ে রাজ্যবাসী সহ গোটা দেশ।